­
­
শনিবার, ৩ মে ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ২০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
দেশে ফিরছেন জোবাইদা রহমান : ৪ ধরনের নিরাপত্তা চেয়ে আইজিপিকে চিঠি  » «   ভারত-পাকিস্তান : প্রকাশ্যে যুদ্ধংদেহি, আড়ালে বিশাল বাণিজ্য  » «   বন্ধ হয়ে গেল নভোএয়ারের ফ্লাইট, কোম্পানি বলছে ‘সাময়িক’  » «   পাল্টাপাল্টি বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞায় কী প্রভাব পড়বে বাংলাদেশ–ভারতে  » «   কাশ্মীর হামলা: কেমন হতে পারে ভারতের জবাব, ইতিহাস কী বলে?  » «   মানবিক করিডর আসলে কী, বিশ্বের আর কোথায় আছে, কতটা কার্যকর?  » «   বিএনপি না জামায়াত কোন দিকে ঝুঁকছে ইসলামপন্থি দলগুলো?  » «   সুইডেনে অতর্কিত বন্দুক হামলায় নিহত ৩  » «   ইতালিতে বর্ণাঢ্য বৈশাখী উৎসব বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যাণ পরিষদের  » «   ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রফতানিতে চমক: চীনের ঘাটতি পূরণ করছে বাংলাদেশ  » «   কানাডায় লিবারেলদের জয়, কী কারণ  » «   রাখাইনের জন্য করিডর বাংলাদেশের জন্য কী ঝুঁকি তৈরি করতে পারে?  » «   ইউরোপ ৪ দেশ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন!  » «   ডলারের বিপরীতে টাকার মান বৃদ্ধি  » «   বিশ্বে সামরিক ব্যয় রেকর্ড বেড়ে ২.৭ ট্রিলিয়ন ডলার  » «  

প্রসঙ্গ : পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন ও ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ দলগুলোর ভূমিকা



পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন দোরগড়ায়। আগামী মার্চ-এপ্রিলে অনুষ্ঠিত হবে বিধানসভা নির্বাচন। ফলে, সুযোগ বুঝে সুবিধাবাদীদের কেউ কেউ জার্সি বদল করে নিচ্ছেন! রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল থেকে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপিতে ভীড়ছেন কেউ কেউ। ২০১৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের প্রাককালে যে-রকম অসমে হয়েছিল। অসমে অবশ্য অন্য কারণ ছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, তৃণমূল কংগ্রেসকে পর্যুদস্ত করতে বিজেপির দোসর হয়েছে কমিউনিস্ট ও কংগ্রেসের মতো তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলোও! ইতিপূর্বে বামপন্থী নেতা সীতারাম ইয়েচুরি ও কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরির বিভিন্ন বক্তব্যে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল-ই যে তাঁদের প্রধান শত্রু, তা স্পষ্ট হয়ে গেছে। অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গে তুলনামূলক দুর্বল শত্রু তৃণমূলকে পর্যুদস্ত করে বিজেপিকে ক্ষমতায় নিয়ে আসা! তারপর ‘গেল গেল’ রব তুলে বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা কতটুকু সফল হবে, তা সময়-ই বলবে। তবে, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল-এর বিরাট ক্ষতি করার মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে কংগ্রেস ও কমিউনিস্ট দলগুলো যে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলকে ‘অপবাদ’ দেয়া হবে, তথাকথিত ‘মুসলিম তোষণ’-এর! এটাই বিজেপির প্রধান ‘অভিযোগ’!  পাশাপাশি, কংগ্রেস ও কমিউনিস্টদের কোমল হিন্দুত্বের রসায়ন তৃণমূলকে কিছুটা হলেও ব্যাকফুটে নিয়ে যাবে। কংগ্রেস পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন ছিল। বামফ্রন্টও ছিল ক্ষমতাসীন। লাগাতার ৩৪ বছর পশ্চিমবঙ্গে শাসন করেও বামফ্রন্ট নিজেদের রাশ ধরে রাখতে পারেনি। বামপন্থীদের মধ্যে কট্টর ধর্মান্ধ ছিলেন না বটে। তবে প্রবল আধিপত্যবাদী মানসিকতা ছিল। জনগণ বামফ্রন্টের শাসনকালে শেষ দিকে শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে ছিলেন। বামফ্রন্টের দীর্ঘ সাড়ে তিন দশকের শাসনকালে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ছিল প্রায় ব্রাত্য! সরকারি চাকরি, জনপ্রতিনিধিত্ব থেকে শুরু করে সর্বত্র ছিল চোরাস্রোত। ব্রাহ্মণ্যবাদী মানসিকতা। ‘আমরা’ এবং ‘ওরা’র বিভাজন। দীর্ঘ ৩৪ বছরে রাজ্যের ত্রিশ শতাংশের অধিক সংখ্যালঘু জনগণকে কোণঠাসা করে রেখেছিল বামফ্রন্ট সরকার। এক পর্যায়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেসকে ‘বিকল্প’ হিসেবে গ্রহণ করতে তাই দ্বিধাবোধ করেননি পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনগোষ্ঠী। দু হাত ভরে ভোট দিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থীদের অনুকূলে। জাতপাত বিচার করেননি তাঁরা। কমিউনিস্টরা স্বার্থান্ধ! দলীয় ক্যাডারদের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে বামফ্রন্টের ভরাডুবি ঘটেছিল। আমজনতা বামফ্রন্ট সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। কংগ্রেস সব দিন-ই কোমল হিন্দুত্বে বিশ্বাসী। জনসমক্ষে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’-র অভিনয় করে থাকে। ফলে, আসন্ন নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসকে ‘পরাজিত’ করার লক্ষ্যে আপাতবিরোধী শক্তিগুলো যে যার মতো করে একটা ‘ঐক্যমত’- এ পৌঁছবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। জনগণের স্বার্থে উপর্যুক্ত রাজনৈতিক দলগুলো যে বিজেপিকে প্রতিহত করতে চায় না, তা জনগণের একটি বড়ো অংশ ভালো করেই জানেন। দলগুলো বিভিন্ন নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে শুধু নির্বাচনে তাদের ভোটের শতাংশ অটুট রাখার লক্ষ্যে। বিজেপিকে প্রতিহত করা উপর্যুক্ত দলগুলোর উদ্দেশ্য থাকলে বিজেপিবিরোধী অভিন্ন কার্যসূচি গ্রহণ করত।

২৯ নভেম্বর,২০২০

লেখক: কবি,গবেষক ও শিক্ষাবিদ । প্রকাশক, দৈনিক নববার্তা প্রসঙ্গ। করিমগঞ্জ। অসম।

আরও পড়ুন:

 

 

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

"এই বিভাগে প্রকাশিত মতামত ও লেখার দায় লেখকের একান্তই নিজস্ব " -সম্পাদক

সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন