শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
https://blu-ray.world/ download movies
Sex Cams
সর্বশেষ সংবাদ
টাওয়ার হ্যামলেটসের বো এলাকায় নতুন কাউন্সিল ভবনের উদ্বোধন করেছেন নির্বাহী মেয়র লুৎফুর  » «   বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকের প্রাণহানি এবং সৃষ্ট অস্থিরতা-সহিংসতায় লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের ক্ষোভ-নিন্দা  » «   সৃজনের আলোয় মুস্তাফিজ শফি, লন্ডনে বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা  » «   বৃটেনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তাহমিনার অসাধারণ সাফল্য  » «   দুই বঙ্গকন্যা ব্রিটিশ মন্ত্রীসভায় স্থান পাওয়ায় বঙ্গবন্ধু লেখক এবং সাংবাদিক ফোরামের আনন্দ সভা ও মিষ্টি বিতরণ  » «   কেয়ার হোমের লাইসেন্স বাতিলের বিরুদ্ধে আইনী লড়াইয়ে ল’ম্যাটিক সলিসিটর্সের সাফল্য  » «   যুক্তরাজ্যে আবারও চার ব্রিটিশ-বাংলাদেশী  পার্লামেন্টে  » «   আমি লুলা গাঙ্গ : আমার আর্তনাদ কেউ  কী শুনবেন?  » «   বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে লন্ডনে ইউনিভার্সেল ভয়েস ফর হিউম্যান রাইটসের সেমিনার অনুষ্ঠিত  » «   লন্ডনে বাংলা কবিতা উৎসব ৭ জুলাই  » «   হ্যাকনি সাউথ ও শর্ডিচ আসনে এমপি প্রার্থী শাহেদ হোসাইন  » «   ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই ইন দ্য ইউকে’র সাথে ঢাবি ভিসি প্রফেসর ড. এএসএম মাকসুদ কামালের মতবিনিময়  » «   মানুষের মৃত্যূ -পূর্ববর্তী শেষ দিনগুলোর প্রস্তুতি যেমন হওয়া উচিত  » «   ব্যারিস্টার সায়েফ উদ্দিন খালেদ টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নতুন স্পীকার নির্বাচিত  » «   কানাডায় সিলেটের  কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলমকে সংবর্ধনা ও আশার আলো  » «  
সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন

‘সবাই বাবার সঙ্গে স্কুলে যায়, আমিই শুধু পারি না’



সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

‘সবাই সবার বাবার সঙ্গে স্কুলে যায়। আমিই শুধু যেতে পারি না। আমি কী আমার বাবার সঙ্গে স্কুলে যেতে পারবো? আমার কি দোষ যে আমি আমার বাবার সঙ্গে স্কুলে যেতে পারবো না! প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ আমার বাবাকে ফিরিয়ে দিন। বাবাকে ছাড়া আমার ভালো লাগে না।’

আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) রাজধানীর শাহবাগ জাদুঘরের সামনে গুম হওয়া স্বজনদের সংগঠন ‘মায়ের ডাক’ আয়োজিত এক মানববন্ধনে এভাবে কথাগুলো বলছিল ২০১৩ সালে ‘গুম’ হওয়া পারভেজ হোসেনের ১১ বছরের আদিবা ইসলাম।

শুধু আদিবা নয়, মানববন্ধনে ‘গুমের শিকার’ শতাধিক ব্যক্তির স্বজন অংশ নেন। তাদের কারও বুকে সন্তানের, কারও বুকে বাবার, কারও বুকে স্বামীর, আবার কারও বুকে ভাইয়ের ছবি ঝুলছিল। স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে সেখানকার পরিবেশ। উপস্থিত সবাই প্রধামন্ত্রীর কাছে তাদের স্বজনদের ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান। এসময় মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও।

জানা যায়, আদিবার বাবা পারভেজ হোসেন বংশাল থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আদিবার মায়ের দাবি, তার স্বামীকে ২০১৩ সালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে তুলে নেওয়ার পর গুম করা হয়।

বাবার কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন আদিবা। কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলে, আমার বাবাকে ছাড়া আমার ভালো লাগে না। আমার বাবাকে ফিরিয়ে দিন। আমি বাবার সঙ্গে স্কুলে যেতে চাই। বাবাকে ছাড়া আমার একটুও ভালো লাগে না।

মানববন্ধনে ১০ বছরের শিশু সাদিকা সরকার সাফার মায়ের দাবি, ২০১৩ সালে তার স্বামী মো. সোহেলকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে যাওয়ার পর এখনো তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। মো. সোহেল বংশাল থানা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ছিলেন।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাদিকা বলেন, আমার বাবাকে ফিরিয়ে দিন। বন্ধুদের সবার বাবা আছে। বাবাকে নিয়ে তারা স্কুলে যায়। শুধু আমিই বাবার কাছে যেতে পারি না। তখন আমার খুব কষ্ট লাগে।

কিশোরী তামান্না ইসলাম বলে, আমার বাবা ইসমাইল হোসেন বাতেন ২০১৯ সালে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) হাতে আটক হন। আমাদের স’মিল থেকে বাসার উদ্দেশ্যে আসার পথে বাবাকে গুম করা হয়। সেদিনই আমরা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু র‌্যাবের বিরুদ্ধে জিডি নেয়নি পুলিশ। পরে আমরা একটি লিখিত অভিযোগ করেছিলাম।

তামান্না বলেন, এরপর আমরা র‌্যাব হেডকোয়ার্টার, পুলিশ, ডিবি, ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয় এবং মানবাধিকার কমিশন এমন কোনো জায়গা নেই যে যেখানে যায়নি। কিন্তু আজ পর্যন্ত বাবার কোনো সন্ধান পাইনি। দিনের পর দিন আমি আমার বাবার ছবি হাতে দাঁড়িয়ে এসেছি। এসব কথা বলতে গিয়ে কান্নায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে তামান্না।

আক্ষেপ করে তামান্না বলে, আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে বারবার আবেদন করেছি, বাবাকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দিন। কিন্তু আজ পর্যন্ত আমার বাবার কোনো সন্ধান পাইনি। আমি বাবার সন্ধান চাই।

বিএনপি নেতা চৌধুরী আলমের ছোট ভাই খুরশীদ আলমও মানববন্ধনে অংশ নেন। তিনি বলেন, ২০১০ সালের ২৫ জুন ইন্দিরা রোড থেকে আমার বড় ভাইকে সাদা পোশাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই থেকে তার খোঁজ নেই। সরকারকে বলছি, আপনি যদি আমার ভাইকে মেরে ফেলেন, তাহলে এক মুষ্টি মাটি দেওয়ার জন্য মরদেহটা ফেরত দেন। আর বিচার চাইবো না। আর কোনো দাবিও নেই। শুধু ভাইয়ের মরদেহটা চাই।

মানববন্ধনে আরেক ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্য বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ। প্রতিটি নাগরিকের সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার আছে। আমরা চাই, একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক। যেখানে গুম হওয়া ব্যক্তিদের ব্যাপারে পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য থাকবে। তাদের কোথায় নেওয়া হয়েছে, কে নিয়ে গেছে এবং বর্তমানে তারা কী অবস্থায় আছে সেটি আমরা জানতে চাই। আমরা সরকারের কাছে সুস্পষ্ট বক্তব্য চাই। আমরা আমাদের স্বজনদের ফিরত চাই।

বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল বলেন, আমাদের একটাই প্রশ্ন, আমাদের পরিবারের সদস্যরা কই? আমার পরিবারের সদস্যরা কোথায় আছে এটির উত্তর অবশ্যই বর্তমান সরকারকে দিতে হবে। দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক মহল থেকে বারবার গুম-খুনের সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করা হচ্ছে। তদন্তসাপেক্ষে যেটা সত্য সেটা আমরা সবাই মেনে নেবো। কিন্তু যখন বারবার অস্বীকার করা হচ্ছে বুঝা যায় এর সঙ্গে সরকার জড়িত। সেইদিন খুব বেশি দূরে নয় যেদিন আমরা ন্যায় বিচার পাবো।

এসময় সংহতি জানিয়ে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুরসহ অনেকে বক্তব্য দেন।

জাগো নিউজের সৌজন্যে


সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন