লন্ডনের বিয়ের অনুষ্ঠানে সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের অন্তত চারজন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীকে দেখা গেছে। গত রবিবার লন্ডনের ওটু এলাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত ওই বিয়ের অনুষ্ঠানটি ছিল যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুকের ছেলে ফাইয়াজ রহমানের।
বিয়েতে অংশ নেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আবদুর রহমান, সাবেক নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান–বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী। সিলেট–৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিবও এই বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক চার মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে এই প্রথম একসঙ্গে কোনো অনুষ্ঠানে দেখা গেল। এর আগে গত বছরের ৮ ডিসেম্বর লন্ডনে শেখ হাসিনার ভার্চ্যুয়াল সমাবেশে প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে দেখা গিয়েছিল সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আবদুর রহমান এবং সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরীকে। এরপর গত ২ ফেব্রুয়ারি লন্ডনে আওয়ামী লীগের কর্মীসমাবেশে দেখা যায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীকে। ৩০ মার্চ লন্ডনে ঈদের জামাতে প্রকাশ্যে আসেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। আগে থেকে গুঞ্জন ছিল তিনি বেলজিয়ামে ছিলেন। লন্ডনে অধ্যয়নরত ছেলের সঙ্গে ঈদ করতে তিনি লন্ডনে আসেন।
আওয়ামী লীগ নেতার ছেলের বিয়েতে সাবেক মন্ত্রীদের উপস্থিতির ভিডিও সাইভার জগতে ছড়িয়ে পড়লে দলের নেতা-কর্মী, সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ফেসবুকে সাংবাদিক শংকর মৈত্র, আলম খায়রুল লিখেছেন, ‘‘লন্ডনে বসে বিয়ের নিমন্ত্রণ খাচ্ছেন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-নেতারা। আর দেশের কর্মীরা অনেকেই জেলের ভাত খাচ্ছেন। লাখো নেতা কর্মী বাড়ির ভাত খেতে পারছে না। অথচ এইসব গান্ডুদের জন্য ত্যাগীদের জীবন বিপন্ন। ওরা আছে আয়েশে! ‘’
উষ্মা প্রকাশ করতে দেখা যায় যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদেরও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুক্তরাজ্য যুবলীগের এক নেতা বলেন, দেশে আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের লাখ লাখ নেতা–কর্মীকে বিপদের মুখে ফেলে পালিয়ে এসে তাঁরা কীভাবে এসব অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন, তা ভাবতেও লজ্জা লাগে।