স্পেনের বার্সেলোনায় ১১ সদস্যের একটি মানবপাচারকারী চক্রকে আটক করেছে দেশটির পুলিশ। বাংলাদেশ ও ভারতসহ চারটি দেশের সাড়ে তিনশর বেশি মানুষকে স্পেনে পাচার করার পর গত ৩ মে চক্রটি পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। তবে ১১ সদস্যের ওই মানবপাচারকারী চক্রে কতজন বাংলাদেশি আছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
আটক মানবপাচারকারী ওই চক্রের কারও পরিচয় প্রকাশ করেনি দেশটির পুলিশ।
গ্রেফতারের পর তাদের বাসায় তল্লাশি চালিয়ে বাংলাদেশি বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবহার করা ভুয়া স্ট্যাম্প সিল সংবলিত পুলিশ ক্লিয়ারেন্সসহ অন্যান্য কাগজপত্র জব্দ করা হয়। তাদের কাছ থেকে প্রায় ২০০ ভুয়া নথিপত্র, ৩২টি ভুয়া পাসপোর্ট, নগদ অর্থসহ এবং দালাল চক্রের সমন্বয়ের তথ্যসমৃদ্ধ ডিভাইস জব্দ করা হয়।
চক্রটি ১৪ হাজার থেকে ২০ হাজার ইউরোর বিনিময়ে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত, শ্রীলঙ্কা সাড়ে তিনশর বেশি মানুষকে দেশটিতে পাচার করে। অভিবাসনপ্রত্যাশী সেসব মানুষকে দক্ষিণ এশিয়া থেকে বিমানে আলজেরিয়ায় আনা হয়। পরে তাদেরকে পায়ে হেঁটে মরক্কো, এরপর ইঞ্জিন চালিত নৌকায় করে জিব্রাল্টার প্রণালী ও তার আশপাশ দিয়ে ভূমধ্যসাগর হয়ে স্পেনে প্রবেশ করানো হয়।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বার্সেলোনায় আটক হওয়া চক্রটির অধীনে আরও সাতটি সেল কাজ করে। যারা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর থেকে অভিবাসন প্রত্যাশীদের নিয়ে যায়। শুরুতে অল্প টাকায় তাদের নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করলেও গন্তব্যে পৌঁছানোর পর বকেয়া টাকা নেয় তারা। তাদের এই ‘অল্প টাকার’ ফাঁদে পড়ে মানুষ অবৈধ পথে ইউরোপে যাওয়া জন্য প্রলুব্ধ হয়।
এ ছাড়া মানবপাচারকারী সেই চক্রটির অন্য সেলগুলো মানবপাচার চলাকালীন বিভিন্ন দেশে এই অভিবাসীদের থাকার ব্যবস্থা করে এবং সীমান্ত পার হতে সহযোগিতা করে। আরেকটি সেল ভূমধ্যসাগর পার করিয়ে দেয়।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এসব অভিবাসী স্পেনে প্রবেশের পর তাদেরকে ভুয়া বাংলাদেশি পাসপোর্ট ও বাংলাদেশ পুলিশের ভুয়া চারিত্রিক সনদ দেয়া হয়। সেই ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার করে স্পেনে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারেন তারা।