আজ বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে ক্রীড়াজগতের এক ব্যাপক আয়োজন, আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ। এ আয়োজন চলবে ১৪ জুলাই পর্যন্ত। ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের বিভিন্ন ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এ খেলাগুলোতে অংশ নেবে সারা বিশ্বের ক্রিকেট সেরা দেশগুলো। স্বাগতিক ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, অষ্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, সাউথ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ অর্থাৎ বিশ্বের সাড়া জাগানো এই ১০ টিম অংশগ্রহণ করছে বিশ্ব ক্রিকেটের চোখ ধাঁধানো এ আয়োজনে। বোলিংয়ের গতি আর ব্যাটসম্যানের কসরত দেখার জন্য যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন মাঠে যেমন দর্শক গ্যালারি থাকবে কানায় কানায় পূর্ণ আগামী মাসাধিককাল, ঠিক তেমনি সারা বিশ্বের ক্রিকেটপ্রেমী মানুষগুলো বসে থাকবে টিভির পর্দার সামনে। কত মিলিয়ন মানুষ এ খেলা উপভোগ করবে তার হিসাব এখনই দেয়া না গেলেও, এটা বলা যায় ব্রিটেনে বসবাস করা অসংখ্য অভিবাসী, যারা বাংলাদেশ টিমের অন্তত একটা খেলা দেখতে শতাধিক পাউন্ড খরচ করতেও দ্বিধা করছে না।
বার্মিংহামে অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ-ইন্ডিয়ার খেলাটির টিকেট অনেক আগেই সোল্ড আউট হয়ে গেছে। নিউজল্যান্ড-বাংলাদেশের ৫ জুনের খেলাটি অনুষ্ঠিত হবে ওভাল গ্রাউন্ডে, ২৪ হাজার দর্শক গ্যালারিতে ধারণ করার জায়গা আছে সেখানে। এ খেলার মোট টিকেটের ১৬ হাজার শুধু বাংলাদেশি মানুষই কিনে নিয়েছে। এটাই বাংলাদেশের মানুষের আবেগ, পৃথিবীর দেশে দেশে বাংলাদেশকে নিয়ে এই মানুষগুলোই এগিয়ে যায় গর্ব-আকাংখা আর উচ্ছাস সঙ্গে নিয়ে। ক্রিকেটের বিশ্বমঞ্চে সেরা দেশগুলোর মাঝে বাংলাদেশকে সবাই দেখে আসছে গত দুদশকের বেশি সময় থেকেই। আর সেজন্য পৃথিবীর যেখানেই বাংলাদেশের হয়ে খেলে টাইগাররা, সেখানেই আমরা দেখি বাংলাদেশিদের আবেগী উপস্থিতি। বিশাল আকারের বাঘের প্রতিকৃতি (প্লাশ টয়), লালসবুজের পতাকা গায়ে দিয়ে বাঙালিরা জানান দেয় তাদের প্রাণবন্ত উপস্থিতি।
২৮ মে ছিল ভারত আর বাংলাদেশের খেলা, ‘ওয়ার্ম-আপ ম্যাচ’। গ্যালারি কানায় কানায় পূর্ণ ছিল না সেদিন। কিন্তু তবুও বাঙালিরা ছিল। ছিল উদ্যম আনন্দ হিল্লোল। বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয় নিয়েই মাঠে উপস্থিত হয়েছিল তারা। তাদের কোলে বসা ছিল বাঘের প্রতিকৃতি। তরুণীদের উচ্ছাসে মাঠের গ্যালারিতে ছিল বাংলাদেশের মমতা মাখানো চিৎকার। ‘ওয়ার্ম আপ ম্যাচ’কে অনেকেই বলে থাকেন বন্ধুসুলভ গেম। বন্ধুত্বের এই গেম হলেও সবারই চেষ্টা ছিল বন্ধুকে বধ করার। বিজয় ছিনিয়ে আনার চেষ্টার ত্রুটি ছিল না কারও। সেজন্যই ব্যাটিংয়ের নৈপুণ্য দেখেছি আমরা, দেখেছি রান নিতে বদ্ধপরিকর ক্রিকেটারদের। কিন্তু শেষমেষ টাইগাররা ধরাশায়ী হয়েছে, ৩৬০ রানের লক্ষ্যে পৌঁছুতে পারেনি তারা। এ ধাক্কা কাটিয়ে উঠে টাইগাররা বিশ্বমঞ্চে প্রাণপণ লড়বে এই প্রত্যাশায় আমরা তবুও বাঁধছি বুক।