রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
বাংলাদেশে ভ্রমণে সতর্কর্তা যুক্তরাষ্ট্রের, পার্বত্য অঞ্চলে নিষেধাজ্ঞা  » «   যুক্তরাজ্যে বিরল চিকিৎসা কীর্তি, ২বার ভূমিষ্ঠ হলো একই শিশু  » «   সিলেট থেকে কার্গো ফ্লাইটের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু ২৭ এপ্রিল  » «   যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিটেন্স বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি, কমেছে আমিরাত থেকে  » «   পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিবকে কী বললো ঢাকা?  » «   বিয়ানীবাজার জনকল্যাণ সমিতি ইউকের উদ্যোগে ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত  » «   নির্বাচনের জন্য জামায়াত আমিরের ৩ শর্ত, ফেব্রুয়ারি ২৬-এর সময়সীমা কঠিন নয়  » «   ইইউর ‘নিরাপদ’ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ : কঠিন হবে রাজনৈতিক আশ্রয়  » «   লন্ডনে খালেদা-তারেকের সাথে জামায়াত আমিরের বৈঠক, দুই দল কী বলছে?  » «   উজানে ‘মেগা ড্যামের’ ধাক্কা সামলাতে দিল্লি-ঢাকা-থিম্পুকে জোট বাঁধার ডাক  » «   রাজনীতিতে আসার সিদ্ধান্ত ঠিক ছিলো, বিশ্বাস করেন সাকিব  » «   নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক, ‘একেবারেই সন্তুষ্ট নয়’ বিএনপি  » «   গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়ালো ৫১ হাজার  » «   দেশের সব মসজিদে দুপুর দেড়টায় জুমার নামাজ আদায়ের নির্দেশনা  » «   ট্রাম্প ও শির যুদ্ধ প্রস্তুতি কী বার্তা দিচ্ছে বিশ্বকে  » «  

প্রসঙ্গ: আল মাহমুদ



যখন কবিতা পড়তে শুরু করি, সেই নব্বইয়ের শুরুর দিকে, তখন অনেক কবিই আমাদের মুগ্ধ করে রাখতেন, কবিতা কী জিনিস সেটি আমরা তাদের কাব্যপাঠের মধ্য দিয়েই বুঝতে শিখেছি। এরা মূলধরার কবি। এর বাইরে ছিল প্রথাবিরোধী ছোট কাগজের কবিরা। তাদের কবিতাও বেশ টানত।

এটা তো অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই মূলধারার এই কবিদের মধ্যে আল মাহমুদও ছিলেন। তাঁর সোনালী কাবিন, কালের কলস, লোক লোকান্তর এসব কাব্যগ্রন্থ যৌবনে যখন রাজনৈতিক কর্মী ছিলাম তখনো দিনের পর দিন ঘোরলাগা মুগ্ধতা নিয়েই পাঠ করেছি। খুব সম্ভবত নব্বইয়ের মাঝামাঝি দশক থেকে আল মাহমুদের কিছু গল্পও পড়তে শুরু করি।

মূলধারার অনেক কবির রাজনৈতিক কবিতাও আমার বেশ লাগত, সেটা স্লোগান হলেও। হতে পারে সেটা আমার নিজের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারণে। কারণ, সেই সময়টায় সত্তর, আশির দশকে যারা কবিতার বয়ান তৈরি করেছিলেন, সমাজে-সামাজিক অনুষ্ঠানে-রাজনৈতিক মঞ্চে তাদের কবিতা পাঠের মধ্য দিয়ে, তাঁরা তাদের প্রভাব বজায় রেখে চলেছিলেন।

এই সময়ে দেশ-বিদেশের নানা কবির কবিতা পাঠ করে মুগ্ধ হয়েছি। রাজনৈতিক দর্শন জেনেও তাদের কবিতায় মুগ্ধ হতে কোনো সমস্যা তৈরি হয়নি। মনে হয়েছিল, রাজনৈতিক সত্তা কবির আছে, কবিতারও আছে। কিন্তু কবিতার স্বাদ সেসবকে বিলীন করে তুললেই কবিতা। আল মাহমুদ কি এমন কিছু কবিতা, কাব্যগ্রন্থ সৃষ্টি করেননি। তাহলে তাঁকে পাঠ করে ভুল কিছু করিনি।

বরং এটা মনে হয়েছে, এমন একজন কবির মহৎ কবিতার স্বাদ আমি যদি আস্বাদন করতে না পারি, তাহলে বোধহয় পাঠক হিসেবে সেটা আমারই ব্যর্থতা, খামতি। আজ সেই খামতি, ব্যর্থতা কবির চিরবিদায়ের দিনে কী ঘৃণায় দিকে দিকে ঝরে পড়ছে। হায়!

এটাই সমাজের বাস্তবতা। গোটা শিল্পই তো বিভাজিত, কবি বিভাজিত, কবিতা বিভাজিত। আল মাহমুদ মানুষ ছিলেন বলে তিনিও বিভাজিত।

আর একটা কথা, আল মাহমুদ রাজনৈতিকভাবে প্রগতিশীলদের কাছে অচ্যুত, অস্পৃশ্য প্রায় চার দশক ধরে। কই, তাঁকে কি নিশেষ করতে পেরেছেন? নিজেকে প্রশ্ন করুন। আল মাহমুদ নিজের রাজনৈতিক মত নয়, বিভাজিত অংশ হিসেবে নয়, কবিতার সৃষ্টিশীলতা দিয়েই তিনি টিকে ছিলেন, আছেন, থাকবেন। যারা তাঁকে পড়েছিলেন তাঁরা মুগ্ধ হয়েছেন। বাঙলা সাহিত্য যতদিন থাকবে ততদিন কবিতার পাঠকের কাছে আল মাহমুদের এই মুগ্ধতা থেকে যাবে।

শব্দই ব্রহ্ম। শব্দ দিয়ে যে আবেশ, মুগ্ধতা, ঘোর, বাংলাদেশের আনকোড়া যৌনতা আল মাহমুদের কবিতায় তৈরি হয় সেটা স্থান-কাল-পাত্রের উর্ধ্বে। আল মাহমুদের জয় সেখানেই।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

"এই বিভাগে প্রকাশিত মতামত ও লেখার দায় লেখকের একান্তই নিজস্ব " -সম্পাদক

সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন