প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপার লীলাভূমি মৌলভীবাজার জেলা। এই জেলার অন্যতম অঞ্চল জুড়ি-বড়লেখা। চা ও আগর শিল্পের জন্য এই অঞ্চলটি দেশ বিদেশে পরিচিত।এই অঞ্চলের বহু আলোকিত মানুষ দেশ বিদেশে বিভিন্ন পেশায় কাজ করছেন। এলাকা তথা বাংলাদেশ এর নাম উজ্জল করে আছেন।
প্রবাসেও আছে আমাদের উজ্জল পরিচিতি। প্রায় ৫০ হাজারের মতো প্রবাসী বিভিন্ন দেশে বাস করছেন। তাদের প্রেরিত রেমিটেন্স আমাদের পারিবারিক স্বচ্ছলতার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছে।
কিন্তু তারপরও এটা অস্বীকার করার কারণ নেই যে, আমাদের অঞ্চল সামগ্রিক আর্থসামাজিক উন্নয়নের বিচারে অনেকটা পিছিয়ে আছে।
ব্রিটেনে বড়লেখা প্রবাসীদের প্রায় ১৫টি সামাজিক সংস্থা আছে। যেগুলো বিভিন্নভাবে বাংলাদেশের সামাজিক কাজে সহায়তা করলেও বড় ধরণের চ্যারিটেবল কাজের দৃষ্টান্ত নেই। সম্প্রতি বড়লেখার দুইজন শিল্পপতি দুবাই প্রবাসী আলহাজ আব্দুল করিম এবং বাংলাদেশের মিঠু্র যুক্তরাজ্য আগমণ উপলক্ষে বড়লেখাবাসীর উদ্যোগে লন্ডনে এক সংবর্ধনা সভার আয়োজন করা হয়।
ঐ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে একটি ডায়বেটিস হাসপাতাল করার প্রস্তাব আসে। আমি ঐ প্রস্তাবকে সাধুবাদ জানাই। যে কোন ধরণেন সাহায্য সহযোগিতার জন্য আন্তরিক ভাবে পাশে থাকবো।
বড়লেখা ও জুড়ি এলাকায় স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত নয়। এই অঞ্চলে বেসরকারী উদ্যোগেও এই রকম কোন হাসপাতাল এখনও গড়ে উঠেনি। যেখান থেকে মানুষ সহজে ভালো সেবা পেতে পারেন। বিশেষ করে এই দুই থানার মানুষের জন্য একটি চ্যারিটেবল হাসপাতাল খুবই প্রয়োজন।
এইসব কাজ অনেক ব্যয় সাপেক্ষ এবং দূরপ্রসারী । তাই বলে অসম্ভব কিছু নয়। যুক্তরাজ্যে বসবাসরত এই অঞ্চলের অনেক মেধাবী এবং অভিজ্ঞতা সম্পন্ন মানুষ আছেন, যাদের দ্বারা এই রকম কাজ এগিয়ে নেয়া সম্ভব। এছাড়াও ব্রিটিশ-বাংলাদেশী প্রজন্মের অনেক আছেন যারা যুক্তরাজ্যে ভালো পেশায় কাজ করছেন। তাদেরকেও এই মহতি উদ্যোগে কাজে লাগানো যায়।
এইসব কাজে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন বলে মনে করি দলমত ও আঞ্চলিকতার উর্ধে উঠে সকলের ঐক্যবদ্ধতা। আমাদের লক্ষ্যস্থীর করে এক হয়ে কাজ করলে একটি ডায়বেটিস হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা অসম্ভব নয় মোটেও।
যুক্তরাজ্য অনেক সামাজিক সংগঠন আছে। সবার এই বিষয়ে বাস্তবভিত্তিক মতামত দিয়ে এক হয়ে কাজ করা এখন সময়ের দাবী। এছাড়াও ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্যে বাস করা প্রবাসীদেরও সম্পৃক্ত করার কাজটি করা দরকার। এইসব কিছুই করা যাবে, যদি এই অঞ্চলের অভিজ্ঞ, সৎ, উদ্যোমীদের নিয়ে একটি কমিটি করে উদ্যোগের যাত্রা করা হয়। বিশেষ করে যুক্তরাজ্যের প্রবীনদের অংশগ্রহনটা জরুরী। তাহলে পারস্পরিক শ্রদ্ধা থাকবে এবং এই ভালো উদ্যোগটিকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে আমরা সত্যিকার অর্থে অভিবাবকতুল্য সংগঠন এবং সাংগঠনিক দক্ষতা সম্পন্ন মানুষ পাবো।
আসুন আমরা এক হই। তুলনামূলক পশ্চাদপদ জুড়ি-বড়লেখার অগণিত মানুষের স্বাস্থ্য সেবার জন্য একটি চ্যারিটেবল ডায়বেটিস হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েই প্রতিষ্টার পথ উন্মোক্ত করি।
বিশেষ করে সোনাই-মনু বিধৌত অঞ্চলের যুক্তরাজ্য ইউরোপ,আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসীরা স্থির লক্ষে কাজ করলে, এই কাজটা করা মোটেই অসম্ভব কোন বিষয় নয়। প্রয়োজন শুধু ঐক্যের।
জাহেদ আহমদ রাজ; কমিউনিটি একটিভিস্ট। সাবেক সভাপতি, চান্দগ্রাম ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট।