গাজা যুদ্ধ নিয়ে সরকারের অবস্থানের প্রতিবাদে ডাচ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ
- আপডেট সময় : ১১:৩৫:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫
- / 219
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ প্রসঙ্গে সরকারের অবস্থানের প্রতিবাদে আগেভাগেই পদত্যাগ করেছেন নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাসপার ভেল্ডক্যাম্প।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) সাংবাদিকদের তিনি জানান, গাজা বিষয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বাড়তি কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তাবে সরকার সমর্থন দেয়নি।
ভেল্ডক্যাম্প বলেন, “বাড়তি পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে আমি মন্ত্রিসভায় বাধার মুখে পড়েছি।” এরপরই তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার কথা জানান।
তার উদ্যোগেই এর আগে চরম-ডানপন্থি ইসরায়েলি মন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ ও ইতামার বেন-গভিরের নেদারল্যান্ডসে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। অভিযোগ ছিল, তারা ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের উসকে দিচ্ছেন।
এ ছাড়া ভেল্ডক্যাম্প ইসরায়েলে জাহাজের যন্ত্রাংশ রপ্তানির তিনটি অনুমতিপত্রও বাতিল করেছিলেন। গাজা পরিস্থিতির অবনতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি তখন জানিয়েছিলেন, এসব যন্ত্রাংশ অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ব্যবহার হতে পারে।
সাংবাদিকদের ভেল্ডক্যাম্প বলেন, “গাজায় যা ঘটছে তা আমিও প্রত্যক্ষ করছি। গাজা সিটিতে হামলা হতে দেখছি। পশ্চিম তীরের পরিস্থিতিও আমার সামনে স্পষ্ট। বিতর্কিত বসতি ই১-এ নির্মাণকাজের সিদ্ধান্ত এবং পূর্ব জেরুজালেমে যা হচ্ছে, তাও দেখছি।”
ভেল্ডক্যাম্পের পদত্যাগের ফলে নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদটি শূন্য হলো। তিনি এমন সময় পদ ছাড়লেন, যখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ৩ জুন নেদারল্যান্ডসের সরকার ভেঙে যায়। ফলে দেশটি এখন একটি তত্ত্বাবধায়ক সংখ্যালঘু সরকারের অধীনে চলছে, যা অক্টোবরে নির্বাচন শেষে নতুন জোট সরকার না হওয়া পর্যন্ত বহাল থাকবে।
এদিকে ইসরায়েল গাজা সিটি দখলে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে। বেসামরিক নাগরিকদের দক্ষিণে সরিয়ে নেওয়া, হামাসকে দুর্বল করা এবং জিম্মিদের মুক্ত করতে চাপ সৃষ্টি করাই এ অভিযানের উদ্দেশ্য বলে জানিয়েছে তেলআবিব।
শুক্রবার নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগের দিনই এক বৈশ্বিক ক্ষুধা পর্যবেক্ষক সংস্থা জানিয়েছে, গাজা সিটি ও আশপাশের এলাকাগুলোতে মানুষ দুর্ভিক্ষের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তবে ইসরায়েল এই প্রতিবেদনকে “মিথ্যা ও পক্ষপাতদুষ্ট” বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।
এ ছাড়া চলতি সপ্তাহেই পশ্চিম তীরে নতুন একটি বসতি নির্মাণের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েল। পর্যবেক্ষকদের মতে, এ বসতি হলে ফিলিস্তিনিদের দাবিকৃত স্বাধীন রাষ্ট্রের ভূখণ্ড দ্বিখণ্ডিত হয়ে পড়বে।


















