ফ্রান্সের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় এক মসজিদে বন্দুক হামলা হয়েছে। স্থানীয় সময় সোমবার বিকেলে বেয়োন্নে এলাকায় সংঘটিত হামলায় আহত দুই ব্যক্তিকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় সন্দেহভাজন হামলাকারী হিসেবে ৮৪ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে আটক করেছে ফরাসী পুলিশ। দক্ষিণ-পশ্চিম শহর বায়োন্নে একটি মসজিদের বাইরে গুলি চালানোর অভিযোগে এ প্রবীণ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আটক ব্যক্তি ডানপন্থী প্রার্থী হিসেবে স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন বলে জানা যায় ।
২০১৫ সালে ব্যাঙ্গাত্মক ম্যাগাজিন শার্লে হেব্দোতে উগ্র ইসলামপন্থী হামলায় ১২ জন নিহত হওয়ার পর ফ্রান্সে মসজিদকে একাধিকবার লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে। আগুন, গ্রেনেড কিংবা বন্দুক হামলার শিকার হয়েছে বেশকিছু মসজিদ।সোমবারের হামলা প্রসঙ্গে ফ্রান্সের পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারী ব্যক্তি মসজিদের দরজায় আগুন দেওয়ার চেষ্টা করে। তখন তাকে থামানোর চেষ্টা করলে গুলিবর্ষণ শুরু করে।
পুলিশের দাবি, পালানোর আগে ওই ব্যক্তি একটি গাড়িতে আগুন দেয়। পরে দশ মাইল দূরে তার বাড়ির কাছ থেকে তাকে আটক করা হয়। আহত দুই ব্যক্তির বয়সই ৭০ বছরের বেশি। তারা মসজিদে আসা মুসলিম বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সন্দেহভাজন হামলাকারী ২০১৫ সালে লান্দিসের একটি স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। দক্ষিণপন্থী দল মেরিন লা পেন-এর হয়ে প্রথম রাউন্ডে ১৮ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। পরে এই দলটি ন্যাশনাল র্যালি নামে আত্মপ্রকাশ করে।
ন্যাশনাল র্যালির নেতা নিকোলাস বে একটি টিভি চ্যানেলকে ওই ব্যক্তির প্রার্থী হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন। তবে তিনি জানান, দলের মতাদর্শ পছন্দ না হওয়ায় পরে ওই ব্যক্তি দল ছেড়ে যায়। নিকোলাস বে বলেন, সে একজন উগ্রবাদী যার স্থান আমাদের দলে নেই। সে দল ছেড়ে গেছে।
এ দিকে ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টোফ কাস্টানার তাঁর টুইটারে বার্তা দিযেছেন, সন্দেহভাজন আক্রমণকারীকে জাতীয় পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে ।আক্রমণের শিকার ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন তিনি।
ইতিমধ্যে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রোন এই মসজিদে হামলাটিকে “উদ্ভট” হামলা বলে বর্ণনা করেছেন এবং তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।’প্রজাতন্ত্র কখনই বিদ্বেষ সহ্য করবে না,’ তিনি বলেছনে।এরকমরে অপরাধ কিংবা ঘৃণা ছড়ানোকে রাষ্ট্র কোনভাবেই সগহ্য করবে না বলে তিনি উল্লেখ করেন।’ফ্রান্সে বসবাসরত ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসীদের সুরক্ষা দেয়ার জন্য সবকিছু করা হবে বলে তিনি তাঁর বিবৃতিতে প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রোন।