‘থিঙ্ক গ্লোবালি ; এক্ট লোকালি’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল স্বপ্নিল বহুমুখী বিদ্যালয়। ক্রমে তার-ই বাস্তবায়ন ঘটছে। ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত স্বপ্নিল বহুমুখী বিদ্যালয় ইতিমধ্যে রাষ্ট্রীয় সীমানা অতিক্রম করে আন্তর্জাতিক স্তরেও ব্যাপক পরিচিতি ও প্রশংসা লাভ করতে সক্ষম হচ্ছে। দেশ-বিদেশের লব্ধপ্রতিষ্ঠিত গুণীজন বিভিন্ন উপলক্ষ্যে স্বপ্নিল বহুমুখী বিদ্যালয়ে পদার্পণ করে প্রশংসায় ভাসিয়ে দিচ্ছেন স্বপ্নিল বহুমুখী বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীসহ কর্তৃপক্ষকে। একটি গ্রামীণ পরিবেশে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হলেও প্রতিষ্ঠানটির ছাত্রছাত্রী, শিক্ষকমণ্ডলী তথা স্কুল কর্তৃপক্ষের আতিতেয়তা, শীষ্টাচার, পরিচ্ছন্নতা, গুণীজনদের সম্মান করার পরম্পরা, শিক্ষানুরাগ ইত্যাদি দেখে মুগ্ধ বলে জানালেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন স্থপতি, নাট্যকার, চলচ্চিত্র নির্মাতা, বহুগ্রন্থের প্রণেতা ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক শাকুর মজিদ।
দীর্ঘ দিনের পরম্পরা অনুযায়ী আজ স্বপ্নিল বহুমুখী বিদ্যালয়ের প্রেক্ষাগৃহে ২০১৮ সালের ‘আজিজুর রহমান চৌধুরি স্মারক সম্মাননা’ প্রদান করা হয় বাংলাদেশের খ্যাতনামা লেখক, বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত শাকুর মজিদকে। তাঁর প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তিনি তাঁর ছাত্র জীবনের বিভিন্ন ঘটনার কথা উল্লেখ করে উপস্থিত পড়ুয়াদের জ্ঞানান্বেষণে আরও যত্নবান হওয়ার উপদেশ দেন।
তিনি ক-মান থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের প্রস্তুতিকাল বলে উল্লেখ করেন। দ্বাদশ শ্রেণি পাশ করার পর প্রত্যেকেই বিষয়ভিত্তিক পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। প্রকৃত পড়াশুনা দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত-ই অর্জন করা হয়। উপস্থিত ছাত্রছাত্রীদের বিশ্ববীক্ষা, আধুনিক প্রযুক্তির সুফল ও কুফল নিয়েও প্রাঞ্জল ভাষায় বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
তিনি জানান, বিয়ানিবাজারের এক প্রান্তিক জনপদ থেকে কীভাবে সপ্তম শ্রেণিতে চট্টগ্রামের ক্যাডেট স্কুলে গিয়ে পাঠগ্রহণ করে আজ এই অবস্থানে পৌঁছেছেন। শাকুর মজিদ উপস্থিত ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেও বিশ্বজনীনতার ছাপ আছে বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, এই প্রান্তিক অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত স্বপ্নিল বহুমুখী বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মধ্য থেকেও বিশ্বনাগরিক হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে। তিনি শিক্ষক মণ্ডলীসহ অভিভাবকদের পড়ুয়াদের প্রতি আরও যত্নশীল হওয়ার পরামর্শ দেন। আজিজুর রহমান চৌধুরি স্মারক সম্মাননার জন্য তাঁকে মনোনীত করায় সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন তিনি।
দৈনিক নববার্তা প্রসঙ্গ পত্রিকার সম্পাদক তথা স্কুল পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান হবিবুর রহমান চৌধুরির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রাসঙ্গিক বক্তব্য পেশ করেন বাংলাদেশ হাইকোর্টের স্বনামধন্য আইনজীবি আব্দুল হাসিব। তিনি তাঁর বক্তব্যে করিমগঞ্জের সঙ্গে তাঁদের নাড়ীর সম্পর্ক বলে উল্লেখ করেন।
স্বাগত বক্তব্য পেশ করেন স্বপ্নিল গ্রুপ অব ইনস্টিটিউশন্স-এর প্রতিষ্ঠাতা ড. মুজিবুর রহমান চৌধুরি। তিনি তাঁর বক্তব্যে তাঁর পিতা বিশিষ্ট শিক্ষক-রাজনীতিক-সমাজসেবী প্রয়াত আলহাজ্ব আজিজুর রহমান চৌধুরির উজ্জ্বল স্মৃতিতে এই সম্মাননা প্রদান বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত সুলেখক, নাট্যকার, চলচ্চিত্র নির্মাতা, স্থপতি শাকুর মজিদ-এর মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন একজন ব্যক্তিত্বকে তাঁর পিতার নামাঙ্কিত সম্মাননা প্রদান করে তাঁর পরিবার গৌরবান্বিত বোধ করছে। অতীতেও বিভিন্ন খ্যাতনামা ব্যক্তিবর্গকে সম্মাননা প্রদান করার কথা তিনি উল্লেখ করেন।
শাকুর মজিদের হাতে ফুলের তোড়া, ফুলম গামছা, কাশ্মীরি শাল, ক্রেস্টসহ উপহার সামগ্রী তুলে দেন যথাক্রমে মওলানা আব্দুল বাসিত, তাজ উদ্দিন, হবিবুর রহমান চৌধুরি ও মুজিবুর রহমান চৌধুরি। শাকুর মজিদ তাঁর রচিত ট্রিলজি ‘ছাত্রকাল’ গ্রন্থটি প্রতিষ্ঠাতা ড. মুজিবুর রহমান চৌধুরির হাতে তুলে দেন স্বপ্নিল বহুমুখী বিদ্যালয়ের লাইব্রেরির জন্য। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন শিক্ষক তাজ উদ্দিন।