শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
https://blu-ray.world/ download movies
Sex Cams
সর্বশেষ সংবাদ
টাওয়ার হ্যামলেটসের বো এলাকায় নতুন কাউন্সিল ভবনের উদ্বোধন করেছেন নির্বাহী মেয়র লুৎফুর  » «   বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকের প্রাণহানি এবং সৃষ্ট অস্থিরতা-সহিংসতায় লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের ক্ষোভ-নিন্দা  » «   সৃজনের আলোয় মুস্তাফিজ শফি, লন্ডনে বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা  » «   বৃটেনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তাহমিনার অসাধারণ সাফল্য  » «   দুই বঙ্গকন্যা ব্রিটিশ মন্ত্রীসভায় স্থান পাওয়ায় বঙ্গবন্ধু লেখক এবং সাংবাদিক ফোরামের আনন্দ সভা ও মিষ্টি বিতরণ  » «   কেয়ার হোমের লাইসেন্স বাতিলের বিরুদ্ধে আইনী লড়াইয়ে ল’ম্যাটিক সলিসিটর্সের সাফল্য  » «   যুক্তরাজ্যে আবারও চার ব্রিটিশ-বাংলাদেশী  পার্লামেন্টে  » «   আমি লুলা গাঙ্গ : আমার আর্তনাদ কেউ  কী শুনবেন?  » «   বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে লন্ডনে ইউনিভার্সেল ভয়েস ফর হিউম্যান রাইটসের সেমিনার অনুষ্ঠিত  » «   লন্ডনে বাংলা কবিতা উৎসব ৭ জুলাই  » «   হ্যাকনি সাউথ ও শর্ডিচ আসনে এমপি প্রার্থী শাহেদ হোসাইন  » «   ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই ইন দ্য ইউকে’র সাথে ঢাবি ভিসি প্রফেসর ড. এএসএম মাকসুদ কামালের মতবিনিময়  » «   মানুষের মৃত্যূ -পূর্ববর্তী শেষ দিনগুলোর প্রস্তুতি যেমন হওয়া উচিত  » «   ব্যারিস্টার সায়েফ উদ্দিন খালেদ টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নতুন স্পীকার নির্বাচিত  » «   কানাডায় সিলেটের  কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলমকে সংবর্ধনা ও আশার আলো  » «  
সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন

বাজার নিয়ে বিরোধীদের বাড়াবাড়ি, মামার বাড়ির অাবদার পঞ্চাশ হাজার
প্রসঙ্গ বিয়ানীবাজার



সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

 

সর্বত্র লাগামহীন রাজনৈতিক নেতৃত্বদানের বিপরীতে সামাজিক ভারসাম্যপূর্ণ নেতৃত্বশূন্যতার কারণে চলমান সময়ে অনেক সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। এই কথাটি সর্বজনে প্রণিধানযোগ্য। সামাজিক সংস্কৃতির নিরাপদ জায়গাটি অপরাজনৈতিক চর্চার কবলে পড়ে সামাজিক রীতিনীতি, মূল্যবোধের অাচার-অাচরণ নির্বাসিত ভারসাম্যহীন সমাজে যা হয়, তারই প্রমাণ অাজকের এই চরম বাস্তবতা। পূর্বপুরুষগণের সম্প্রীতির অভিভাবকত্ব, ন্যায় বিচার পরায়ণতা, বলিষ্ঠ সামাজিক নেতৃত্বগুণের কারণেই মহিমান্বিত হয়ে ওঠেছিলো অাজকের বিয়ানীবাজার।

সাম্প্রতিক কালের অদক্ষ নেতৃত্ব ও সর্বত্র রাজনীতিকরণে অতি-উৎসাহী মনোবৃত্তির ফলে, চিরাচরিত মুরব্বিয়ানা ও মুন্সিয়ানার জায়গা থেকে অনেকে এগিয়ে অাসতে ভয় পান। সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে, অনেকে বলছেন, অভিভাবকত্ব ও মুরব্বিয়ানার ক্ষেত্রে একটি এলাকাকে দেউলিয়াত্বের মুখে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। নগণ্য সংখ্যক মানুষের স্বার্থসিদ্ধির কারণে। ঐতিহ্যের পরম্পরায় গড়ে ওঠা বিকশিত সমাজের সামাজিক মর্যাদা ও মানবিক মূল্যবোধের সংকট দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারসাম্যহীন- এ সমাজ সংস্কৃতি, অাগামী দিনের জন্য বড় বিপদ ডেকে অানবে।

যার বড় উদাহরণ মাছ বাজার নিয়ে বাড়াবাড়ি। বছর দিন থেকে, বিয়ানীবাজারের মৎস্য ব্যবসায়ীরা কোটি টাকার কিচেন মার্কেটে মামারবাড়ীর অাবদার করে ব্যর্থ হয়েছেন। তাঁদের অযৌক্তিক অাবদারে বিয়ানীবাজার পৌরসভা কর্তৃপক্ষ সাড়া দেয়নি। তাই ক্রেতাসাধারণকে জিম্মি করেতে ধর্মঘটের ডাক দিয়ে ছিলেন বিয়ানীবাজারের মৎস্য ব্যবসায়ীরা।

দেড় শতাব্দীকালের বেশী সময় থেকে মৎস্যজীবীরা পরম্পরাগত ভাবে বিয়ানীবাজার শহরে ক্রেতাদের সাথে পারস্পরিক ব্যবসা বাণিজ্য চালিয়ে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন। কিন্তু বহুবছর পূর্বথেকে মাছ বাজারের নির্ধারিত স্থানের বাহিরে এসে ফুটপাত দখল ও যানজটের সৃষ্টি করেন। মৎস্যজীবী ও সবজী ব্যবসায়ী কর্তৃক প্রতিনিয়ত নাগরিক দুর্ভোগের কারণে পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে মানুষের অভিযোগের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়েছে।

একটি শহরের নাগরিক সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব শহর কর্তৃপক্ষের। জনগণের সেই তাগিদ থেকে পৌর কর্তৃপক্ষ মৎস্যজীবীদের কিচেন মার্কেটে ফিরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ গ্রহন করে ব্যর্থ হয়েছে। পৌরসভার কিচেন মার্কেটে ফিরে না যাওয়ার প্রথম কারণ হচ্ছে, তাঁরা মাসিক ভাড়া না দিয়ে ব্যবসা করতে চান। বিগত বছরগুলোতে তাঁরা নামেমাত্র মাসিক ভাড়া দিয়ে অাসছিলেন।

পুরাতন মাছ বাজারে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ নতুন কিচেন মার্কেট নির্মাণে সরকারি নীতিমালা অনুসরণ করে জনসাধারণের কাছে দোকান ভিটা বিক্রি করেন। মার্কেটের অাণ্ডারগ্রাউণ্ড ফ্লোর মাছ বাজারের জন্য রাখা হলে, সেখানে নকশা ও নির্মাণত্রুটি ধরাপড়ার কারণে মৎস্যজীবীরে সেখানে যেতে অাপত্তি তোলেন। সর্বশেষ পৌরসভা কর্তৃপক্ষ মার্কেটের দ্বিতীয়তলায় মাছ বিক্রির জায়গা দিতে সম্মত হয়। কিন্তু মৎস্যজীবীরা সেখানে যেতে অনীহাপ্রকাশ করে রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে ব্যবসা অব্যহত রাখেন। একইসাথে প্রথম ফ্লোরে মাছ বিক্রির জন্য ভিটা দাবী করে অনড় থেকে ধর্মঘট ডেকে অ্যাল্টিমেটাম দেন। অযৌক্তিক অ্যাল্টিমেটামে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ সাড়া না দেয়ায় মৎস্যজীবীরা স্বেচ্ছায় বাজার ত্যাগ করেছেন।
এখানে চিন্তা ও বিবেকের সংকটে পড়ে জটিল পরিস্থিতির তালগোল জটপেকেছে! অাগামী দিনের অাইনপ্রণেতারা আইনবহির্ভূত প্ররোচনাকে সাধারণ মানুষও গ্রহণযোগ্য মনে করছেননা।

তাঁরা বাজার ত্যাগ করে ক্ষান্ত হননি। নিজেদের সহপাঠী ব্যবসায়ীদের ওপর জরিমানার খড়গ ঝুলিয়েছেন। পৌরসভা এলাকার বাড়ি বাড়ি গিয়ে মাছ বিক্রি করলে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে! মুক্তবাজার অর্থনীতি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে সরকার যখন নানান সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করছে। ঠিক তখনি একদল নিজেদের প্রতিপক্ষ হয়ে সরকারের প্রশংসনীয় উদ্যোগকে বানচাল করতে তৎপর।

পুঁজিবাদী সমাজে ধনী ব্যক্তিরা গরীবদের ওপর যেমন শোষণ করে। ঠিক একইভাবে, পুঁজিপতি মৎস্যজীবীরা, স্বল্পপুঁজির বা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র, পুঁজিহীন মৎস্য ব্যবসায়ীদের ওপর নিজেদের কায়েমি স্বার্থ জারি রাখতে তৎপর। ক্ষুদ্র মৎস্যজীবীদের অধিকার কেড়ে নিয়ে শোষণ করতে চায়। পৃথিবীব্যাপী গবীবের ওপর ধনীর যে শোষণ চলছে, বাস্তবতার নিরিখে এখানেই তার জ্বলন্ত প্রমান। পর্যবেক্ষণ বলছে, কর্তৃত্ববাদীদের বিরুদ্ধে অধিকারহীন মৎস্যজীবীদের অধিকার নিয়ে, রাজনীতির কূটকৌশল অপেক্ষা করছে।

বাজারটা সবার। ক্রেতা- বিক্রেতা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের স্বার্থ এখানে বিদ্যমান। বাজার কারোর মৌরসি সম্পত্তি হয়না। বাজার নিয়ম ও নীতিমালার মধ্যদিয়ে পরিচালিত হয়। মৎস্যজীবীদের ধর্মঘট কার বিরুদ্ধে ছিলো? পৌর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নাকি সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে। এটা এখনও পরিষ্কার নয়।

সময়ের ব্যবধানে নিশ্চয় তালগোলপাকা এই রহস্য বেরিয়ে অাসবে। ব্যবসার একটা নিয়ম অাছে। মৎস্যজীবীরা সেই নিয়মের মধ্যে অাছেন কি? এক দশক থেকে’ত ওনাদের ব্যবসায়ীক পারমিট নেই। যদি ট্রেড লাইসেন্স না থাকে, পৌর কর্তৃপক্ষ যদি তাঁর ন্যায্য কর না পায়। তাহলে, ওনাদেরতো কোন অাবদার চলতে পারেনা। মৎস্যবীজীরা তিন লাখ মানুষের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডের যাতায়াত ব্যবস্থায় দুর্ভোগ সৃষ্টি করে রেখেছিলেন। রাস্তা দখল করে বছরের পর বছর সাধারণ মানুষের চলাচলকে জিম্মিদশায় রেখেছিলেন। এ জন্যতো মানুষ মৎস্যজীবীদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখায়নি। তাহলে সাধারণ ক্রেতাদের বিরুদ্ধে মৎস্যজীবীদের এই ঝুলুম নির্যাতন কেনো?

শহরের প্রধান সড়ক ও ফুটপাতে মাছ এবং সবজির পসরা নিয়ে বসতে বাজার ইজারাদারের লোকজন মদদ যোগান। গোপনে নিজেদের পকেট ভারি করতে যেখানে সেখানে যত্রতত্র মাছ ও সবজি ব্যবসায়ীদের সুযোগ দিয়ে, জনদুর্ভোগ সৃষ্টির জন্য দায়ী।

সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী বিয়ানীবাজারে হাট-বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটি রয়েছে। এই কমিটি এসব দেখভাল করার দায়িত্ব রয়েছে। প্রশাসনিক এই কমিটি নিজেদের দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধের জায়গা থেকে জনসমস্যা সমাধানে ততটুক দায়িত্ব পালন করছে। সার্বিকভাবে বিষয়টি কতটা গুরুত্ব দিয়ে নজরদারি ও তদারকি করছে। জানার অধিকার থেকে প্রশাসনের ওপর তীক্ষ্ণদৃষ্টি রাখতে জনগণ ভুল করবেনা।

বিয়ানীবাজারের মৎস্যজীবীদের ওপর স্থানীয় জনগণ ও ক্রেতাদের অভিযোগের কি শেষ অাছে। স্থানীয় হাওর-বাওর, নদী বিল থেকে অাহরিত মাছ স্থানীয় জনগনের চাহিদা পুরণ না করে প্রতিনিয়ত ট্রাক ট্রাক মাছ বাহিরে বিক্রি করেন। স্থানীয় ভাবে বাজারগুলোতে মাছের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে অধিক মুনাফা লাভ করছেন। ছোট ছোট মৎস্যজীবীরা মজুদদার মুনাফালোভী মৎস্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তরতাজা মাছ সংগ্রহ করতে পারেন না। তাঁরা বাধ্যহয়ে বস্তাপচা অামদানীকৃত মাছ জনসাধারণে বিক্রি করছেন। বিষাক্ত কেমিক্যাল প্রয়োগকৃত মাছগুলো দেদারছে বিক্র হলেও স্থানীয় প্রশাসন নির্বিকার! পৌরশহরের মাছ বাজার নিয়ে খুদ মৎস্য ব্যবসায়ীদের মধ্য একাধিক গ্রুপ ও দ্বন্দ্ব রয়েছে। এসব নিয়ে তাঁরা একাধিকবার উচ্চ অাদালতে মুখোমুখি হয়েছেন। এমনসব মামলামকদ্দমা থেকে পৌরসভাও বাদ পড়েনি।

বিয়ানীবাজারের আব্দুল্লাহপুরে নতুন মাছ বাজারের অনুমোদন কে দিয়েছে? এমন প্রশ্ন ওঠেছে নানান মহল থেকে। বিয়ানীবাজার শহর থেকে দেড় শতাব্দীর পুরাতন মাছ বাজার থেকে মৎস্যজীবীরা কাদের ব্যর্থতায় চলে গেলেন। এর দ্বায়ভার কার? মৎস্য ব্যবসায়ীরা হুটহাট চলে যাওয়াতে সাধারণ ক্রেতারাও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এই সংকটের দুর্ভোগ উত্তরণে, সমাধানের উপায় খোঁজে বেঁর করতে হবে।

আব্দুল্লাহপুরের ‘হাজী রসিম উদ্দিন মার্কেট’-এ নতুন মাছ বাজার চালুর পরপরই ঘোষনা দিয়েছেন, কোন মাছ ব্যবসায়ী পৌর এলাকার বাড়ি বাড়ি গিয়ে মাছ বিক্রি করলে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। প্রশ্ন ওঠেছে, পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করার অনুমোদন কে দিয়েছেন। আব্দুল্লাহপুরের ‘হাজী রসিম উদ্দিন মার্কেট’-এ নতুন মাছ বাজার চালুর অনুমোদন সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ কি দিয়েছে? নতুন বাজার সৃষ্টির জন্য মার্কেটের মালিক কি সরকারের নামে জমি রেজিস্ট্রারি করে কি দিয়েছেন? স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি অনুসন্ধান পূর্বক ব্যবস্থা নেয়ার দাবী ওঠেছে। দুইশত বছরের ঐতিহ্যবাহী বৈরাগীবাজার থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে অারো একটি নতুন বাজার সৃষ্টির উদ্দেশ্য কি? নাকি বৈরাগীবাজারের অস্তিত্ব বিলিন করে দিয়ে নতুন নতুন মুনাফাখোর ফড়িয়া মহাজন সৃষ্টির ক্ষেত্র তৈরী হচ্ছে।

সঠিক নেতৃত্ব ও বলিষ্ঠ মুরব্বিয়ানায়, অতিতে বহুবার মাছ বাজার নিয়ে নানান সমস্যা ও জটিল সংকটের সমাধান হয়েছে। বাজার নিয়ে ট্যাণ্ডাই ম্যাণ্ডাই’র ঘটনা নতুন কিছু নয়। এসব যুগযুগ ধরে চলছে। নব্বই দশকে জনৈক গিয়াস উদ্দিনের সাথে ঝগড়ার কারণে মৎস্যজীবীরা বিয়ানীবাজারে মাছ বিক্রি বন্ধ করলে সঠিক মুরব্বিয়ানার নেতৃত্বে সমাধান হতে সময় লাগেনি।

বৈরাগীবাজারে সপ্তাহের হাটে ঝগড়া- বিবাদ নৃত্য হাটেহাড়ি ভাঙ্গার ঘটনা ছিলো। কয়েক বছর অাগে, সংঘর্ষের পর ফাঁড়ির বাজার বিভক্ত হতে দেখলাম। মাথিউরা ঈদগাহ বাজার সরকারী করণ নিয়ে বিরোধটাও প্রত্যক্ষ করেছি। ঝুলুম নির্যাতনের অভিশাপে খাসা নয়াবাজারের স্থায়িত্ব টিকেনি। খাসা নয়াবাজার-এ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রক্ষিতে অামাদের কসবা গ্রামের পর শ্রীধরায় অারো একটি ত্রিমুহী বাজারের সৃষ্টি। শ্রীধরা ত্রিমুহী বাজার সৃষ্টি নিয়ে মুরব্বিগণের কাছ থেকে অনেক নির্মম সত্য জানার সৌভাগ্য হয়েছে। বারইগ্রামে গরুর হাট বসানো নিয়ে এপার ওপার মৌলভীবাজারের সাথে প্রশাসনিক বিরোধ অনেক হয়েছে। সরকারি হিসাবমতে, বিয়ানীবাজারের অাটত্রিশটি হাটবাজার রয়েছে। সরকারের নিবন্ধনের বাহিরে অনেকগুলো বাজার রয়েছে। সেগুলোতে সরকারের কোন নজরদারি নেই।

সরকারি তত্ত্বউপাত্ত ও প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তাদের সাথে অালাপ থেকে হাটবাজার সৃজনের অনেক কথা থেকে ওঠে এসেছে, হাট বাজার এর প্রকৃত মালিক হচ্ছেন, সরকার তথা ভূমি মন্ত্রণালয়ের পক্ষে জেলা প্রশাসক৷ ১৯৫০ সালের জমিদারী অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইনের ২০ ধারা বলে সকল হাট বাজারের মালিকানা সরকারের হাতে৷ এই অাইন ও নীতিমালা অনুযায়ী, যে কোনো এলাকার জনগণের সুবিধার্থে নতুন হাট বাজার সৃজন করতে জেলা প্রশাসকের অনুমোদন নিতে হয়।

১৯৫৯ সনের ৬নং অধ্যাদেশ অনুসারে, নতুন হাটবাজার সৃষ্টির অনুমোদন হাট বাজার বসানোর পূর্বেই গ্রহণ করতে হবে। ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে হাট বসাতে হলে ঐ জমির মালিককে জেলা প্রশাসক বরাবরে রেজিষ্ট্রারী দলিল মূলে জমি হস্তান্তর করে দিতে হয়।

হাট বাজারের আয়-ব্যয় সরকারী নিয়ন্ত্রণে ও বিধি মোতাবেক পরিচালিত হবে। হাটে অবস্থিত চান্দিনা ভিটির খাজনা উক্ত ভিটির মালিককে বাণিজ্যিক হারে পরিশোধ করতে হবে। হাট বাজার সম্প্রসারিত হয়ে অন্য কোনো জমিতে বা স্থানে চলে গেলে তা থেকে উক্ত মালিক কোন টোল/খাজনা আদায় করতে পারবেনা। উক্ত ভূমি পেরীফেরী কালীন সময়ে বাজারের অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। এভাবে পেরীফেরীভুক্ত হাট-বাজারের সম্প্রসারিত জমি বিধি মোতাবেক অধিগ্রহণেরমাধ্যমে জেলা প্রশাসক হাট বাজারের অন্তর্ভুক্ত করবেন। অধিগ্রহণ মূল্য সংশ্লিষ্ট হাট-বাজারের আয় হতে পরিশোধ করতে হবে।

জেলা প্রশাসকের পূর্বানুমতি ব্যতিরেকে কোনো হাট বাজার প্রতিষ্ঠা করা হলে অনুমতি না নেয়ার জন্য ব্যবস্থা নেয়ার বিধান রয়েছে। পাশ্ববর্তী কোনো হাট-বাজারের ক্ষতির কারণ থাকলে এরূপ হাট-বাজার উচ্ছেদ করা যাবে কিন্তু ক্ষতিপূরণ না দিয়ে তাহা বাজেয়াপ্ত করা যাবে না। নতুনহাট-বাজার সৃজন বা পুরাতন হাট-বাজার তুলে দেয়া সংক্রান্ত প্রস্তাব জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে ভূমি মন্ত্রনালয় প্রেরণ করবেন। এবিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। কারণ স্থানীয় সরকার বিভাগকে কেবল ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, মালিকানা বা স্বীকৃতি প্রদানের ক্ষমতা এ বিভাগের নেই। হাট-বাজার পরিচালনার জন্য ইউনিয়ন এবং উপজেলা পর্যায়ে একটি করে হাট-বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটি রয়েছে। এ কমিটিই হাট-বাজারের যাবতীয় আয়-ব্যয় এবং উন্নয়ন মূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকে।

লেখক: সাংবাদিক ও সমাজ অনুশীলক।


সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন