বাংলাদেশ সেন্টার লন্ডন এর কাউন্সিল অফ ম্যানেজমেন্ট কমিটির পক্ষ থেকে লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সেন্টার নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন।
৭ সেপ্টেম্বর সোমবার পূর্ব লন্ডনের প্রেসক্লাব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সেন্টার লন্ডনের সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন।
তিনি লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম এবং ডেপুটি হাইকমিশনার হযরত আলী খানের কর্মকাণ্ডে গভীরভাবে উদ্বেগ ও তাদের অনৈতিক উৎসাহে বাংলাদেশ সেন্টারের বিভেদ আরও বেড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন।
দীর্ঘ লিখিত বক্তব্যে সেন্টারের সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিল অফ ম্যানেজমেন্ট কমিটির অনেকের বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক নীতিহীন কার্যক্রমের অভিযোগ তুলে ধরেন।
”কাউন্সিল অফ ম্যানেজমেন্ট কমিটি গঠন ও সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ”, “মান্যবর হাইকমিশনের আহবানে বিতর্কিত সভা ও আমাদের প্রতিক্রিয়া”, ”অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং অননুমোদিত কার্যকলাপ”, ”স্থগিতাদেশ ও ঐক্যের ডাক” ইত্যাদি বিষয়ে তাদের সাংগঠনিক ব্যাখ্যা ও উদ্বেগের কারণ তুলে ধরেন সাধারণ সম্পাদক।
এছাড়াও মতপার্থক্যগুলো ভুলে একটি ঐক্যবদ্ধ, শক্তিশালী কমিউনিটি গড়ে তোলার দিকে মনোনিবেশ করার কথাও তুলে ধরেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন ভাইস চেয়ারম্যান তফজ্জল মিয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী বেবুল।
এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান গুলনাহার খান, ভাইস চেয়ারম্যান মামুন রশীদ , চীফ ট্রেজারার শিব্বীর আহমদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক জিলু, ফাইনান্স এন্ড ফান্ড রাইজিং উপ কমিটির আহবায়ক মোহাম্মদ ময়নুল হক, পার্মানেন্ট মেম্বার শাহানুর খান, পার্মানেন্ট মেম্বার মানিক মিয়া, পার্মানেন্ট মেম্বার জাকির হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য হুবহু তুলে ধরা হলো-
” বাংলাদেশ সেন্টার লন্ডন
৭ অক্টোবর ২০২৪
আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় সম্মানিত সাংবাদিকবৃন্দ,
বাংলাদেশ সেন্টার লন্ডন এর কাউন্সিল অফ ম্যানেজমেন্ট কমিটির পক্ষ থেকে আপনাদের সকলকে উষ্ণ শুভেচ্ছা ও আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সেন্টারের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে সর্বশেষ আপডেট জানাতে আজকের এই জরুরি সংবাদ সম্মেলন। স্বল্প সময়ে আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে এতে উপস্থিত হওয়ার জন্য আপনাদের প্রতি ধন্যবাদও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ সেন্টার শুধু একটি ভবন নয়, এটি একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন- যা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে আন্তর্জাতিক প্রচারণার প্রধান ভিত্তি হিসাবে কাজ করেছিল এবং যুক্তরাজ্যে প্রথম বাংলাদেশী মিশন ছিল। বাংলাদেশ সেন্টার এই যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশি কমিউনিটির ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে ভূমিকা রেখে চলেছে। বাংলাদেশ সেন্টার একটি নিবন্ধিত দাতব্য সংস্থা হিসেবে এর কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ সেন্টারের কাউন্সিল অফ ম্যানেজমেন্ট কমিটি বিগত সময়ে কোন প্রতিদ্বন্দ্বীতা পূর্ণ নির্বাচন ছাড়াই নিয়মতান্ত্রিক ধারা অনুসরণ করে ঐকমত্যের ভিত্তিতে গঠিত হতো এবং ওই ঐকমত্যের কমিটি সেন্টারের কার্যক্রম পরিচালনা করতো।
সেন্টারের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ২০২৩ সালের ২৬ নভেম্বর রোববার ইমপ্রেশন ইভেন্ট ভেন্যুতে বাংলাদেশ সেন্টারের বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ও দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই ঐতিহাসিক নির্বাচনে দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যালায়েন্স- রেড অ্যালায়েন্স এবং গ্রিন অ্যালায়েন্স একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনে সক্রিয়ভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। রেড অ্যালায়েন্স সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে।আমরা আনন্দিত যে, উক্ত নির্বাচনে কাউন্সিল অফ ম্যানেজমেন্ট কমিটির শূন্য পদ পূরণের জন্য ১৭ জন ‘সাধারণ ও জীবন সদস্য’ এবং ১৮ জন স্থায়ী সদস্য সফলভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
সেন্টারের ইতিহাসে প্রথমবারের মত অনুষ্ঠিত উক্ত নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভাবে সম্পন্ন হয়। প্রতিদ্বন্দ্বী উভয় প্যানেল আন্তরিকভাবে ফলাফল গ্রহণ করেছে- যা আমাদের কমিউনিটির ঐক্য এবং গণতান্ত্রিক চেতনাবোধের শক্তিশালী দৃষ্টান্ত।
কাউন্সিল অফ ম্যানেজমেন্ট কমিটি গঠন ও সাম্প্রতিক ঘটনা প্রবাহঃ
বাংলাদেশ সেন্টারের সংবিধানের ৪৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সভাপতি ব্যতীত কাউন্সিল অফ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সকল পদ নির্বাচিত সদস্যদের ভোটের মাধ্যমে পূরণ করা হয়। এজিএম ও নির্বাচন শেষে সেন্টারের ঐতিহ্য অনুযায়ী মোঃ দেলোয়ার হোসেনকে সর্বসম্মতিক্রমে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। ২০২৩ সালের ৫ ডিসেম্বর পরবর্তী কাউন্সিল অব ম্যানেজমেন্টের সভায় অবশিষ্ট পদগুলো পূরণ করা হয়।
বাংলাদেশ সেন্টারের চেয়ারম্যানের পদটি একান্ত সম্মানসূচক। পদাধিকার বলে সম্মানসূচক এই দায়িত্ব পালন করেন যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের মান্যবর হাইকমিশনার। নব-নির্বাচিত কাউন্সিল অব ম্যানেজমেন্ট কমিটির ৫ ডিসেম্বরের সভায় সেন্টারের চেয়ারম্যান হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীমকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছিল এবং এই সভায় উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানিয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় তিনি উক্ত সভায় উপস্থিত ছিলেন না। এমনকি তাঁর অনুপস্থিতির বিষয়ে কোনো অপারগতার কথাও আমাদেরকে অবগত করেন নি।ডেপুটি হাইকমিশনার হযরত আলী খানকেও উক্ত সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়োছিলো। তিনিও এতে উপস্থিত ছিলেন না।
মান্যবর হাইকমিশনের আহবানে বিতর্কিত সভা ও আমাদের প্রতিক্রিয়াঃ
২০২৩ সালের ৪ ডিসেম্বর মান্যবর হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম কাউন্সিল অফ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সকল সদস্য, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, স্থায়ী সদস্য, কর্পোরেট সদস্য, সাধারণ ও আজীবন সদস্যসহ সকল সদস্যকে একটি সভায় আমন্ত্রণ জানিয়ে একটি চিঠি প্রেরণ করেন। তাঁর আহবানে ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে সভা হওয়ার কথা ছিলো। অযাচিত উক্ত সভা আহ্বান বাংলাদেশ সেন্টার নিয়ে চরম উদ্বেগ ও বিতর্কের জন্ম দেয়।
নিম্নলিখিত বিষয়গুলি তুলে ধরে ২০২৩ সালের ১২ ডিসেম্বর মান্যবর হাইকমিশনারকে চিঠিঃ
– ‘কাউন্সিল অফ ম্যানেজমেন্ট’ গঠনে আর্টিকেলস অফ অ্যাসোসিয়েশন সদস্যদের নিয়ে কোনো সভার অনুমোদন দেয়নি, সদস্যদের অংশগ্রহণ কেবল বিজিএমে ভোটদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
– মান্যবর হাইকমিশনের ডাকা ১৮ ডিসেম্বরের সভাটি সেন্টারের সংবিধান সমর্থন করে না। এমন সভায় কাউন্সিল অফ ম্যানেজমেন্ট বা এক্সিকিউটিভ কমিটি গঠনের বিষয়টি গঠন সহ সেন্টারের কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়টিও সংবিধান অনুমোদন করে না।
-সকল সদস্যকে যে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সেটি আমাদের সেন্টারের লোক ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত হওয়ায় সেটি হেলথ এন্ড সেইফটি নীতির পরিপন্থী এবং বিদ্যমান আইনের লঙ্ঘন করবে। একটি নিবন্ধিত দাতব্য সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ সেন্টার বিদ্যমান আইন মেনে চলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
– সভাটি অবিলম্বে বাতিল করা হোক এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে তা অবহিত করা হোক।
এমন চিঠির পরও আমরা মান্যবর হাইকমিশনারের কাছ থেকে কোনো সাড়া পাইনি। বরং সভার ভেন্যু পরিবর্তন করে তা ইমপ্রেশন ইভেন্টস ভেন্যুতে করার নোটিশের বিষয়ে আমরা জানতে পারি, যেখানে সকল সদস্যকে উপস্থিত হয়ে একটি কমিটি গঠনের অনুরোধ জানানো হয়েছে। চেয়ারম্যান হিসেবে মান্যবর হাইকমিশনারের এমন পদক্ষেপ বাংলাদেশ সেন্টার পরিচালনা নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। কারণ বিধিমালায় এমন সভা আহবান ও আয়োজনের অধিকার কেবল সেন্টারের সাধারণ সম্পাদককে দেয়া হয়েছে। সম্মানসূচক দায়িত্ব পাওয়া চেয়ারম্যানকে এমন সভা আহবানের ক্ষমতা দেয়া হয়নি।এছাড়া সাধারণ সভায় কাউন্সিল অফ ম্যানেজমেন্ট কমিটি গঠন করার নিয়ম নেই।
উদ্ভূত পরিস্হিতিতে সেন্টারের চেয়ারম্যান ও মান্যবর হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম কাউন্সিল অফ ম্যানেজমেন্ট কমিটির নির্বাচিত সকল সদস্য, প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের নিয়ে একটি সভা আহবানের জন্য সাধারণ সম্পাদক জনাব দেলোয়ার হোসেনকে অনুরোধ জানান। তাঁর অনুরোধের প্রেক্ষিতে ২৪ এপ্রিল ২০২৪ বাংলাদেশ সেন্টারের ভবনে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সেন্টারের চেয়ারম্যান ও মান্যবর হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম। সভাটি পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক জনাব দেলোয়ার হোসেন।দীর্ঘ ৫ ঘন্টার বৈঠকে সমঝোতার করার চেষ্টা করা হয়। বৈঠকে রেড অ্যালায়েন্সের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ছাড় দেয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়। অপর পক্ষ গ্রিন অ্যালায়েন্সের এক গুয়েমী মনোভাবের জন্য কোন সমঝোতা ছাড়া বৈঠক সমাপ্ত হয়।
অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং অননুমোদিত কার্যকলাপঃ
ওই ঘটনার পর থেকে আমাদের সঙ্গে মান্যবর হাইকমিশনার ও ডেপুটি হাইকমিশনারের অসংখ্য যোগাযোগ হয়েছে। কিন্তু কোনো গঠনমূলক সাড়া পাওয়া যায়নি। আমরা লক্ষ্য করেছি যে, তাদের কর্মকাণ্ড কাউন্সিল অফ ম্যানেজমেন্ট কমিটির অতীতে দায়িত্বে ছিলেন এমন কতিপয় সদস্যদের কূট কৌশলকে উৎসাহিত করছে; যারা আমাদের কমিউনিটির মধ্যে অপ্রয়োজনীয় বিভাজন তৈরি করতে ব্যস্ত। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতাকারী জনাব মুহিবুর রহমান মুহিবের নেতৃত্বাধীন গ্রিন অ্যালায়েন্স হাইকমিশনারের অন্যায় সমর্থন নিয়ে একটি পৃথক কমিটি গঠন করেছেন।
সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, কমিটি গঠনের জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেয়ে গ্রিন অ্যালায়েন্স পাল্টা কমিটি গঠন করে। ১১ জানুয়ারি ২০২৪ সালে একটি সভা করে। উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন জনাব মুহিবুর রহমান মুহিব। অবৈধ এ সভায় বাংলাদেশ সেন্টারের পুরো ব্যাংক অ্যাকাউন্টটি ছিনিয়ে নেয়ার সিন্ধান্ত নেন এবং ব্যাংকে তিনজনকে অন্তর্ভুক্ত করে অ্যাকাউন্টের অ্যাক্সেসের জন্য ভূয়া কাগজপত্র ও ম্যান্ডেট ফর্ম প্রদান করেন। বাংলাদেশ সেন্টারের নির্ধারিত ব্যাংক অ্যাকাউন্টের অ্যাক্সেস পরিবর্তন করার অপচেষ্টা করা হলে ব্যাংক থেকে তাৎক্ষনিক ভাবে অনুমোদিত অন্যতম স্বাক্ষরকারী হিসেবে সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনকে ব্যাংক ম্যানেজার ইমেইলে যোগাযোগ করেন।এরকম জালিয়াতির ইমেইল পেয়ে সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন সরাসরি ব্যাংকে যান। ব্যাংকের ম্যানেজারের সাথে মিটিং করেন।
যারা এ জালিয়াতির সাথে সরাসরি জড়িত ছিলেন – তারা হচ্ছেন ফায়জুল হক, নাসিম আহমেদ ও সেন্টারের প্রধান নির্বাহী এস এম মোস্তাফিজুর রহমান।এই ম্যান্ডেট ফর্মে সত্যায়িত করেন জনাব মুহিবুর রহমান।যেহেতু এই কাজটি জালিয়াতি ও অসাংবাধানিক আমরা বাধ্য হয়ে পুলিশ এবং চ্যারিটি কমিশনকে ঘটনাটি রিপোর্ট করা সহ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়েছি।
স্থগিতাদেশ ও ঐক্যের ডাকঃ
এসকল ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সেন্টারের এক্সিকিউটিভ কমিটির জরুরী সভা আয়োজন করা হয়। উক্ত সভায় ব্যাংক জালিয়াতির এসব ঘটনার জন্য জনাব মুহিবুর রহমান মুহিবকে কাউন্সিল অফ ম্যানেজমেন্ট কমিটি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করার সুপারিশ করা হয়। তাকে ক্ষমা চাওয়ার এবং তাঁর কর্মকাণ্ড স্বীকার করার সুযোগ দেওয়াসহ বিষয়টি বন্ধুত্বপূর্ণভাবে সমাধানের চেষ্টা করা হয়।
সেন্টারের এক্সিকিউটিভ কমিটি জনাব মুহিবুর রহমানের নিকট থেকে আত্মপক্ষ সমর্থন নেয়ার জন্য সেন্টারের দুইজন ভাইস চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। দায়িত্ব প্রাপ্ত এই দুই কর্মকর্তা এক্সিকিউটিভ কমিটির পক্ষ থেকে জনাব মুহিবকে দুইদফা নোটিশ প্রদান করেন। কিন্তু তিনি দুইদফা নোটিশ অবজ্ঞা করেন।কোন ধরণের যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হন। বিষয়টি বন্ধুত্বপূর্ণভাবে সমাধানের চেষ্টা করার আপ্রাণ চেষ্টা করা হলে তার অসহযোগিতার জন্য তা করা সম্ভব হয়নি।
৮ আগস্ট ২০২৪ কাউন্সিল অফ ম্যানেজমেন্টের কমিটির সভায় জনাব মুহিবুর রহমান মুহিবের ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও অসাংগঠনিক আচরণ অব্যাহত ছিল, বাইরে থেকে লোকজন নিয়ে যেখানে তিনি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিলেন, যার জন্য পুলিশের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হয়েছিল। সাংগঠনিক আচরণবিধি লঙ্ঘন , ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জালিয়াতি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য কাউন্সিল অফ ম্যানেজমেন্টের ২৮ আগস্ট / ২০২৪ সালের সভায় জনাব মুহিবুর রহমানকে সর্বসম্মত ভাবে সেন্টারের সদস্যপদ আজীবনের জন্য বাতিল করা হয়।এছাড়া সভায় ফায়জুল হক ও নাসিম আহমেদের বিরুদ্ধে সতর্কতা নোটিশ প্রদান করা হয় এবং তাদেরকে কাউন্সিল অফ ম্যানেজমেন্টের পরবর্তী একটি সভার জন্য বরখাস্ত করা হয়।
প্রধান নির্বাহী এস এম মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা :
এছাড়া সেন্টারের প্রধান নির্বাহী এস এম মোস্তাফিজুর রহমান স্ব উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে ব্যাংকের একাউন্টের ম্যান্ডেট ফর্মে আইন লঙ্ঘন করে স্বাক্ষর করেছেন। সাংবিধানিক ভাবে সেন্টারের প্রধান নির্বাহীর ব্যাংকের একাউন্টের স্বাক্ষরকারী হওয়ার কোন বিধান নেই। একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা হিসেবে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান এ কাজ করা কোন ভাবেই উচিত হয়নি।প্রকাশ্যে তিনি জালিয়াতিতে অংশগ্রহণ করেছেন। এটা একটি বড় ধরণের অপরাধ।
এ অপরাধের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এস এম মোস্তাফিজুর রহমানকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য নিয়ম মোতাবেক কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়।দুই দফায় তদন্ত কমিটির নিকট সশরীরে উপস্হিত হয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য সুযোগ দেয়া হয়।কিন্তু তিনি উপস্হিত হতে বা কোন বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
সেন্টারের শৃংখলা, আচরণবিধি লঙ্ঘন ও একাউন্টের ম্যান্ডেট ফর্মে স্বাক্ষরকারী হিসেবে অবৈধ ভাবে স্বাক্ষর প্রদান করায় প্রধান নির্বাহী এস এম মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
আমরা মান্যবর হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম এবং ডেপুটি হাইকমিশনার হযরত আলী খানের কর্মকাণ্ডে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, যাঁদের অনৈতিক উৎসাহে বাংলাদেশ সেন্টারের বিভেদ আরও বেড়েছে। বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে তাদের নিরপেক্ষ থাকা এবং অনৈক্যের বীজ বপন না করে ঐক্য লালন করা অত্যাবশ্যক।
সহযোগিতার আবেদনঃ
আমরা বিশ্বাস করি- আমাদের যৌথ লক্ষ্য আমাদের কমিউনিটির কল্যাণ হওয়া উচিত। আমরা মান্যবর হাইকমিশনারসহ সকল পক্ষকে তাদের কর্মকাণ্ড পুনর্বিবেচনা করার আহবান জানাচ্ছি। বাংলাদেশ সেন্টার ও বৃহত্তর কমিউনিটির কল্যাণে সেন্টারের নির্বাচিত কমিটির সাথে সহযোগিতার ভিত্তিতে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি। আসুন আমরা আমাদের মতপার্থক্যগুলো ভূলে দিয়ে এবং একটি ঐক্যবদ্ধ, শক্তিশালী কমিউনিটি গড়ে তোলার দিকে মনোনিবেশ করি।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ, আপনাদের উপস্থিতির জন্য আবারও ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। বাংলাদেশ সেন্টার লন্ডনের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আপনাদের যে কোন প্রশ্ন বা উদ্বেগের সমাধান করার জন্য আমরা প্রস্তুত।
অতিরিক্ত সাধারণ সভা ( EGM) আহবান
এখানে আপনাদের সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, সেন্টারের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে সর্বশেষ আপডেট জানাতে – আগামী ১৫ অক্টোবর মঙ্গলবার, সন্ধ্যা ৬ ঘটিকার সময় পূর্ব লন্ডনের Ensign Youth Club, Wellclose Street, London E1 8HY এ সেন্টারে প্রতিষ্ঠাতা , স্হায়ী, আজীবন ও সাধারণ সদস্যদের নিয়ে একটি অতিরিক্ত সাধারণ সভা ( ইজিএম) কাউন্সিল অফ ম্যানেজমেন্ট কমিটির পক্ষ থেকে আহবান করা হয়েছে। উক্ত সভায় সেন্টারের সকল সম্মানিত প্রতিষ্ঠাতা , স্হায়ী, আজীবন ও সাধারণ সদস্যদের উপস্হিত থাকার জন্য আপনাদের মাধ্যমে অনুরোধ জানাচ্ছি।”