ঢাকা ০৫:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বেওয়ারিশ ছয় লাশ
৫ মাস পর স্বামীর মরদেহ শনাক্ত করলেন স্ত্রী

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৮:৩৪:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫
  • / 357
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে নিহত ছয় জনের মরদেহ ঘটনার ৫ মাস পরও অশনাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মরদেহগুলো ‘বেওয়ারিশ’ হিসেবেই ফ্রিজে রেখে দিয়েছে। মরদেহগুলো বুঝেও নেওয়ার কেউ নেই। এ খবর প্রচারিত হলে ৫ মাস পর নিহত স্বামীর মরদেহ শনাক্ত করলেন স্ত্রী।

সনাক্ত হওয়া ব্যক্তির নাম কাবিল হোসেন। বয়স ৫৭। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ৫ আগস্ট থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। হাসপাতালের মর্গে নিহত কাবিলের মরদেহ শনাক্ত করেন তার স্ত্রী সেলিনা বেগম। কাবিল দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। স্ত্রী সেলিনা আয়ার কাজ করেন।

সেলিনা বেগম জানান, তার স্বামী কাবিল হোসেন মাছ ব্যবসায়ী ছিলেন। তাদের বাড়ি কুমিল্লায়। তবে কর্মসূত্রে তারা রাজধানীর মানিকনগর এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। কাবিল হোসেন গত ৫ আগস্ট সকালে রাজধানীর মানিকনগরের বাসা থেকে বের হন। এরপর তার আর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। গত শুক্রবার (১০ জানুয়ারি ২০২৫) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমের খবরে তারা জানতে পারেন ঢামেক মর্গে অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনের মরদেহ পড়ে আছে। পরদিন শনিবার (১১ জানুয়ারি) মর্গে এসে মরদেহে থাকা পোশাক দেখে তা কাবিলের বলে শনাক্ত করেন তার স্ত্রী।এরপর বিষয়টি শাহবাগ থানাকে জানায় ঢামেক কর্তৃপক্ষ। স্ত্রী সেলিনা বেগমের কাছে কাবিল হোসেনের মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করেছে শাহবাগ থানা পুলিশ।

উল্লেখ্য, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা হতাহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগেরই নাম-পরিচয় জানা গেছে। এর মধ্যে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকেই আন্দোলনে নিহত অনেকের মরদেহ বুঝেও নিয়েছেন স্বজনরা। তবে আন্দোলনে নিহত ছয় জনের মরদেহ ঘটনার ৫ মাস পরও অশনাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল ঢামেক হাসপাতাল মর্গে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মরদেহগুলো ‘বেওয়ারিশ’ হিসেবেই ফ্রিজে রেখে দেয়। তাদেরই একজন কাবিল হোসেন।

ঢামেক মর্গে যে ছয়টি লাশ পড়ে ছিলো তাদের সম্পর্কে জানানো হয়, লাশগুলো হলো অজ্ঞাতনামা পুরুষ (২০), অজ্ঞাতনামা পুরুষ (২৫), অজ্ঞাতনামা পুরুষ (২২), অজ্ঞাতনামা নারী (৩২) ও অজ্ঞাতনামা পুরুষ (৩০)। আরকেজনের নাম এনামুল (২৫), তবে তার নাম ছাড়া আর কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। লাশগুলোর ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তে পাঁচ জনের মৃত্যুর কারণ হিসেবে লেখা হয়েছে ‘আঘাতজনিত কারণে মৃত্যু’। একজনের (এনামুল) মৃত্যুর কারণ হিসেবে ‘ওপর থেকে নিচে পড়ে মৃত্যু’ লেখা হয়েছে।

মৃতদেহগুলোর ডিএনএ সংগ্রহ করার পাশাপাশি পরিহিত আলামতও (পোশাক-পরিচ্ছদ) সংগ্রহ করা হয়েছে। এই মুহূর্তে সবগুলো মরদেহ ঢামেক ফরেনসিক হিমাগারে রক্ষিত আছে।

আন্দোলনের সময় কারো স্বজন নিখোঁজ হয়ে থাকলে তার পরিবারের সদস্যদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জুলাই গণঅভ্যুত্থান বিষয়ক বিশেষ সেলের ০১৬২১৩২৪১৮৭ নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বেওয়ারিশ ছয় লাশ
৫ মাস পর স্বামীর মরদেহ শনাক্ত করলেন স্ত্রী

আপডেট সময় : ০৮:৩৪:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে নিহত ছয় জনের মরদেহ ঘটনার ৫ মাস পরও অশনাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মরদেহগুলো ‘বেওয়ারিশ’ হিসেবেই ফ্রিজে রেখে দিয়েছে। মরদেহগুলো বুঝেও নেওয়ার কেউ নেই। এ খবর প্রচারিত হলে ৫ মাস পর নিহত স্বামীর মরদেহ শনাক্ত করলেন স্ত্রী।

সনাক্ত হওয়া ব্যক্তির নাম কাবিল হোসেন। বয়স ৫৭। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ৫ আগস্ট থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। হাসপাতালের মর্গে নিহত কাবিলের মরদেহ শনাক্ত করেন তার স্ত্রী সেলিনা বেগম। কাবিল দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। স্ত্রী সেলিনা আয়ার কাজ করেন।

সেলিনা বেগম জানান, তার স্বামী কাবিল হোসেন মাছ ব্যবসায়ী ছিলেন। তাদের বাড়ি কুমিল্লায়। তবে কর্মসূত্রে তারা রাজধানীর মানিকনগর এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। কাবিল হোসেন গত ৫ আগস্ট সকালে রাজধানীর মানিকনগরের বাসা থেকে বের হন। এরপর তার আর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। গত শুক্রবার (১০ জানুয়ারি ২০২৫) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমের খবরে তারা জানতে পারেন ঢামেক মর্গে অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনের মরদেহ পড়ে আছে। পরদিন শনিবার (১১ জানুয়ারি) মর্গে এসে মরদেহে থাকা পোশাক দেখে তা কাবিলের বলে শনাক্ত করেন তার স্ত্রী।এরপর বিষয়টি শাহবাগ থানাকে জানায় ঢামেক কর্তৃপক্ষ। স্ত্রী সেলিনা বেগমের কাছে কাবিল হোসেনের মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করেছে শাহবাগ থানা পুলিশ।

উল্লেখ্য, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা হতাহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগেরই নাম-পরিচয় জানা গেছে। এর মধ্যে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকেই আন্দোলনে নিহত অনেকের মরদেহ বুঝেও নিয়েছেন স্বজনরা। তবে আন্দোলনে নিহত ছয় জনের মরদেহ ঘটনার ৫ মাস পরও অশনাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল ঢামেক হাসপাতাল মর্গে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মরদেহগুলো ‘বেওয়ারিশ’ হিসেবেই ফ্রিজে রেখে দেয়। তাদেরই একজন কাবিল হোসেন।

ঢামেক মর্গে যে ছয়টি লাশ পড়ে ছিলো তাদের সম্পর্কে জানানো হয়, লাশগুলো হলো অজ্ঞাতনামা পুরুষ (২০), অজ্ঞাতনামা পুরুষ (২৫), অজ্ঞাতনামা পুরুষ (২২), অজ্ঞাতনামা নারী (৩২) ও অজ্ঞাতনামা পুরুষ (৩০)। আরকেজনের নাম এনামুল (২৫), তবে তার নাম ছাড়া আর কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। লাশগুলোর ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তে পাঁচ জনের মৃত্যুর কারণ হিসেবে লেখা হয়েছে ‘আঘাতজনিত কারণে মৃত্যু’। একজনের (এনামুল) মৃত্যুর কারণ হিসেবে ‘ওপর থেকে নিচে পড়ে মৃত্যু’ লেখা হয়েছে।

মৃতদেহগুলোর ডিএনএ সংগ্রহ করার পাশাপাশি পরিহিত আলামতও (পোশাক-পরিচ্ছদ) সংগ্রহ করা হয়েছে। এই মুহূর্তে সবগুলো মরদেহ ঢামেক ফরেনসিক হিমাগারে রক্ষিত আছে।

আন্দোলনের সময় কারো স্বজন নিখোঁজ হয়ে থাকলে তার পরিবারের সদস্যদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জুলাই গণঅভ্যুত্থান বিষয়ক বিশেষ সেলের ০১৬২১৩২৪১৮৭ নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।