বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে ৭ জুন এক ঐতিহাসিক দিন । ১৯৬৬ সালের এইদিনে বাঙালি জাতির মুক্তি সনদ ৬ দফার সমর্থনে হরতাল পালন করতে গিয়ে মনু মিয়ার মতো বীরসন্তানেরা বুকঠান করে দাঁড়িয়ে ছিলেন স্বৈরশাসক আইউব খানের বুলেটের সামনে। ৭ জুনের আত্মত্যাগ মুক্তি সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করেছে। তাই রাষ্ট্রীয়ভাবে দিবসটি পালনের জোর দাবি জানাচ্ছি ।
স্বাধিকার আন্দোলনের প্রথম শহিদ শহিদ মনু মিয়া স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের আগে বিভিন্ন বক্তা এ দাবি জানান।
শহিদ মনু মিয়া স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে বিয়ানীবাজারের নয়াগ্রামে অবস্থিত স্মৃতিস্তম্ভে ৫৮তম শহিদ মনু মিয়া দিবস উপলক্ষ্যে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। শ্রদ্ধা নিবেদনের আগে উপস্থিত ব্যক্তিবর্গ বক্তব্য রাখেন । স্মৃতি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুদ্দীন জাফরী এবং সহ সাধারণ সম্পাদক কবি ওয়ালী মাহমুদের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে স্মৃতি পরিষদের সভাপতি বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মো আলী আহমদ, বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক দ্বারকেশ চন্দ্র নাথ, অবসরপ্রাপ্ত প্রবীণ শিক্ষক মজিদ উদ্দিন আনসার, উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন নাহার , বিয়ানীবাজার পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র সাইফুল আলম ঝুনু, কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম সায়েক, কুড়ার বাজার কলেজের প্রভাষক বিজিত আচার্য, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবাদ আহমদ, সাংবাদিক মাসুম আহমদ, নয়াগ্রাম নবীন সংঘের সভাপতি মো সামছ উদ্দিন, শাহাব উদ্দিন মৌলা, মামুনুর রশিদ খান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন । এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু পেশাজীবী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার উদ্দিন আহমদ, নয়াগ্রাম নবীন সংঘের সাধারণ সম্পাদক মো আব্দুল ওয়াদুদ, প্রধান শিক্ষক মো লুৎফুল হক চৌধুরী, সাংস্কৃতিক কর্মী ইমাম হাসনাত সাজু, সাংবাদিক হিরণ রোহী দাস, সৈয়দ মুনজের হোসেন বাবু, এম এ ওমর, সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডাইরেক্টর শফিউর রহমান, মো দেলওয়ার খান, মারজান খানসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
বক্তারা আরো বলেন, ঐতিহাসিক ৭ জুনের সাথে বিয়ানীবাজারের বীর সন্তান মনু মিয়ার নাম ওতোপ্রত ভাবে জড়িত আছে। মনু মিয়ার বীরত্বের কথা বর্তমান প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে । আর এ জন্য রাষ্ট্রের উদ্যোগ দরকার ।
বক্তব্য শেষে স্মৃতি স্তম্ভে শহিদ মনু মিয়া স্মৃতি পরিষদ, বিয়ানীবাজার পৌরসভা, নয়াগ্রাম নবীন সংঘসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
স্থানীয় মসজিদে বাদ জুমা মনু মিয়াসহ ৭ জুন শাহাদত বরণকারীদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয় ।
উল্লেখ্য, মনু মিয়ার বাড়ী বিয়ানীবাজার পৌরসভার নয়াগ্রাম গ্রামে। তাঁর পুরো নাম ফখরুল মৌলা খান ওরফে মনু মিয়া। তিনি মৃত মনোহর আলীর পুত্র । তিনি ঢাকার তেজগাঁও এ কোকাকোলা কোম্পানিতে চাকরি করতেন। ৬৬’র ৭ জুন পুলিশের গুলিতে মনু মিয়া শহিদ হন। তাঁর লাশটিও আইউব সরকার গুম করে ফেলে।
২০১৭ সালে মনু মিয়ার বাড়িতে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীদের উদ্যোগে প্রায় সাড়ে ছয়লাখ টাকা ব্যয়ে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ২০১৮ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নবনির্মিত স্মৃতি সৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে স্থানীয় ভাবে দিবসটি পালিত হচ্ছে ।
স্বাধিকার আন্দোলনের প্রথম শহীদ মনু মিয়া কেন জাতীয়ভাবে অনুচ্ছারিত ?