শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
https://blu-ray.world/ download movies
Sex Cams
সর্বশেষ সংবাদ
লন্ডনে বিসিএ এ্যাওয়ার্ডস ২৮ অক্টোবর থাকছে নানা চমকপ্রদ আয়োজন  » «   বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৩২নং বাসভবন ভস্মীভূত এবং ভাস্কর্য ভাংচুরের নিন্দা ও প্রতিবাদ  » «    অদ্ভুত দেশপ্রেম ও খাঁটি ব্যক্তিগত স্বার্থ  » «   বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরাবারে বঙ্গবন্ধু লেখক সাংবাদিক ফোরামের স্মারকলিপি প্রদান  » «   দাম দিয়ে কিনেছি বাংলা কারো দানে পাওয়া নয়  » «   টাওয়ার হ্যামলেটসের বো এলাকায় নতুন কাউন্সিল ভবনের উদ্বোধন করেছেন নির্বাহী মেয়র লুৎফুর  » «   বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকের প্রাণহানি এবং সৃষ্ট অস্থিরতা-সহিংসতায় লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের ক্ষোভ-নিন্দা  » «   সৃজনের আলোয় মুস্তাফিজ শফি, লন্ডনে বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা  » «   বৃটেনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তাহমিনার অসাধারণ সাফল্য  » «   দুই বঙ্গকন্যা ব্রিটিশ মন্ত্রীসভায় স্থান পাওয়ায় বঙ্গবন্ধু লেখক এবং সাংবাদিক ফোরামের আনন্দ সভা ও মিষ্টি বিতরণ  » «   কেয়ার হোমের লাইসেন্স বাতিলের বিরুদ্ধে আইনী লড়াইয়ে ল’ম্যাটিক সলিসিটর্সের সাফল্য  » «   যুক্তরাজ্যে আবারও চার ব্রিটিশ-বাংলাদেশী  পার্লামেন্টে  » «   আমি লুলা গাঙ্গ : আমার আর্তনাদ কেউ  কী শুনবেন?  » «   বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে লন্ডনে ইউনিভার্সেল ভয়েস ফর হিউম্যান রাইটসের সেমিনার অনুষ্ঠিত  » «   লন্ডনে বাংলা কবিতা উৎসব ৭ জুলাই  » «  
সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন

বিয়ানীবাজার-লন্ডন থেকে আমেরিকা: পরিবারের বিস্ময়কর পুনর্মিলনের গল্প
সারওয়ার হোসেন (ইনু)



সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

 

সারওয়ার হোসেন(ইনু)

ছোটবলা থেকেই জানতাম আমার দু ভাই আমেরিকাতে থাকে, কিন্তু তাদের সাথে আমার প্রত্যক্ষ কোন যোগাযোগ ছিল না।বাবা জীবিত থাকা অবস্থায় তাঁদের সাথে চিটির মাধ্যমে সাথে যোগাযোগ হত।আর ইংরেজীতে পত্র লেখানো সে যোগে খুব দুরুহ ছিল।বাবা ইংরেজীতে কথা বলতে পারলেও লিখতে মোটেই জানতেন না।সে সময় আমাদের বিয়ানীবাজারে ইংরেজীতে কোন দরখাস্ত ,ফর্ম ফিলাপ এবং চিটি লিখা মানুষের সংখ্যা খুব নগন্যই ছিল।আমার জানামতে দুজন লোক এ বিষয়ে সচরাচর বাবাকে সাহায্য করতেন।তাদের একজন হলেন মরহুম ইংলিশ খালিক।আর আরেকজন হলেন মরহুম মাষ্টার মুজম্মিল আলী।যিনি পরে বিয়ানীবাজারের উপজেলা চেয়ারম্যান হয়েছিলেন।আমি কৃতজ্ঞচিত্তে তাদের স্মরণ করছি, যারা ইংরেজীতে কিছু লিখতে সেসময় আমাদের পরিবারকে যথেষ্টসেহযোগিতা করেছিলেন।দুজনই এখন প্রয়াত। আমি আমার ও আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে এই দুজন শ্রদ্ধেয় মানুষের জন্য দোয়া করছি, আল্লাহ যেন উনাদেরকে বেহেশ্তের সর্বোচ্চ মর্যাদা জান্নাতুল ফেরদাউস দান করেন।

 

 

বাবার কথা লিখা হয়ে যাচ্ছে বেশী, তবুও তা-ইতো আমাকে রিখতে হবে । কারন বাবার মাধ্যমেই যুক্তরাষ্ট্রের সাথে এই রক্তের সম্পর্ক, সম্পর্ক আমার আমাদের পরিবারের আত্নার।স্বাধীনতার পুর্বে বাবা দেশে আসতে চেয়েছিলেন কিন্তু সশস্ত্র যুদ্ধ শুরু হওয়ায় তখন আর বাবার দেশে আসা হয়নি।সে সময় আমি এবং আমার তিন বোনেরা বাবাকে খুব মিস করতাম।আমার ছোট বোন তখন পর্যন্ত বাবাকে কোনদিন দেখেনি তাই ফুল পেন্ট পরা কাউকে দেখলেই বাবার অবযব তার কাছে ফুটে উঠত। কারন তখন ফুল পেন্ট পরা লোক গ্রামাঞ্চলে খুব কম দেখা যেত।বাবার অনুপস্থিতে যুদ্ধের সময় মা আমাদের সারাক্ষন আগলিয়ে রাখতেন।

একমাত্র বড় বোন সুনিয়া আপা ছাড়া আমাদের বাকী তিনজনের কাছে যুদ্ধ ছিল একটি রোমাঞ্চ।এর ভয়াবহতা সম্পর্কে আমাদের কোন ধারনা ছিল না।এ সময় তৎকালীন মুড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মরহুম কুতুব উদ্দীন চাচা আমাদেরকে অনেক সহযোগীতা করেছেন।এ লেখায় তাঁকে স্মরন করছি এবং দোয়া করছি তিনি যেন পরকালে শান্তিতে থাকেন।তিনি আমাদেরকে নিজের আপন ভাতিজা ভাতিজীর মত স্নেহ করতেন।যুদ্ধকালীন সময়ে অবশ্য মা বেশীদিন আমাদের নিয়ে বাড়ীতে অবস্থান করেন নি।মা আমাদের নিয়ে তাঁর এক চাচা ফৈয়াজ উদ্দীন নানার বাডী বাউরবাগে চলে যান।সেখানে ফৈয়াজ নানা, জিয়া উদ্দীন নানা,আসাব নানা এবং মামা ও খালারা আমাদের খুব আদর যত্ন করেন।আমার মা ছিলেন উনাদের চাচাতো ভাই বোনদের মধ্যে সবার বড়।উনাকে সবাই ‘মায়া বুয়াই’ বলে ডাকতেন।দোয়া করি আল্লাহ যেন নানাদের জান্নাতুল ফেরদাউস দান করেন।যুদ্ধের শেষের দিকে ফৈয়াজ নানার ঘরে ‘পান্জাবী’রা যখন আগুন লাগিয়েছিল তখন আমাদের শিশু মনে ভয়ংকরতা যেন ছাপ ফেলে নি, বরং আগুনের মাঝে আনন্দ দেখেছিলাম।দেশ মাতৃকার লড়াইয়ে আমাদের হেলাল মামা ছিলেন মুক্তিযুদ্ধে, আর সেকারনেই পাকসেনাদের দোসররা তাদের বাড়িতে আগুন দিয়েছিল।

 

মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে বাবার অবস্থান ছিল নিউইয়র্কে।সেখানে তিনি আমাদের নিয়ে চিন্তিত থাকলেও বগুড়ার মুহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলনে বেশ সক্রিয় ছিলেন।সেখানে তিনি ও অন্যান্যরা প্লেকার্ড নিয়ে পাকিস্তানের এম্বেসির সামনে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে অনেক সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন।এটা আমি জানতে পারি যখন তিনি স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন তখন আমাকে নিয়ে সেগুন বাগিচা ঢাকায় বাংলাদেশ ফরেন অফিসে তাঁর সাথে দেখা করতে যান।বগুড়ার মুহাম্মদ আলী এক সময় বাংলাদেশের অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট ছিলেন।যিনি আমাদের পরিবারের সকলকে একটি হোটেলে দাওয়াত দিয়ে খাইয়েছিলেন।

বাবা মারা যাবার পুর্বে উনার বড় ছেলে জুনাব আলীর মেয়ে সেলিনা আলী একটি পত্র দিয়ে আমন্ত্রণ জানায় ওর গ্র্যাজুয়েশন পার্টিতে অংশ নেবার জন্য। বাবার বয়স অনেক, তাই আমরা তাঁকে যেতে বারণ করেছিলাম।উনার একগুয়েমির কারনে শেষ পর্যন্ত আমি এবং আমাদের গ্রামের মইনুল ভাই (আব্দুল্লাহ) বাবাকে মতিঝিলের আমেরিকান এম্বেসিতে নিয়ে যাই।এ্যম্বেসী বাবার সব কিছু দেখে বললো ‘তোমার ভিসা দেয়া যাবে না কারন গ্রীণকার্ড এক্সপায়ার হয়ে গেছে’।একসময় বাবা তাঁর আমেরিকার জীবনের কাহিনী ও বড় ছেলে জুনাব আলীর ‘ফ্লাইং কার্ড’ দেখালে তাঁকে আপাতত ভিজিট ভিসা দেয়। তারপর  তিনি তাঁর বড় ছেলের বাসা সানএন্টনিউ টেক্সাসের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন এবং সেখানে ও তাঁর ছোট ছেলে নিস্ফর আলীর বাসা মিশিগানে অবস্থান করেন।এরই মধ্যে তাঁর বড় ছেলে তাঁকে স্থায়ীভাবে আমেরিকায় রাখার জন্য আম্মার কাছে একটি পত্র লিখেন।পত্রে আম্মাকে আমেরিকাতে নিয়ে যাবার প্রস্থাব, বাড়ী কিনে দেবার আশ্বাস দেয়া হয়।সাথে আমাকে একটি ইউনিভার্সিটিতে এডমিশনের জন্য ফর্ম পাঠান।আমি তখন এমসি কলেজের ছাত্র এবং সিলেটে উপশহরে আমাদের বাসায় থাকি।আমি ভাইয়ের পত্রের জবাব কাকে দিয়ে লিখাবো এ চিন্তায় আছি।বিকালে আমার সহপাঠি মতিন ও লুৎফুরকে নিয়ে বাসায় বসে গল্প করছি হঠাৎ বাবা আমাদের না জানিয়ে সিলেট এয়ারপোর্ট থেকে একটি টেক্সি নিয়ে বাসার সামনে হাজির।এটা ১৯৮৭ সালের শেষের দিক।বল্লেন ছেলেরা আমাকে রাখার জন্য অনেক চেষ্টা করেছে কিন্তু আমি চলে এসেছি।উনি বলতেন আমি আমার দেশের মাটিতে মরতে চাই।

আমেরীকার ছেলেরা পুর্বে একবার ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়ে ছিল আবার হারিয়ে মনের দুঃখে যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন করে ফেলে।তারপর ফেব্রুয়ারী মাস ২৫ তারিখ ১৯৮৮ সালে উনি মারা যাবার পর চিটি দিয়ে জানানোর পর থেকে ওদের সাথে যোগাযোগ প্রায় শেষ হয়ে যায়।

 

এতক্ষন শুধু বাবার গল্পই বললাম।এখন আসি ভাইদের গল্পে।এর মধ্যে অনেক বৎসর অতিবাহিত হয়েছে ভাইদের সাথে কোন যোগাযোগ নাই।তারপর সময় গড়িয়েছে অনেক। আমিও লন্ডনে আবাস গেড়িছি।লন্ডন আমার কর্মক্ষেত্রে কাজ করছি, হঠাৎ আমার এক কলিগ সৈয়দ নাসের বললো তুমি এখানে বসে আছো আর তুমার ভাই তুমাকে বাংলাদেশে খুঁজছে?

তখন বাংলাদেশে ফখর উদ্দীন সাহেবের সরকার।তখন দেশের সংবাদপত্র ও মিডিয়ায় একটি নিউজ ফলাও করে প্রচারিত হচ্ছিল আমারিকার এক সিনেটর তার বংশধরদের খুঁজতে বাংলাদেশের সিলেটের বিয়ানীবাজার পর্যন্ত এসেছেন।আমার কলিগ আমার কাছ থেকে বাবার গল্প শুনেছিল।আমি তখন কলিগকে জিগ্গেশ করলাম সিনেটরের নাম?সে বললো হাসেম ক্লার্ক ।আমি বললাম উনি আমার ভাই নয়।সে থেকেই খুঁজার আগ্রহ বাড়ে এবং গুগলে ভাই জুনাব আলীর নাম লিখতেই ওর নাম প্রথম চলে আসে।উল্লেখ্য ওর অনুরুধে আব্বা আমাদের দিয়ে একটি ফ্যামিলি ট্রি তৈরী করে ছেলের কাছে পাঠিয়েছিলেন।তার গুগল একাউন্টে দেখলাম বাবার ফটো সবার উপরে এবং সেখানে লেখা রয়েছে আলী ফ্যামিলী এলবাম।যোগাযোগ কিভাবে করি তা মাথায় গুরুপাক খাচ্ছে।হঠাৎ মনে হল একটি ফেইসবুক একাউন্ট করলে কেমন হয়?

 

 

তার পর ফেইসবুক একাউন্ট করলাম ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট জুনাবকে পাঠালাম।কিন্তু উনি তা একসেফ্ট করেন না কারন আমার নামের শেষেতো আলী নেই।ম্যাসেনজারে মেসেজ পাঠালাম উনি তা একসেফ্ট করেন না বলেন ‘রং পারসন’।সে সময় আমাদের দেশে বাবার নামের শেষ অংশ সন্তানের নামের শেষে রাখার প্রচলন ছিল না।পরে আমি আমার কাছে রক্ষিত তাদের কিছু পুরোনো ছবি ও সাথে আমাদের বাবার সাথের কিছু ছবি পোষ্ট করলে ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট একসেপ্ট করেন।আমার হারানো ফিরে পাওয়া বড় ভাই জুনাব আলীই আমার প্রথম ফেসবুক ফ্রেন্ড।এর পর উনার মাধ্যমে অন্য ভাই নিসফর আলী(লুইস)ও তার এক ছেলে এবং চার মেয়ের সাথে ফেসবুকের ফ্রেন্ড করে ফেলি।জুনাবের দু ছেলে ও মেয়ের সাথেও বন্ধুত্ব গড়ে উঠে।সাথে দু’ভাবীদের সাথেও পরিচিত হয়ে যাই।

এর পর থেকে ইমেইল এবং ফেইস বুকের মাধ্যমে যোগাযোগ চলতে থাকে।আর্থিক টানা টুনি ও সময়ের অভাবের কারনে তারা আমন্ত্রণ জানানো সত্তেও দেখা করা সম্ভব হয়ে উঠেনি।অবশেষে বড় ভাই তাঁর বড় ছেলে জুনাব আলী (২) কে আমাদের দেখতে লন্ডন পাঠান ২০০৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর।সে তার ওয়াইফ সহ আমাদের বাসায় আসে।সে যে কি আনন্দ, সারাদিন তারা আমাদের সাথে সময় অতিবাহিত করে এবং ওর দাদা সম্পর্কে অনেক তথ্য জেনে নেয়।ভাইদের দেখার আগ্রহ অতৃপ্ত থেকে যায়।উল্যেখ্য ভাতিজা টেকসাসের সেন্টএন্টনিওয়র বিশিষ্ট ব্যবসায়ীর অন্যতম এক ব্যবসায়ী।

 

 

অবশেষে আমি আমার মেয়ে,সোনিয়া আপা ও ভাগনা ইমরান সহ ২০১৮ সালের ২৪ মার্চ সালে ছোট ভাই নিসফর আলীর বাসায় যাই। ভাবীর সাথে তাঁদের একমাত্র ছেলে লুইস(২),ওর বউ ও তিন নাতির সাথে দেখা হয়।চার ভাতিজী কারা,আমিনা,মারিয়া,নাটালী ওদের হাজবেন্ডদের এবং সন্তানদের সাথে দেখা হয়।প্রথমে একটু দুরু দুরু ভাব ছিল যে কিভাবে আমাদেরকে তারা গ্রহণ করে? কিন্তু তারা আমাদের যেভাবে আপ্যায়ন করলো তা ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়।এটি একটি ফ্যামিলী মিলন মেলায় পরিনত হয়েছিল।কিছু খাব কিনা ভাবছিলাম কিন্তু খাবার রুমে দিয়ে দেখি তারা সব হালাল খাবার অর্ডার করে এনেছে।

তারা সবাই আমাকে ও আপাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দিল সবাইকে একত্রে মিলিয়ে দেবার জন্য।এর কয়েকমাস পর ভাই,ভাবী,ভাতিজা,ভাতিজজী বউ ও তিন নাতি আপার ফ্যামিলির সবাইকে দেখতে নিউইয়র্ক নিসফর আলীর বাসায় এসেছিল। কিন্তু বড় ভাই জুনাব আলী ও তার পরিবারকে দেখার অতৃপ্ত বাসনা থেকেই যায়।জুনাবকে বাবা সম্পর্কে জানতে চাইলে ইমেইলে অনেক কিছু জানান।তার মধ্যে আমাদের দাদার পিতার নাম বাসির মাহমুদ ছিল জানতে পারি।জুনাব ভাই এও লিখেন বাবা মারা যাবার প্রথম খবর পান নিউইয়র্ক থেকে ফোনের মাধ্যমে, আমাদের ছোটদেশ গ্রামের মরহুম মিষ্টু খান এর কাছ থেকে ১০/০৩/১৯৮৮ তারিখে।তিনি এও উল্লেখ করেন আমাকে আমেরিকা নেবার ব্যাপারে আরেকটি ফোন পান আমারই এক ভাতিজা (চাচা) বুরহান উদ্দীনের কাছ থেকে ১৯৮৯ সালের ১৩ মার্চ।

বড় ভাই অনেকদিন থেকে ফ্লোরিডায় টেম্পাবেয়ে তাঁর স্ত্রী ও ছোট ছেলে কুরবান আলীকে নিয়ে বসবাস করছেন।এরই মধ্যে তাঁর কাছ থেকে একটি ইমেইল আসে উনি আলী ফ্যামিলির সবাইকে একত্রিত করার জন্য মিশিগানে ফ্যামীলি রিইউনিয়ের আমন্ত্রণ জানান।আমি এ লোভ সামলাতে না পারে বড় বোন সোনিয়া উনার বড় মেয়ে শিউলি নাতনি মিম ও ভাগনা ইমরান তার বউ আয়েশা তার এক মেয়ে এ্যালিনা ও ছেলে আদনান সহ ‘আলী ফ্যামিলী’র এই রিইউনিয়নে আমাদের বোন ডালিয়া সহ প্রায় ৭০/৮০ জন আলী ফ্যামীলির মেম্বারের সাথে পরিচিত হই ২০১৯ সালের ১৭ আগষ্ট।এ মহা খুশিতে সবার চোখে কান্না ধরে রাখার উপায় ছিল না।সবাই আমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দিল মিলিত করার এ উদ্যোগের সূচনার জন্য।সেদিন আলী ফ্যামীলির মিলন মেলার দিন, আমাদের পুনরুজ্জীবিত হবার দিন।

পুনশ্চঃ নিজেকে আজ বেশ হাল্কা মনে হচ্ছে মনের কথাগুলোকে ভাষায় প্রকাশের জন্য।জানিনা কতটুকু সফল হয়েছি।হারিয়ে যাওয়া আপনজনদের ফিরে পাবার আনন্দাশ্রু,  এ পৃথিবীর কজন মানুষ পেয়েছে, আমি জানিনা।কিন্তু সে এক বিস্ময় আমার জন্য। আমার পরিবারের ৭০/ ৮০ জন মানুষের জন্য। এ লেখাতে আমার বড় বোন সোনিয়া আপা আমাকে চাপ দিয়ে লিখিয়েছেন।আমি আরো উৎসাহিত হই যখন দেখি আমার বাংলা লিখাতে ও অন্যের কমেন্টে ভাই ও তাদের ছেলে মেয়ে নাতি নাতিনেরা বাংলা না জানলেও ‘লাইক’ দেয় বাংলা না জানা সত্ত্বেও।


সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন