চরম উদ্বেগ-উৎকন্ঠার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশী অধ্যূষিত টাওয়ার হ্যামলেটস এর নির্বাহী মেয়র নির্বাচনের ফলাফল ঘোষিত হল লন্ডন সময় বিকেল ৬ টায় । বহু উচ্চারিত এই নির্বাচন ঘিরে ছিল লন্ডনের বাইরেও সারা ব্রিটেনের বাংলাদেশী বংশদ্ভোত মানুষের মাঝেও ছিল উৎকন্ঠা । এই বারার নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশী মানুষগুলোর কপালে জমেছে বিন্দু বিন্দু ঘাম । কারণ একদিকে লেবার পার্টির দূর্গ হিসেবে পরিচিত টাওয়ার হ্যামলেটস এ লেবার প্রার্থী আর অন্যদিকে প্রধান প্রতিদ্বন্ধি ছিলো নবগঠিত এস্পায়ার দলের প্রার্থী।
লেবার পার্টি থেকে প্রতিদ্বন্ধিতা করেছেন বিগত টার্মের মেয়র জন বিগস এবং এস্পায়ার দল থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন লুৎফুর রহমান। বাংলাদেশী বংশদ্ভোত ভোটারসহ এ বারার সংখ্যাগরিষ্ট নাগরিক লেবার দলের সমর্থক । অন্যদিকে ‘এস্প্যায়ার’ নামের এই দলটি ২০১৮ সালের ২৬ জানুয়ারি রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধিত হয়। কিন্তু তারপরও এতে বিজয়ী হন এস্পায়ার দলের প্রার্থী লুৎফুর রহমান।
নির্বাচনী নিয়মানুযায়ী ভোট গণনার প্রথম রাউন্ডে লেবার দলের প্রার্থী জন বীগস ভোট পেয়েছেন ২৭,৮৯৪ টি এস্পায়ার দলের প্রধান লুৎফুর রহমানের ভোটের সংখ্যা হয় ৩৯,৫৩৩ টি । দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোট গণনা শেষে লুৎফুর রহমান মোট পেয়েছেন ৪০,৮০৪ ভোট এবং জন বীগস এর ভোট সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৩৪৮৭ এ ।
টাউন হলে নির্বাচন কমিশনার টাওয়ার হ্যামলেটস নতুন নির্বাহী মেয়র হিসেবে লুৎফুর রহমানের নাম ঘোষণা করেন ।
উল্লেখ করা যেতে পারে, একসময় লুৎফুর রহমান ছিলেন লেবার দলের কাউন্সিলার। লেবার দলের টাওয়ার হ্যামলেটস এর লীডার থাকাকালীন নির্বাহী মেয়র নিয়ে গণভোটে লেবার দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গেলে লেবার পার্টির সাথে তাঁর দ্বন্ধের কারণে দল থেকে সরে আসতে হয় তাঁকে কিংবা দলই তাঁকে সরিয়ে দেয় । ‘লেবার দলে বঞ্চিত হয়েছেন’– কমিউনিটির এরকম একটা স্পিরিট ছিল তাঁকে নিয়ে সেসময় । আর সেকারণেই তিনি ১০ হাজারেরও অধিক ভোটে টাওয়ার হ্যামলেটস এর প্রথম নির্বাচিত নির্বাহী মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন।
২০১০ সালে প্রথম তিনি মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন । নির্বাহী মেয়র হিসেবে দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হবার পর বিভিন্ন অভিযোগে তিনি বরখাস্ত হয়েছিলেন এবং ররখাস্ত হবার পর কোর্টের নির্দেশনায়ই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করার ক্ষমতাও হারান । পরবর্তীতে লুৎফুর রহমানের বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ খন্ডন হওয়ায় এবং কোর্ট নির্দেশনা শেষ হবার পর তিনি এবারে আবারও প্রতিদ্বন্ধিতায় নামেন । প্রথম লন্ডন মেয়র কেন লিভিংস্টনের সমর্থনসহ টাওয়ার হ্যামলেটস বারার বাঙ্গালি-অবাঙ্গালি নির্বিশেষে বিভিন্ন জাতিগুষ্ঠির মানুষের অকুন্ঠ সমর্থনে তিনি আবারও ১০ হাজারেরও অধিক ভোটেরর ভোটের ব্যবধানে আবারও মেয়র নির্বাচিত হন ।