শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
https://blu-ray.world/ download movies
Sex Cams
সর্বশেষ সংবাদ
টাওয়ার হ্যামলেটসের বো এলাকায় নতুন কাউন্সিল ভবনের উদ্বোধন করেছেন নির্বাহী মেয়র লুৎফুর  » «   বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকের প্রাণহানি এবং সৃষ্ট অস্থিরতা-সহিংসতায় লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের ক্ষোভ-নিন্দা  » «   সৃজনের আলোয় মুস্তাফিজ শফি, লন্ডনে বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা  » «   বৃটেনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তাহমিনার অসাধারণ সাফল্য  » «   দুই বঙ্গকন্যা ব্রিটিশ মন্ত্রীসভায় স্থান পাওয়ায় বঙ্গবন্ধু লেখক এবং সাংবাদিক ফোরামের আনন্দ সভা ও মিষ্টি বিতরণ  » «   কেয়ার হোমের লাইসেন্স বাতিলের বিরুদ্ধে আইনী লড়াইয়ে ল’ম্যাটিক সলিসিটর্সের সাফল্য  » «   যুক্তরাজ্যে আবারও চার ব্রিটিশ-বাংলাদেশী  পার্লামেন্টে  » «   আমি লুলা গাঙ্গ : আমার আর্তনাদ কেউ  কী শুনবেন?  » «   বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে লন্ডনে ইউনিভার্সেল ভয়েস ফর হিউম্যান রাইটসের সেমিনার অনুষ্ঠিত  » «   লন্ডনে বাংলা কবিতা উৎসব ৭ জুলাই  » «   হ্যাকনি সাউথ ও শর্ডিচ আসনে এমপি প্রার্থী শাহেদ হোসাইন  » «   ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই ইন দ্য ইউকে’র সাথে ঢাবি ভিসি প্রফেসর ড. এএসএম মাকসুদ কামালের মতবিনিময়  » «   মানুষের মৃত্যূ -পূর্ববর্তী শেষ দিনগুলোর প্রস্তুতি যেমন হওয়া উচিত  » «   ব্যারিস্টার সায়েফ উদ্দিন খালেদ টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নতুন স্পীকার নির্বাচিত  » «   কানাডায় সিলেটের  কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলমকে সংবর্ধনা ও আশার আলো  » «  
সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন

আনন্দমুখর পরিবেশে তিউনিসিয়া সফর করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই ইন দ্য ইউকের সদস্যরা



সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

উত্তর আফ্রিকার এটলাস পর্বতমালা ও সাহারা মরুভূমীর দেশ তিউনিসিয়া সফর করেছে লন্ডনে বসবাসরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালমনাই ইন দ্য ইউকের ১১ই মে থেকে ১৪ই মে চারদিনব্যপী আনন্দ ভ্রমনে সংগঠনের ৩৯জন সদস্য ও তাঁদের অনেকে পরিবার নিয়ে ভূমধ্যসাগরের পাড়ের পর্যটন শহর সমুদ্র সৈকত ইয়াসমিন হ্যামামেট গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ঘুরে এসেছেন তিউনিসিয়ার রাজধানী অনিন্দ সুন্দর তিউনিস শহর। দেখে এসেছেন ইউনেস্কো সংরক্ষিত পিউনিক ও রোমান সাম্রাজ্যের কার্থেজ কেন্দ্রের ধ্বংসাবশেষ। আর ফিরে আসার দিন উপভোগ করেছেন মন মাতানো মেডিটেররানিয়ান ক্রুজ।

এছাড়াও সবাই দল বেঁধে গাড়িতে এবং টমটমে বিভিন্ন দর্শিণীয় স্থান পরিদশর্ন করেছেন। তিউনিশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম মিউজিয়াম সুছ, বিখ্যাত মসজিদ কাইরান, বিখ্যাত থিয়েটার আল জেম, তিউনিসিয়ার স্বাধীনতার মহানায়ক হাবিব বুরগিবার সমাধি মোনাস্তির, ধর্মীয় নেতা সিডি বু সাইদ ও হ্যামামেট এর আশেপাশের বিভিন্ন আকর্ষণীয় স্থান।

ভূমধ্যসাগরে পুরনোদিনের আদলে তৈরী ‘কলম্বাস’ বোটে করে সমুদ্র ভ্রমণের সময়ে বোটের ক্রুরা গান ও নৃত্য পরিবেশন করে সবাইকে আনন্দে মাতিয়ে রাখে। তাদের সাথে পুরো বোটের যাত্রীরাও নাচে অংশগ্রহণ করেন । ক্রুদের সাজ ছিল পুরনো আমলের জাহাজের খালাসীদের মত। এক পর্যায়ে তারা জলদস্যুর ভূমিকায় অভিনয় করে। কাঠের তলোয়ার দিয়ে ভয় দেখিয়ে যাত্রীদের জিম্মি করার কৌশল প্রদর্শন করে। বোটে মধ্যাহ্ন ভোজের আয়োজনও ছিল।

গত বছর এই সংগঠনের সদস্যরা আকর্ষণীয় ইস্টবর্ণের সমুদ্র সৈকতে সামার ট্রিপে গিয়েয়েছিলেন। তখন সভাপতি মারুফ চৌধুরী ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘আগামীতে আমরা ইউকের বাইরে অন্য দেশে সবাই মিলে সফরে যাব’। যেই কথা সেই কাজ, অর্থাৎ তখন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল প্রস্তুতি। সফরকে সাফল্যমন্ডিত করতে করিৎকর্মাদের নিয়ে গঠন করা হয় একটি কমিটি। সভাপতি মারুফ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আ ফ মেসবাহ উদ্দিন ইকো এর তত্ত্বাবধানে কমিটিতে ছিলেন বাসিত চৌধুরী কামরান, সৈয়দ জাফর, এরিনা সিদ্দিকী, সৈয়দ ইকবাল, এম কিউ হাসান, মেহেরুন আহমেদ মালা, কামরুল হাসান ও সারমিন চৌধুরী। তবে, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক এরিনা সিদ্দিকী এই সফরকে ফলপ্রসূ করতে ব্যাপক গবেষণা শুরু করেন এবং কোষাধ্যক্ষ সৈয়দ জাফরের সহযোগিতায় অক্লান্ত পরিশ্রম করে ভূমধ্য সাগরের উপকূলে ফ্রান্সের সাবেক উপনিবেশ তিউনিসিয়া সফর চূড়ান্ত করা হয়। তারপর তিউনিসিয়া সফরে যাবার যাত্রীরা মহা আনন্দে শুরু করেন প্রস্তুতি। ‘তিউনিসিয়া ভ্রমণ’ গ্ৰুপে শুরু হয়ে যায় প্রস্তুতির মহাযজ্ঞ। সেখানকার আবহাওয়া কেমন হবে, তাপমাত্রা কেমন থাকবে, সুস্বাদু খাবারের তালিকা, সাঁতারের উপযোগী পোশাক, সময় কাটাবার জন্য দাবা, লুডু, কার্ড সঙ্গে নেবার তাগিদ ইত্যাদি। কোন কোন আকর্ষণীয় স্থানগুলো দেখতে যাওয়া হবে তা গবেষণা করে বের করেছেন ড. কামরুল হাসান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পদচারণায় ১১ই মে শনিবার গ্যাটউইক বিমান বন্দর ছিল মুখরিত। ইজি জেট এয়ারলাইনসের প্যাকেজ ট্যুরে অল ইনক্লুসিভ হোটেল বুক করা হয়েছিল।

আগেই ঠিক করা ছিল লন্ডনের যে যে প্রান্তেই থাকুক দুপুর বারটায় গেটউইক এয়ারপোর্টে সবাই উপস্থিত থাকবেন। সবার আগে মাহফুজা রহমান ও এমদাদ তালুকদার দম্পতি গরম গরম পেঁয়াজু নিয়ে হাজির হয়েছেন। তারপর একে একে মতিন চৌধুরী এসেছেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেনসহ রেডব্রিজ থেকে বড় গাড়িতে একসাথে অনেকে এসেছেন। উপদেষ্টা শাহগির বখত ফারুক, সভাপতি মারুফ চৌধুরী, মোহাম্মদ আবুল কালাম এসেছেন। মির্জা আসাব বেগ, বাসিত চৌধুরী ও মোস্তফা কামাল মিলন এসেছেন সস্ত্রীক, সৈয়দ ইকবাল স্ত্রী ও তিন সন্তান এবং কে জি বি কনক ও সুপ্রভা অ্যালামনাই দম্পতি দুই সন্তানসহ এসেছেন। আরো এসেছেন ফখরুল ইসলাম মেজবাহ, ফয়জুল হক রিপন, মিজানুর রহমান, ড. কামরুল হাসান, সহুল আহমেদ মকু, চন্দন মিয়া, আব্দুল মাজেদ, সৈয়দ জাফর। সস্ত্রীক সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন ইকো এসেছেন সঙ্গে তাঁর গাড়িতে এসেছেন উপদেষ্টা আবু মুসা হাসান ও নিলুফা ইয়াসমীন হাসান।
সারপ্রাইজ ছিল সুদূর পশ্চিম লন্ডন থেকে গ্যাটউইক বিমান বন্দরে সবাইকে সি অফ করতে উপস্থিথ হয়েছিলেন সাবেক সভাপতি গৌস সুলতান। তাকে কাছে পেয়ে সবাই যারপরনাই খুশি হয়েছেন।

যথাসময়ে রাত সাড়ে আটটায় আমরা ইনফিদা হ্যামামেট এয়ারপোর্টে পৌঁছেছি। এয়ারপোর্ট থেকে শার্টল বাসে করে আমাদের জন্য নির্ধারিত সমুদ্রের কোল ঘেঁষা মনোরম সুন্দর হোটেল আল মুরাদি হ্যামামেটে এসে পৌঁছি। ইয়াসমিন হ্যামামেট একটি ঐতিহ্যবাহী উপকূলীয় শহর। অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। সূক্ষ্ম সাদা বালি এবং স্ফটিক-স্বচ্ছ জল এই সামুদ্রিক ছিটমহলটিকে এর প্রকৃতির দ্বারা আকৃষ্ট করে রেখেছে। সেখানে রাতের খাবার খেয়ে লবিতে গভীর রাত পর্যন্ত চলে মধুর আড্ডা। সারাদিনের জার্ণির ক্লান্তি কাউকে কাবু করতে পারেনি। যে তিন রাত্রি হোটেলে ছিলাম সারাদিন ঘোরাঘুরি শেষে রাতে জমতো মধুর আড্ডা। আড্ডার ফাঁকে ফাঁকে গান, কবিতা, নাচ, কৌতুক কোনটাই বাদ যায়নি। সবার ভিতর যে এত সুপ্ত প্রতিভা আছে একসাথে তিউনিসিয়া ভ্রমনে না গেলে জানা হতোনা।

সমুদ্রের মিষ্টি গর্জনে খুব ভোরে ঘুম থেকে জেগে সমুদ্রের পাড়ে প্রাতঃভ্রমণ সেরে নাস্তার টেবিলে চলতো আরেক দফা আড্ডা। তারপর সমুদ্রে স্নান, হোটেলের পুলে সাঁতার কাটা হতো প্রতিদিন। সকলের সুন্দর স্মৃতিময় মুহূর্তগুলো বেশিরভাগ নিজের ক্যামেরায় বন্দি করেছেন এম কিউ হাসান।
দলের সাহসী সদস্য জাফর, মিজান, রিপন, কনক ও এম কিউ হাসান সমূদ্রের উপরে বেলুনে আকাশে উড়েছেন (পেরাগলেন্ডিং), কোয়াড বাইক চালিয়েছেন। এম কিউ হাসান আরো কয়েকজন বোটের যাত্রীসহ ভূমধ্যসাগরে সাঁতার কেটেছেন। তারপর প্রতিদিনই এক সাথে গাড়িতে চড়ে হৈচৈ করতে করতে, গান গেয়ে দর্শনীয় স্থানগুলো পরিদর্শন করেছেন সবাই। হোটেলের পাশে মদিনা বাজারে যেয়ে প্রিয়জনের জন্য উপহার, সুভেনিউর কিনেছেন।

তিউনেসিয়া থেকে ফিরে এসে সবার প্রায় একই বক্তব্য, সমুদ্রে সাঁতার কাটা, গভীর রাত পর্যন্ত হোটেল লবীতে সবাই মিলে নাচ, গান, কৌতুক আড্ডায় মধুর সময় কেটেছে যার ঘোর এখনো কাটিয়ে উঠতে পারছেননা। এই আনন্দের রেশ থাকবে বহুদিন।

তিউনিসিয়ার সরকারী নাম তিউনিসীয় প্রজাতন্ত্র। উত্তর আফ্রিকার উপকূলে ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত। দেশটির মধ্য দিয়ে এটলাস পর্বতমালা চলে গেছে। ধারণা করা হয় যে, তিউনিস নামটি বার্বা‌র জাতির ভাষা থেকে এসেছে, যার অর্থ “শৈলান্তরীপ” অথবা “রাত কাটাবার স্থান”।

রাজধানী তিউনিসে দুইটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং একটি আন্তর্জাতিক মঞ্চনাটক মিলনায়তন আছে। হলিউডের অনেক সিনেমার শুটিং হয়েছে এই শহরে। জুলাই মাসে কার্থেজে গ্রীষ্মকালীন উৎসব হয়, যেটি বেশ খ্যাতি লাভ করেছে। তিউনিস শহরটি ফরাসি ঔপনিবেশিক শাসনের সময়ে নির্মাণ করা হয়। ১৯৫৬ সালে তিউনিসিয়ার স্বাধীনতা অর্জনের পরে শহরটিকে দেশের রাজধানী বানানো হয়।

তিউনিস শহরটি দুই ভাগে বিভক্ত। শহরের কেন্দ্রের প্রাচীন প্রাচীরবেষ্টিত মুসলমান-অধ্যুষিত এলাকাটির নাম তিউনিসের মদিনা; এটি একটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান। পুরাতন শহরের রাস্তাগুলি সংকীর্ণ এবং আঁকাবাঁকা। এখানে জমকালো মসজিদ আছে। মদিনার পূর্ব পাশ থেকে সমুদ্রদ্বার অতিক্রম করলে শুরু হয় আধুনিক বা ইউরোপীয় তিউনিস শহর, যাকে ভিল নুভেল নামেও ডাকা হয়। নতুন তিউনিসের ভেতর দিয়ে চলে গেছে বিশাল হাবিব বুরগিবা রাজপথ বা অ্যাভিনিউ। এই রাজপথের উপরে ফরাসি ঔপনিবেশিক আমলের অনেক ভবন অবস্থিত, যেগুলি প্রাচীন ক্ষুদ্রতর স্থাপনাগুলির থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। কৃষিকাজ এখানকার অর্থনৈতিক উপার্জনের মূল উৎস। এখানে মূলত জলপাই ও খাদ্যশস্য উৎপাদন করা হয়, খেজুর ও রসালো কমলার জন্য বিখ্যাত। তিউনিসিয়া কয়েকটি মুসলিম প্রধান দেশগুলির মধ্যে একটি, যা আইনগত বহুবিবাহকে নিষিদ্ধ করেছে। সেখানে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পত্তিতেও নারী পুরুষের সমান অধিকার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই ইন দ্য ইউকে’র সাথে ঢাবি ভিসি প্রফেসর ড. এএসএম মাকসুদ কামালের মতবিনিময়
https://52banglatv.com/2024/05/37400/

 


সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন