সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ৫ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
https://blu-ray.world/ download movies
সর্বশেষ সংবাদ
যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হচ্ছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত পল কাপুর  » «   গণঅভুত্থানের পক্ষে ৮৩৮, পরে ৫৬২ জন নিহত : জুলাই গণঅভুত্থানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘ  » «   ‘জুলাই শহিদ’ পরিবার ও ‘জুলাই যোদ্ধা’ পাবে মাসিক ২০ হাজার টাকা ভাতা  » «   লন্ডনে বাংলায় স্টেশনের নাম নিয়ে ব্রিটিশ এমপির ক্ষোভ!  » «   বৈশ্বিক পাসপোর্ট সূচকে কিছু উন্নতি : ফিলিস্তিন-লিবিয়ার অবস্থানে বাংলাদেশ  » «   সমাজসেবী হাজী আব্দুর রহমানের ইন্তেকাল  » «   বাংলা একাডেমির ‘আদব-কায়দা’ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন সলিমুল্লাহ খান  » «   সুরভি-র ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন  » «   বরের পিতা আওয়ামী লীগ নেতা, চট্টগ্রামে বিয়ের অনুষ্ঠানে ‘মব’ তাণ্ডব  » «   বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে ৬৩ যুগলের যৌতুকবিহীন গণবিয়ে  » «   মার্কিন অর্থায়ন বন্ধের প্রভাব : আইসিডিডিআর,বি’র সহস্রাধিক কর্মী ছাঁটাই হচ্ছে  » «   ‘মধুচন্দ্রিমা শেষ’, প্রত্যাশার চাপ বাড়ছে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর: আইসিজি  » «   সবচেয়ে দরিদ্র জেলা মাদারীপুর, ধনী নোয়াখালী  » «   হেলিকপ্টারের সঙ্গে বিমানের সংঘর্ষ : ৬৪ জন যাত্রী ও ক্রুর ভাগ্যে কী ঘটেছে  » «   ভারতীয় বিতর্কিত সিনেমা ‘ইমার্জেন্সি’: শেখ মুজিবের মুখে এ কী সংলাপ? : ব্রিটেনে বিক্ষোভ  » «  
সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন

যোদ্ধা-বীরাঙ্গণা হীরামনি সাঁওতাল



সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

যে যুদ্ধ করে আর যে যুদ্ধের বয়ান তৈরি করে- এই দুয়ের মধ্যে বিস্তর ফারাক। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের অনেক পরের প্রজন্ম, তারা তৈরি করা বয়ান দিয়েই তো যুদ্ধ, যোদ্ধা, ইতিহাসকে চিনেছি। তাহলে এই ফারাকটা ভরাটের পথ কী?

ঠিক এই জায়গাটা থেকেই একসময় ভাবি, যোদ্ধার প্রকৃত বয়ানটাই বোধহয় সেই ফারাকটা ভরাট করে দিতে পারে। একসময় যোদ্ধার বয়ান শোনা শুরু করি। সত্যিকার অর্থেই তখন অন্য এক যুদ্ধকে প্রত্যক্ষ করি যোদ্ধার চোখে। সেই ঘোর আজও কাটেনি।

কিন্তু যোদ্ধাও তো মানুষ, সময়ের ব্যবধানে সেও নিজেকে যে পাল্টে ফেলেনি- তাই বা কে বলবে! তবু আজও মুক্তিযোদ্ধার, বীরাঙ্গণার, শরণার্থীর গল্প শুনি ঠাকুরমার ঝুলির রূপকথার মতো সরলতা, মুগ্ধতা আর শিহরণ নিয়েই।

সেই অচেনা, অজানা, অখ্যাত যোদ্ধা, যারা মুক্তিযুদ্ধকে জনযুদ্ধে রূপ দিয়েছিল, তাদের কিছু কিছু অভিজ্ঞতা এই উত্তাল মার্চের দিনগুলোতে শুনাতে চাই ৫২বাংলায়।

হীরামনি সাঁওতাল

হবিগঞ্জের চানপুর চা বাগানের লোহারপুল বস্তির শ্রমিক লক্ষণ সাঁওতালের সঙ্গে ঠিক কোন সালে বিয়ে হয়েছিল এটা মনে করতে পারেন না হীরামনি সাঁওতাল।তবে তাঁর ভাষ্যমতে, সেটা ‘গণ্ডগোলের’ বছর পাঁচেক আগের ঘটনা। তখন তাঁর বয়স ১৪-১৫।

চা বাগানের নিস্তরঙ্গ জীবনেও ১৯৭১ সালের মে-জুন মাসে যুদ্ধের দামামা বেজে ওঠে।পাকিস্তানি সেনাবাহিনী চা বাগানে এসে ক্যাম্প স্থাপন করে। তারপর থেকেই পাল্টে যেতে থাকে চা বাগানের জীবন।

হীরামনির বাড়িতে যখন খানসেনারা হানা দেয় তখন তিনি ঢেঁকিঘরে ধান ভানছিলেন। তাঁকে সাহায্য করছিলেন কাকাশ্বশুর বিপিন। দুজনেই হতবিহ্বল। দুজনেই কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। খানসেনারা তাদের দিকে বন্দুক তাক করে জিজ্ঞেস করেন, তারা মুক্তিবাহিনী কিনা। হীরামনি ভয়ে ভয়ে উত্তর দেন, বাগান-শ্রমিক।

তারপর হীরামনিকে বন্দুকের নলের মুখে নিজের ঘরে দিকে নিয়ে যায় সেনারা আর কাকাশ্বশুরকে বাড়ির বাইরে। ঘরে আটকে রেখে শুরু হয় নির্যাতন। সেই নির্যাতনের একপর্যায়ে হীরামনি জ্ঞান হারান। তিনি আর কিছুই বলতে পারেন না।

জীবনের শেষ সময়ে এসেও হীরামনি একাত্তরের সেই কথা আর বলতে চাইতেন না। কারণ, স্বাধীনতা হীরামনির জীবনে কোন অর্থ নিয়ে আসেনি বরং তাঁর চিরাচরিত চা শ্রমিকের দারিদ্রক্লিষ্ট জীবনকে আরও জটিল করে দিয়েছিল। যে স্বাধীনতার জন্য তাঁর জীবনটা পাল্টে গেছে, সে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাঁর কোনো খোঁজ রাখেনি, স্বীকৃতিও মেলেনি।

এখন হীরামনি রাষ্ট্র-রাজনীতি-সমাজের সব স্বীকৃতির উর্ধ্বে।

(২০১৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর চানপুর চা বাগানে হীরামনির বাড়িতে নেওয়া সাক্ষাতকার।)

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন