মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ খ্রীষ্টাব্দ | ১১ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
https://blu-ray.world/ download movies
সর্বশেষ সংবাদ
টরেন্টো বাংলা পাড়া ক্লাবের ১ম ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত  » «   ফুটবলের ব্যাখ্যাতিত নায়ক  » «   বিলেতে হালাল ব্যবসায় হাবিবুর রহমানের সাফল্য  » «   ইউ‌কে বাংলা প্রেসক্লা‌বের দোয়া মাহ‌ফিল  » «   বিয়ানীবাজার ক্যান্সার এন্ড জেনারেল হাসপাতালের ‘মোবাইল ক্লিনিক’ সেবা উদ্বোধন  » «   লণ্ডনে গ্রেটার পাতন এসোসিয়েশন ইউকের বর্ণাঢ্য অভিষেক  » «   সুনামগঞ্জ জেলা ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন ইউকের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন ২০২৩ অনুষ্ঠিত  » «   ইস্টহ্যান্ডস’র আয়োজনে লন্ডনে বাগান প্রেমীদের মিলন মেলা  » «   লন্ডন বাংলা স্কুল এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন  » «   লন্ডনে বইমেলা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব  » «   চ্যানেল এস এর সিনিয়র নিউজ প্রেজেন্টার মুনিরা পারভিনের মাতা শাহানা সুলতানা’র মৃত্যুতে ক্লাব নেতৃবৃন্দের শোক  » «   কানাডায় স্বাগতম ! তবে তার আগে…  » «   ইউ‌কে-বাংলা প্রেসক্লা‌বের সভাপ‌তি রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরীর মাতৃবিয়োগে ৫২বাংলার শোক প্রকাশ  » «   ইউ‌কে-বাংলা প্রেসক্লা‌বের সভাপ‌তি রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরীর মাতৃবিয়োগে শোক প্রকাশ  » «   বৃটেনের শিক্ষার্থীদের জন্য মেয়র লুৎফুর রহমানের অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত  » «  
সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন

যোদ্ধা-বীরাঙ্গণা হীরামনি সাঁওতাল



সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

যে যুদ্ধ করে আর যে যুদ্ধের বয়ান তৈরি করে- এই দুয়ের মধ্যে বিস্তর ফারাক। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের অনেক পরের প্রজন্ম, তারা তৈরি করা বয়ান দিয়েই তো যুদ্ধ, যোদ্ধা, ইতিহাসকে চিনেছি। তাহলে এই ফারাকটা ভরাটের পথ কী?

ঠিক এই জায়গাটা থেকেই একসময় ভাবি, যোদ্ধার প্রকৃত বয়ানটাই বোধহয় সেই ফারাকটা ভরাট করে দিতে পারে। একসময় যোদ্ধার বয়ান শোনা শুরু করি। সত্যিকার অর্থেই তখন অন্য এক যুদ্ধকে প্রত্যক্ষ করি যোদ্ধার চোখে। সেই ঘোর আজও কাটেনি।

কিন্তু যোদ্ধাও তো মানুষ, সময়ের ব্যবধানে সেও নিজেকে যে পাল্টে ফেলেনি- তাই বা কে বলবে! তবু আজও মুক্তিযোদ্ধার, বীরাঙ্গণার, শরণার্থীর গল্প শুনি ঠাকুরমার ঝুলির রূপকথার মতো সরলতা, মুগ্ধতা আর শিহরণ নিয়েই।

সেই অচেনা, অজানা, অখ্যাত যোদ্ধা, যারা মুক্তিযুদ্ধকে জনযুদ্ধে রূপ দিয়েছিল, তাদের কিছু কিছু অভিজ্ঞতা এই উত্তাল মার্চের দিনগুলোতে শুনাতে চাই ৫২বাংলায়।

হীরামনি সাঁওতাল

হবিগঞ্জের চানপুর চা বাগানের লোহারপুল বস্তির শ্রমিক লক্ষণ সাঁওতালের সঙ্গে ঠিক কোন সালে বিয়ে হয়েছিল এটা মনে করতে পারেন না হীরামনি সাঁওতাল।তবে তাঁর ভাষ্যমতে, সেটা ‘গণ্ডগোলের’ বছর পাঁচেক আগের ঘটনা। তখন তাঁর বয়স ১৪-১৫।

চা বাগানের নিস্তরঙ্গ জীবনেও ১৯৭১ সালের মে-জুন মাসে যুদ্ধের দামামা বেজে ওঠে।পাকিস্তানি সেনাবাহিনী চা বাগানে এসে ক্যাম্প স্থাপন করে। তারপর থেকেই পাল্টে যেতে থাকে চা বাগানের জীবন।

হীরামনির বাড়িতে যখন খানসেনারা হানা দেয় তখন তিনি ঢেঁকিঘরে ধান ভানছিলেন। তাঁকে সাহায্য করছিলেন কাকাশ্বশুর বিপিন। দুজনেই হতবিহ্বল। দুজনেই কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। খানসেনারা তাদের দিকে বন্দুক তাক করে জিজ্ঞেস করেন, তারা মুক্তিবাহিনী কিনা। হীরামনি ভয়ে ভয়ে উত্তর দেন, বাগান-শ্রমিক।

তারপর হীরামনিকে বন্দুকের নলের মুখে নিজের ঘরে দিকে নিয়ে যায় সেনারা আর কাকাশ্বশুরকে বাড়ির বাইরে। ঘরে আটকে রেখে শুরু হয় নির্যাতন। সেই নির্যাতনের একপর্যায়ে হীরামনি জ্ঞান হারান। তিনি আর কিছুই বলতে পারেন না।

জীবনের শেষ সময়ে এসেও হীরামনি একাত্তরের সেই কথা আর বলতে চাইতেন না। কারণ, স্বাধীনতা হীরামনির জীবনে কোন অর্থ নিয়ে আসেনি বরং তাঁর চিরাচরিত চা শ্রমিকের দারিদ্রক্লিষ্ট জীবনকে আরও জটিল করে দিয়েছিল। যে স্বাধীনতার জন্য তাঁর জীবনটা পাল্টে গেছে, সে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাঁর কোনো খোঁজ রাখেনি, স্বীকৃতিও মেলেনি।

এখন হীরামনি রাষ্ট্র-রাজনীতি-সমাজের সব স্বীকৃতির উর্ধ্বে।

(২০১৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর চানপুর চা বাগানে হীরামনির বাড়িতে নেওয়া সাক্ষাতকার।)


সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন