শেষ পর্যন্ত নির্বাচনমূখী হয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। বিরোধী দলগুলোর দাবীর প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তারিখও পিছিয়ে নিয়েছে। সারা দেশ জুড়েই আছে নির্বাচন নিয়ে একটা উৎসবী আমেজ। এই আমেজকে নিয়েই যার যার দল কিংবা জোট নতুন নতুন চমক নিয়ে আসছে সারা দেশব্যাপী।
ঐক্যফ্রন্টের প্রধান দল বিএনপি’র চেয়ারপরসন খালেদা জিয়া কারাগারে। বিএনপি’র দ্বিতীয় প্রধান নেতা তারেক রহমান কলকাটি নাড়ছেন লন্ডনে বসে। থেমে নেই কোন কিছুই। খালেদা জিয়ার জন্য তিন আসন লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ঐক্যফ্রন্ট। প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামীলীগ প্রধান শেখ হাসিনা লড়বেন দুটো আসনে। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন চমক কি-ই নিয়ে আসতে পারছেন তারা। নতুন কর্মসূচীই বা কি হচ্ছে, তা নিয়ে জনমনে আকাংখা থাকতেই পারে।
নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটা নতুন চমক আনছেন তাঁর নির্বাচনী প্রচারনায়
তরুণদের সঙ্গে দেশ ভাবনা নিয়ে সরাসরি কথা বলবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে নতুন প্রজন্ম ও বাংলাদেশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীও তাঁর ভবিষ্যৎ ভাবনার কথা জানাবেন।
অনুষ্ঠানটি হবে আগামী ১৬ নভেম্বর বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত। গণভবন থেকে এই অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করবে বেশ কিছু টেলিভিশন চ্যানেল। ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে এর আয়োজন করেছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)।
এটি বাংলাদেশের প্রথম কোনো অনুষ্ঠান যেখানে সরাসরি তরুণদের মুখোমুখি হবেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এ অনুষ্ঠানে সরাসরি তরুণদের বিভিন্ন মতামত গ্রহণের পাশাপাশি তাদের প্রশ্নের উত্তর দেবেন বলেও জানা গেছে।
মূলত সম্প্রতি দেশের ২১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক হাজার ৮৬ শিক্ষার্থীর ওপর চালানো ‘কল রেডি’ নামের একটি সংগঠনের এক জরিপে উঠে আসে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সন্তুষ্ট দেশের ৬৮.৩ শতাংশ শিক্ষিত তরুণ ভোটার। তাদের ৫১.৩ শতাংশ চায় বর্তমান সরকার আবার ক্ষমতায় আসুক। এছাড়া ৫৩.৫ শতাংশ তরুণ মনে করে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে।
আয়োজক প্রতিষ্ঠান সিআরআই সূত্র জানিয়েছে, ‘লেটস টক’ অনুষ্ঠানে উঠে আসবে তরুণদের স্বপ্নের কথা, স্বপ্ন পূরণের কথা এবং স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার কথা। তারুণ্য ও বাংলাদেশ নিয়ে ভবিষ্যৎ ভাবনার কথা জানাবেন প্রধানমন্ত্রীও।
এদিকে খুব স্বাভাবিক কারনেই স্বস্থিতে নেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। দীর্ঘ দশটি বছর ক্ষমতার বাইরে থেকে এবারে শত প্রতিকুলতা উপেক্ষা করে তিনি কারাগারে থেকেও নির্বচনমূখী হয়েছেন। কারগার থেকেই নির্দেশনা দিচ্ছেন, দলের কর্মপদ্ধতি বাতলে দিচ্ছেন। দলকে নির্দেশনা দেয়ার পাশাপাশি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে বিজয়ী করার জন্যে দেশের জনগণের কাছে তাঁর বিবৃতি প্রচার না করতে পারলেও তাঁর আহবান থেমে নেই। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কথাই খালেদা জিয়ার কথা। তাইতো তিনি দোয়া চেয়েছেন দেশবাসীর কাছে।
দেশের নতুন রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দোয়া করেছেন বলে জানিয়েছেন দলটির মহসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, জনগণকে নিয়ে আমরা যে রাজনৈতিক ঐক্য গড়েছি সেই ঐক্যের জন্য খালেদা জিয়া দোয়া করেছেন।
সোমবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় একথা জানান মির্জা ফখরুল।
এদিন দুপুরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার ও মির্জা আব্বাস খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাৎ শেষে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অনেক দিন পর ম্যাডামের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি পেয়েছি। ম্যাডাম অত্যন্ত অসুস্থ, তাকে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করাতে চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু এক পর্যায়ে তাকে জোর করে হুইল চেয়ারে করে কারাগারে আনা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং তাকে আবার হাসপাতালে ভর্তি করার জোরালো দাবি জানাচ্ছি।
“ম্যাডামের ব্যথা আরো বেড়ে গেছে। চারদিন ধরে তাকে থেরাপি দেওয়া হয়নি। আজকে বোধ হয় থেরাপিস্ট যাচ্ছেন’, যোগ করেন মির্জা ফখরুল।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার অসুস্থতা ও চিকিৎসা প্রসঙ্গে আলাপ হয়েছে। অন্যকিছু নিয়ে আলোচনা হয়নি। তবে খালেদা জিয়া নবগঠিত ঐক্যফ্রন্টের জন্য দোয়া করেছেন বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।