ডুমুরিয়া উপজেলার শরাফপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চল ঝালতলা গ্রাম। নানা প্রতিকুলতা তাদের নিত্য দিনের সঙ্গী। স্থানীয় এক বিলের এক ফসলি জমিতে চলতি মৌসুমে আনুমানিক ২০০ একর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। স্বল্প খরচে অধিক লাভজনক তরমুজ চাষে এলাকার চাষীরা ব্যস্ত সময় পার করছে। দুরদুরান্ত থেকে বিদুৎ সংযোগ নিয়ে সেচের মাধ্যমে, আবার কেউ ডিজেল মেশিনের সাহায্যে স্যালো পাম্প দিয়ে পানি তুলে সেচের কাজ চালাচ্ছে। খরচ বেশি হলেও তাদের আক্ষেপ নেই। চাষীদের প্রত্যাশা,গাছে যে পরিমানে ফল ধরেছে,সেগুলো সঠিক দামে বিক্রি করতে পারলে সব পরিশ্রম সার্থক হবে।
তরমুজ চাষী অমিত কুমার সরকার বলেন, গত বছর এই বিলে ৮/১০বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছিল। করোনার মধ্যে খরচ ও জমির হারি দিয়ে আমরা লাভবান হয়েছিলাম। তাই এ বছর গ্রামের সবাই বিলের অধিকাংশ জায়গায় কৃষি অফিসের সহায়তায় তরমুজ চাষ করেছে।সেচের সমস্যা না থাকলে তরমুজ চাষে চাষীরা আরো আগ্রহ দেখাবে। এরফলে চাষীরা স্বাবলম্বী হবে এবং দেশের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রাখবে। এই বিলের পানি নিষ্কাশনের জন্য তিন কিলোমিটার লম্বা খাল রয়েছে। এই খালটি খনন করলে খরা মৌসুমে চাষীরা ফসলের ক্ষেতে স্বল্প খরচে সেচের জন্য পানি ব্যবহার করতে পারবে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় ২৩০ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষাবাদ হয়েছে। উপজেলার শরাফপুর,মাগুরখালী,শোভনা ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন বিলে চাষাবাদ হয়েছে। কৃষকরা দিন রাত পরিশ্রমে তরমুজের ভাল ফলনের আপ্রান চেষ্টা করে যাচ্ছে ।
বাম্পার ফলনের আশা ব্যক্ত করে ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ মোছাদ্দেক হোসেন বলেন, আমি যোগদানের পর দেখি কৃষি সমৃদ্ধ ডুমুরিয়া উপজেলার ২-৩ টি ইউনিয়নের অধিকাংশ জমি আমন পরবর্তী সময়ে পতিত থাকে। তখন আমি আমার পূর্ববর্তী কর্মস্থল দাকোপের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ঐ সমস্ত এলাকায় চাষীদের উদ্বুদ্ধ করি। যাতে কোন বিল যেন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে না থাকে। কিছু প্রর্দশনী ও পরিষদের মাধ্যমে বিনা মূল্যে বীজ দিয়ে চাষীদের তরমুজ চাষে আগ্রহী করে তোলা হয়।
তিনি আরো জানান, গত বছর ঝালতলা বিলের একজন প্রগতিশীল চাষী দেবব্রত সরকার জিকেবিএসপি প্রকল্পের প্রশিক্ষণে এসে তরমুজ আবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রথম বারের মত ৫ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেন। তরমুজের ফলন ও মুল্য পান আশানুরুপ। সেই থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এ বছর ঝালতলা বিলের শতভাগ জমিতে প্রায় ২০০ একরসহ উপজেলায় ২৩০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। যা গতবারের তুলনায় অনেক বেশি। তিনি আরও বলেন,ঝালতলা বিলে খাল খনন ও সেচ লাইনের সমস্যা সমাধান করা হবে। এবছর বিএডিসির মাধ্যমে খাল খনন করা হবে। নিরাপদ স্বাস্থ্যসম্মত সবজি উৎপাদন ও কৃষিতে ডুমুরিয়া উপজেলার সুনাম রয়েছে।