বিগত প্রায় এক দশকে লন্ডনে প্রবাসী বাংলাদেশী কিছু প্রগতিশীল তকমা লাগানো তারুণ্যকে খুব সিরিয়াস মানবাধিকার কর্মী ও লেখক হয়ে ব্যতিব্যস্ত থাকতে দেখেছে কমিউনিটির সচেতন মহল। বিলেতে বাংলাদেশীদের সাফল্য, সমস্যা কিংবা সম্ভাবনা তাদের লেখার বিষয় ছিলনা। তারা শুধুমাত্র কনসার্ন ছিলেন- বাংলাদেশের ধর্মীয় ইস্যু নিয়ে। সরকারের দুর্নীতি,প্রশাসনে আমলাতন্ত্রের অবাধ বিচরণ, প্রশ্নপ্রত্র ফাঁস, সাগর –রুনি হত্যাকান্ড, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগে প্রকাশ্য দুর্নীতি, সিন্ডিকেট বাণিজ্য এমনকি প্রশাসনে পুকুর চুরি থেকে সাগর চুরি প্রবাদের সংস্করণেও তাদের কলম চলেনি। ওই একটি বিষয় অর্থাৎ ধর্মীয় উসকানীমূলক লেখা ছাড়া। তাদের ভাষায় বাংলাদেশের সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান জঙ্গী, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা জঙ্গী, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠান মানেই দেশ বিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত। বাংলাদেশ ইতিমধ্যে আফগানিস্তান হয়ে গেছে ইত্যাদি। সামাজিক যোগাযোগে এসব নিয়ে রীতিমতো সোচ্চার ক্যাম্পেইন করেছেন কেউ কেউ। অথচ এরাই প্রগতিশীল দলের ছায়া তলে ছিলেন,আছেনও। যদিও আওয়ামীলীগের অনেকে বাংলাদেশ নিয়ে তাদের দ্বি-মুখী আচরণ বিষয়ে কথাও বলেছেন শুনেছি। কিন্ত দমানো যায়নি।
বৃটেনে ডাটা প্রটেকশন আইনের স্বচ্ছ ও কার্যকর ব্যবহারের কারণে আইন বিষয়ে যারা কাজ করেন অথবা যাদের জানা- শোনা আছে কিন্তু এসব বলতে পারেন না প্রকাশ্যে। এসব দূরভিসন্ধি চেতনাধারীরা মূলত বিশেষ স্পর্শকাতর একটি ইস্যুকে সামনে নিয়ে অর্থাৎ বৃটেনে এসাইলাম আবেদন করে স্থায়ি হওয়ার চিন্তা নিয়ে করেছেন। এবং এভাবে তারা তাদের ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ সফলভাবে করেছেন। দেশকে উলঙ্গ করে, মিথ্যার বেসাতি করে তাদের অনেকে দ্রুত বৃটেনে স্থায়ীভাবে থাকার সুযোগ পাওয়ার বিয়ষটি – ইস্ট লন্ডনে নাকি অনেক পুরনো ও বহুল উচ্চারিত। মজার কথা হলো- এসবে এমন অনেকে সহায়তা করেছেন কিন্তু স্থায়ী হওয়ার পর তাদের সাথে ঐসব প্রগতিবাদিদের সুসম্পর্ক থাকেনি বিধায় তাদের মুখ থেকেই নাকি তলের বিড়াল বের হয়েছে সবচেয়ে বেশী!
এইসব অতি দেশ প্রেমিকরা মাতৃভূমিতে যাওয়া তাদের জন্য অনিরাপদ দেখিয়ে স্থায়ি হলেও স্বল্প সময়ের ব্যবধানে পাশ্ববর্তিতে দেশগুলোতে গিয়ে স্বদেশী মেয়ে বিয়ে ও হানিমুন করেছেন। অনেকে বেড়া ডিঙ্গিয়ে দেশে স্বজনদের সাথে থেকে এসে তা বন্ধুদের সাথে গর্ব করে শেয়ার করার গল্পও নাকি আছে অনেক।
তো এই দেশপ্রেম বিলি করে নিজের আখের গোছানোরাই বলতে গেলে সামাজিক যোগাযোগে কোটা বিরোধী আন্দোলন পূর্ব সময় পর্যন্ত সবর ছিল। কোটা আন্দোলন ইস্যুর এই দু:সময়ে বৃটেনের এইসব লেখক, মানবাধিকার কর্মীদের নিখোঁজের বিষয়টি দলের ত্যাগী নেতৃবৃন্দের কাছেও নাকি এখন স্পষ্টভাবে ধরা পড়ছে।
আনোয়ারুল ইসলাম অভি, কবি, সাংবাদিক
লন্ডন, দুই আগস্ট দুই হাজার চব্বিশ