নেত্রকোণা কলমাকান্দায় গারাম পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মজনু মিয়ার বিরুদ্ধে অ্যাসাইনমেন্টের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ নেয়ার অভিযোগ উঠায় তাকে এ বিষয়ে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষার ফি ব্যতীত অন্য কোন খাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের বিধান নেই।
কিন্তু ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক করোনাকালীন শিক্ষার্থীদের ‘বাড়ির কাজ’ দেয়া ও তা আদায়ের জন্য (অ্যাসাইনমেন্ট) শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে এনে টাকা আদায় করেছেন। শিশু শ্রেণী ছাড়া প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ৫০ টাকা করে দেয়ার নির্দেশনা দিয়ে অনেকের কাছ থেকে আদায়ও করেছেন। বেশ কয়েকজন অভিভাবকের চাপে এই টাকা আবার ফেরতও দিয়েছেন।
এমন অভিযোগ উঠার পর কর্তৃপক্ষ তাকে শোকজ করেন।
সম্প্রতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রধানকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কোভিড-১৯ সময়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের শিখন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে সহায়তা এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক বাড়ির কাজ প্রদানে প্রণীত করোনাকালীন অন্তর্বর্তীকালীন পাঠপরিকল্পনা-২০২১ আওতায় পরীক্ষামূলক বাড়ির কাজ।
ওই স্কুলের শিক্ষার্থী ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জুই জানায়, ৫০ টাকা নিয়ে স্কুলে গিয়েছিলাম স্যারকে না পেয়ে দিতে পারিনি।
একই শ্রেণীর আরেক শিক্ষার্থী আমিনুল জানায়, স্যার সিনিয়রদের ফোনে টাকা তুলতে বলেছে। তারা টাকা তুলে স্যারের বাড়িতে দিয়ে এসেছে। আমিও ৫০ টাকা দিয়েছি।
আমিনুল আরো জানায়, ওই তো, বাড়ির কাজে কাগজ ও খরচ লাগবে বলেছে তাই। কতজন ছাত্র-ছাত্রী তা জানি না। তবে ক্লাস ফাইভে ৩০-৪০ জনের মতো হবে।
এ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শওকত আলী পাঠান বলেন, সিনিয়র (৫ম শ্রেণি) শিক্ষার্থীদের ডেকে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের বাড়ি থেকে ৫০ টাকা তুলে আনতে নির্দেশ দিয়েছে প্রধান শিক্ষক। এর আগে আমি কমিটিতে থাকাকালীন তিনি বই বিতরণের সময় ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিল। জানতে পেরে সে টাকা শিক্ষার্থীদের ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা করেছি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মজনু মিয়া জানান, ফটোকপির জন্য ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেরাই অর্থ তুলে দিয়েছে। আমি ফেরত দিয়ে দিয়েছি।
এ বিষয়ে কলমাকান্দা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহানারা খাতুন বলেন, গত মঙ্গলবার বিষয়টি জানার পর প্রধান শিক্ষককে তলব করেছি। আজ বুধবার (২ জুন) তিনি আমার সামনে রয়েছেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছ টাকা নেয়ার কোন নিয়ম নেই। এ ব্যাপারে স্লিপ থেকে খরচ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এখাতে বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য আমরা মন্ত্রণালয়ে দাবি জানিয়েছি। ওই শিক্ষককে কারণ দর্শাতেও বলা হয়েছে।