শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
https://blu-ray.world/ download movies
Sex Cams
সর্বশেষ সংবাদ
টাওয়ার হ্যামলেটসের বো এলাকায় নতুন কাউন্সিল ভবনের উদ্বোধন করেছেন নির্বাহী মেয়র লুৎফুর  » «   বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকের প্রাণহানি এবং সৃষ্ট অস্থিরতা-সহিংসতায় লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের ক্ষোভ-নিন্দা  » «   সৃজনের আলোয় মুস্তাফিজ শফি, লন্ডনে বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা  » «   বৃটেনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তাহমিনার অসাধারণ সাফল্য  » «   দুই বঙ্গকন্যা ব্রিটিশ মন্ত্রীসভায় স্থান পাওয়ায় বঙ্গবন্ধু লেখক এবং সাংবাদিক ফোরামের আনন্দ সভা ও মিষ্টি বিতরণ  » «   কেয়ার হোমের লাইসেন্স বাতিলের বিরুদ্ধে আইনী লড়াইয়ে ল’ম্যাটিক সলিসিটর্সের সাফল্য  » «   যুক্তরাজ্যে আবারও চার ব্রিটিশ-বাংলাদেশী  পার্লামেন্টে  » «   আমি লুলা গাঙ্গ : আমার আর্তনাদ কেউ  কী শুনবেন?  » «   বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে লন্ডনে ইউনিভার্সেল ভয়েস ফর হিউম্যান রাইটসের সেমিনার অনুষ্ঠিত  » «   লন্ডনে বাংলা কবিতা উৎসব ৭ জুলাই  » «   হ্যাকনি সাউথ ও শর্ডিচ আসনে এমপি প্রার্থী শাহেদ হোসাইন  » «   ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই ইন দ্য ইউকে’র সাথে ঢাবি ভিসি প্রফেসর ড. এএসএম মাকসুদ কামালের মতবিনিময়  » «   মানুষের মৃত্যূ -পূর্ববর্তী শেষ দিনগুলোর প্রস্তুতি যেমন হওয়া উচিত  » «   ব্যারিস্টার সায়েফ উদ্দিন খালেদ টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নতুন স্পীকার নির্বাচিত  » «   কানাডায় সিলেটের  কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলমকে সংবর্ধনা ও আশার আলো  » «  
সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন

যোদ্ধা-বীরাঙ্গণা হীরামনি সাঁওতাল



সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

যে যুদ্ধ করে আর যে যুদ্ধের বয়ান তৈরি করে- এই দুয়ের মধ্যে বিস্তর ফারাক। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের অনেক পরের প্রজন্ম, তারা তৈরি করা বয়ান দিয়েই তো যুদ্ধ, যোদ্ধা, ইতিহাসকে চিনেছি। তাহলে এই ফারাকটা ভরাটের পথ কী?

ঠিক এই জায়গাটা থেকেই একসময় ভাবি, যোদ্ধার প্রকৃত বয়ানটাই বোধহয় সেই ফারাকটা ভরাট করে দিতে পারে। একসময় যোদ্ধার বয়ান শোনা শুরু করি। সত্যিকার অর্থেই তখন অন্য এক যুদ্ধকে প্রত্যক্ষ করি যোদ্ধার চোখে। সেই ঘোর আজও কাটেনি।

কিন্তু যোদ্ধাও তো মানুষ, সময়ের ব্যবধানে সেও নিজেকে যে পাল্টে ফেলেনি- তাই বা কে বলবে! তবু আজও মুক্তিযোদ্ধার, বীরাঙ্গণার, শরণার্থীর গল্প শুনি ঠাকুরমার ঝুলির রূপকথার মতো সরলতা, মুগ্ধতা আর শিহরণ নিয়েই।

সেই অচেনা, অজানা, অখ্যাত যোদ্ধা, যারা মুক্তিযুদ্ধকে জনযুদ্ধে রূপ দিয়েছিল, তাদের কিছু কিছু অভিজ্ঞতা এই উত্তাল মার্চের দিনগুলোতে শুনাতে চাই ৫২বাংলায়।

হীরামনি সাঁওতাল

হবিগঞ্জের চানপুর চা বাগানের লোহারপুল বস্তির শ্রমিক লক্ষণ সাঁওতালের সঙ্গে ঠিক কোন সালে বিয়ে হয়েছিল এটা মনে করতে পারেন না হীরামনি সাঁওতাল।তবে তাঁর ভাষ্যমতে, সেটা ‘গণ্ডগোলের’ বছর পাঁচেক আগের ঘটনা। তখন তাঁর বয়স ১৪-১৫।

চা বাগানের নিস্তরঙ্গ জীবনেও ১৯৭১ সালের মে-জুন মাসে যুদ্ধের দামামা বেজে ওঠে।পাকিস্তানি সেনাবাহিনী চা বাগানে এসে ক্যাম্প স্থাপন করে। তারপর থেকেই পাল্টে যেতে থাকে চা বাগানের জীবন।

হীরামনির বাড়িতে যখন খানসেনারা হানা দেয় তখন তিনি ঢেঁকিঘরে ধান ভানছিলেন। তাঁকে সাহায্য করছিলেন কাকাশ্বশুর বিপিন। দুজনেই হতবিহ্বল। দুজনেই কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। খানসেনারা তাদের দিকে বন্দুক তাক করে জিজ্ঞেস করেন, তারা মুক্তিবাহিনী কিনা। হীরামনি ভয়ে ভয়ে উত্তর দেন, বাগান-শ্রমিক।

তারপর হীরামনিকে বন্দুকের নলের মুখে নিজের ঘরে দিকে নিয়ে যায় সেনারা আর কাকাশ্বশুরকে বাড়ির বাইরে। ঘরে আটকে রেখে শুরু হয় নির্যাতন। সেই নির্যাতনের একপর্যায়ে হীরামনি জ্ঞান হারান। তিনি আর কিছুই বলতে পারেন না।

জীবনের শেষ সময়ে এসেও হীরামনি একাত্তরের সেই কথা আর বলতে চাইতেন না। কারণ, স্বাধীনতা হীরামনির জীবনে কোন অর্থ নিয়ে আসেনি বরং তাঁর চিরাচরিত চা শ্রমিকের দারিদ্রক্লিষ্ট জীবনকে আরও জটিল করে দিয়েছিল। যে স্বাধীনতার জন্য তাঁর জীবনটা পাল্টে গেছে, সে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাঁর কোনো খোঁজ রাখেনি, স্বীকৃতিও মেলেনি।

এখন হীরামনি রাষ্ট্র-রাজনীতি-সমাজের সব স্বীকৃতির উর্ধ্বে।

(২০১৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর চানপুর চা বাগানে হীরামনির বাড়িতে নেওয়া সাক্ষাতকার।)


সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন