বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ধনীদের আবাসস্থল হিসেবে পরিচিত লন্ডন শহর থেকে এ বছর রেকর্ড সংখ্যক ধনী অন্য জায়গায় চলে গেছেন। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স বলছে, ২০২৪ সালে ১১ হাজারের বেশি মিলিয়নিয়ার লন্ডন শহর ছেড়ে গেছেন।
হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টাইম ও বিবিসি জানিয়েছে, ধনীদের মধ্যে লন্ডন ছাড়ার প্রবণতা কয়েক বছর ধরেই দৃশ্যমান। গত বছর থেকে তা উদ্বেগজনক অবস্থায় পৌঁছেছে।
হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের ‘ওয়ার্ল্ড ওয়েলদিয়েস্ট সিটিজ’–এর প্রতিবেদন বলছে, মিলিয়নিয়ার হারানো শহরের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে লন্ডন। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ১১ হাজার ৩০০-রও বেশি মিলিয়নিয়ার লন্ডন ছেড়েছেন। আর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রাশিয়ার রাজধানী মস্কো, যেখানে ১০ হাজার মিলিয়নিয়ার শহর ছেড়েছেন।
২০১৪ সালের পর থেকেই ধনীদের লন্ডন ছাড়ার প্রবণতা বেড়েছে। গত এক দশকে লন্ডন ছেড়ে গেছে ১২ শতাংশ ধনী। এভাবে ধনীদের সংখ্যা কমতে কমতে লন্ডন এখন ‘শীর্ষ পাঁচ ধনী শহরের’ তালিকা থেকেও বাদ পড়েছে।
বিবিসি বলছে, দশকের পর দশক ধরে শীর্ষ পাঁচ ধনী শহরের তালিকায় ছিল লন্ডন। এবারই প্রথম শহরটি শীর্ষ পাঁচে (ধনীদের আবাসস্থল বিবেচনায়) থাকার মর্যাদা হারাল। এবার শীর্ষ পাঁচের পাঁচ নম্বরে উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের শহর লস অ্যাঞ্জেলেস। তবে বিশ্লেষকের বলছেন, ধনীদের সংখ্যা ক্রমশ কমলেও লন্ডনের অবস্থা এখনো শঙ্কটজনক অবস্থায় পৌঁছায়নি। শহরটিতে এখনো ২ লাখ ১৫ হাজার ৭০০ মিলিয়নিয়ার রয়েছেন। এক বছর আগে এই সংখ্যা ছিল ২ লাখ ২৭ হাজার।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ বলছে, বেশির ভাগ ধনী লন্ডন ছেড়ে এশিয়া বা আমেরিকার দেশগুলোতে থিতু হচ্ছেন।
সম্পদ পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো তথ্য বিশ্লেষণ করে বলছে, বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণে ধনীরা লন্ডন ছেড়ে যাচ্ছেন। যেমন—ক্রমাগত বাড়তে থাকা করের বোঝা, ২০০৮ সালের আর্থিক সংকট থেকে সম্পূর্ণভাবে পুনরুদ্ধার করতে না পারা এবং ব্রেক্সিট অর্থাৎ, ব্রিটেনের ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত।