রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
বাংলাদেশে ভ্রমণে সতর্কর্তা যুক্তরাষ্ট্রের, পার্বত্য অঞ্চলে নিষেধাজ্ঞা  » «   যুক্তরাজ্যে বিরল চিকিৎসা কীর্তি, ২বার ভূমিষ্ঠ হলো একই শিশু  » «   সিলেট থেকে কার্গো ফ্লাইটের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু ২৭ এপ্রিল  » «   যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিটেন্স বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি, কমেছে আমিরাত থেকে  » «   পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিবকে কী বললো ঢাকা?  » «   বিয়ানীবাজার জনকল্যাণ সমিতি ইউকের উদ্যোগে ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত  » «   নির্বাচনের জন্য জামায়াত আমিরের ৩ শর্ত, ফেব্রুয়ারি ২৬-এর সময়সীমা কঠিন নয়  » «   ইইউর ‘নিরাপদ’ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ : কঠিন হবে রাজনৈতিক আশ্রয়  » «   লন্ডনে খালেদা-তারেকের সাথে জামায়াত আমিরের বৈঠক, দুই দল কী বলছে?  » «   উজানে ‘মেগা ড্যামের’ ধাক্কা সামলাতে দিল্লি-ঢাকা-থিম্পুকে জোট বাঁধার ডাক  » «   রাজনীতিতে আসার সিদ্ধান্ত ঠিক ছিলো, বিশ্বাস করেন সাকিব  » «   নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক, ‘একেবারেই সন্তুষ্ট নয়’ বিএনপি  » «   গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়ালো ৫১ হাজার  » «   দেশের সব মসজিদে দুপুর দেড়টায় জুমার নামাজ আদায়ের নির্দেশনা  » «   ট্রাম্প ও শির যুদ্ধ প্রস্তুতি কী বার্তা দিচ্ছে বিশ্বকে  » «  

মডেল মেঘনা বিশেষ ক্ষমতা আইনে জেলে, অভিযোগ ছাড়াই আটকের যৌক্তিকতা নিয়ে আবারও প্রশ্ন



মডেল মেঘনা আলমকে ঢাকায় তার বাসা থেকে পুলিশ আটক করার দুদিন পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আদালত তার বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের আটকাদেশ দিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল ২০২৫) রাতে ঢাকার মূখ্য মহানগর হাকিমের আদালত এ আদেশ দেয়। তবে আটকের ঘটনা ঘটে গত সোমবার।

আটকের ঘটনার তিনদিন পর আজ পুলিশ জানিয়েছে, এই নারীকে সুনির্দিষ্ট কারণে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে ‘নিরাপত্তা হেফাজতে’ রাখা হয়েছে। এদিকে, মেঘনা আলমকে গ্রেফতারের ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা, ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ। প্রশ্ন উঠছে, অভিযোগ কিংবা মামলা ছাড়াই কাউকে আটক করার যৌক্তিকতা কতটা? লিখেছেন বিবিসি নিউজ বাংলা এর মরিয়ম সুলতানা।

কি ঘটেছিল আটকের সময়
মেঘনা আলমকে নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত গত নয়ই এপ্রিল সোমবার থেকে। ওইদিন রাতে তাকে তার ঢাকার বসুন্ধরার বাসা থেকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গত সোমবার রাতে পুলিশ যখন তাকে আটক করতে যায়, সে সময় তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইল থেকে লাইভ করেন। সেই লাইভে তিনি বলছিলেন, তার দরজার বাইরে পুলিশ পরিচয়ধারীরা তাকে নিতে এসেছে।

মেঘনা আলমের ফেসবুক লাইভ চলার সময়ই তার বাসায় পুলিশ প্রবেশ করে এবং তখন লাইভ বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ১২ মিনিট ধরে চলা ফেসবুক লাইভ পরে তার ফেসবুক প্রোফাইল থেকেও সরে যায়। কিন্তু ১২ মিনিটের ফেসবুক লাইভ ততক্ষণে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং অনেকেই সেটি ডাউনলোড করে পুনরায় পোস্ট করে। আটক হওয়ার আগমুহুর্তে সেই লাইভে তিনি শুরুতেই বলছিলেন, তার বাসায় “কিছু মানুষ আক্রমণ করেছে। তারা নিজেদেরকে পুলিশ পরিচয় দিচ্ছে। আমি বলেছি থানায় এসে কথা বলবো, তারা কথা শুনছে না।”

লাইভের ভিডিও-তে মেঘনা আলমকে দরজার বাইরে থাকা লোকেদের উদ্দেশে বলতে শোনা যায়, “আপনারা আমার দরজার ভাঙ্গার চেষ্টা করছেন। আমার ভয় পাওয়া তো স্বাভাবিক…. না?” ওই ভিডিও-তে কথোপকথনে শোনা যায়, মেঘনা আলমকে আটক করতে সাত-আট জন ‘পুলিশ পরিচয়ধারী’ এসেছে এবং তাদের হাতে বন্দুক ছিল।

মেঘলা আলম ঐ ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনারা যার কথায় এখানে এসেছেন… তাকে কখনও আমি আমার বাসায় ঢুকতে দেইনি। আপনার তো আমাকে ফোন করে আসার কথা।”

এই নারীর দাবি, বাংলাদেশে নিযুক্ত একজন বিদেশি রাষ্ট্রদূতের কথায় ‘পুলিশ’ তার বাসায় এসেছে এবং একপর্যায়ে ভিডিওতে তিনি বলেন, তাকে মাদকমামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। দরজার ওপাশ থেকে তাকে দরজা খুলতে বলা হলে মেঘনা আলম বলেন, আইন অনুযায়ী তাকে “কারণ (দরজা খোলার) বলতে হবে। অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট থাকতে হবে।”

গ্রেফতার নিয়ে যা বলছে পুলিশ
ফেসবুকে লাইভ করার সমই মেঘনা আলম তার আইনজীবীর সাথে ফোনে যোগাযোগ করেন এবং ঘটনা জানান। এসময় তাকে জরুরি সেবা নাম্বারে কল দিয়েও সাহায্য চাইতে শোনা যায়। যখন মেঘনা আলম ফোনে কথা বলছিলেন, তখন বাইরে থাকা লোকজন তার বাসার দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করে। লাইভের শেষ কয়েক সেকেন্ডে মেঘনা আলমকে বলতে শোনা যায়, “আমার ফোন, ল্যাপটপ সব নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে…আপনি টানাটানি করছেন কেন!” তখন ফেসবুক লাইভ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তাকে নিয়ে কি ঘটল, সে ব্যাপারে প্রায় ২৪ ঘণ্টা কোথাও থেকে কোনও তথ্য আসেনি। ফলে মিজ আলমকে অপহরণ করা হয়েছে কি না,এ ধরনের আলোচনা চলছিল। অবশেষে গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে পুলিশের বরাতে গণমাধ্যমে খবরআসে যে, আটকের দুদিন পর বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে ঢাকা মহানগর হাকিমের আদালতে হাজির করে গোয়েন্দা পুলিশ। আদালত তার বিরুদ্ধে ৩০ দিনের আটকাদেশ দিয়ে কারাগারে পাঠায়।

শেষপর্যন্ত আজ শুক্রবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশ বা ডিএমপি আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের ভেরিফায়েড অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে জানায় যে, অপহরণের এই অভিযোগ সত্য নয়। বরং ‘রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সম্পর্ক মিথ্যাচার ছড়ানোর মাধ্যমে আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক অবনতির অপচেষ্টা করা এবং দেশকে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে তাকে সকল আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছে।’

কিন্তু মেঘনা আলম কী ধরনের ষড়যন্ত্রে করেছে এবং সেই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি কে? ডিএমপি’র তরফ থেকে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে সে বিষয়ে খোলাসা করে কিছু বলা হয়নি। পরে ডিএমপি’র জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার তালেবুর রহমানের কাছে এটি জানতে চাওয়া হলে তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, এর উত্তর তার জানা নেই।

ফেসবুকসহ সামাজিক মাধ্যমে চলছে আলোচনা- সমালোচনা
ফেসবুকে অনেকে লিখেছেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার শাসনের পতনের পর অনেকেই আশা করেছিলো, বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকাণ্ডে পরিবর্তন আসবে। কিন্তু মেঘনা আলমকে আটক করে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় তারা আশাহত হয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রুশাদ ফরিদী ফেসবুকে লিখেছেন, এইসব ঘটনা হাসিনার ফ্যাসিস্ট আমলে নিয়মিত ঘটত। এখন কিভাবে সম্ভব? “আগের সরকারের আমলে এভাবে তুলে নেওয়াটা তাদের ভয়ংকর অপশাসনের আলামত ছিলো। এরাও যদি সেই ধারাবাহিকতা রাখে তবে সংস্কার কই? আর পরিবর্তনই বা কই?” ফেসবুকে এই প্রশ্ন রেখেছেন আরেক ব্যক্তি।

নুসরাত জাহান পুঁথি নামক একজন আবার লিখেছেন, “রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার অভিযোগ যার বিরুদ্ধে থাকবে, তাকে কেন তা শুরুতেই জানানো হলো না? কেন বলা হলো, আপনার বার্থ সাটিফিকেট দেখতে এসেছি বা আপনার কাছে ড্রাগস আছে এমন খবর পেয়ে এসেছি?”

দারোয়ানকে নিয়ে বাসায় যাওয়া এবং দরজা ভেঙ্গে বাসা প্রবেশ করা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

গতকাল রাতে গণমাধ্যমে খবর আসার আগে নাসরীন সিরাজ নামের একজন মেঘনা আলমের ফেসবুক লাইভের সেই ভিডিওটি সহ একটি স্ট্যাটাস দেন ফেসবুকে। তাতে তিনি লিখেন, ভাটারা থানা থেকে তাদেরকে বলা হয়েছে, মেঘনা আলম গোয়েন্দা হেফাজতে আছে। কিন্তু তারা তাকে সেখানে খুঁজে পাননি। তার ভাষ্য, “আমরা আজ সারাদিন আদালতে অপেক্ষা করেছি। তাকে আদালতেও তোলা হয়নি। আমরা মেঘলার জন্য বিচার চাই। আমরা তার অবস্থান সম্বন্ধে জানতে চাই।” নাসরীন সিরাজের সাথে মিজ আলমের কোনও আত্মীয়তার সম্পর্ক আছে কি না, জানা যায়নি।

অর্থনীতিবিদ, অধ্যাপক ড. আনু মুহাম্মদও এই ঘটনা নিয়ে গতকাল ফেসবুকে লিখেছেন। তিনি প্রশ্ন করেছেন, “একটা মেয়েকে কিছু লোক বাড়ীর দরজা ভেঙে তুলে নিয়ে গেল। সরকারের ক্ষমতাবান লোকদের জানানোর পরও তার এখনও খোঁজ নাই কেন? সরকারের দায়িত্ব অবিলম্বে মেয়েটিকে উদ্ধার করা এবং লোকগুলি যেই পরিচয়েরই হোক তাদের বিরুদ্ধে এরকম দুর্বৃত্ত তৎপরতার জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া,” যোগ করেন তিনি।

বিশেষ ক্ষমতা আইন কী?
‘বিশেষ ক্ষমতা আইন, ১৯৭৪’ বা ডিটেনশন আইন প্রয়োগ করে সরকার কোনও ব্যক্তিকে আদালতের আনুষ্ঠানিক বিচার ছাড়াই জননিরাপত্তা, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে সন্দেহভাজন হিসাবে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আটক বা বন্দি করতে পারে। তবে, বাংলাদেশ সংবিধানের ৩৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করতে হবে এবং তাকে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ জানাতে হবে, এ তথ্য বিবিসিকে জানান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান। তবে একজন নারীকে ধরার জন্য রাতের বেলা অর্ডার দিচ্ছে, বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক। তার থেকে বড় কথা, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এটি করতে পারবে। ম্যাজিস্ট্রেটের কথা আইনে বলা নাই। তাহলে সিএমএম কোর্ট এটি কিভাবে করলো?” প্রশ্ন ‌ওই আইনজীবীর। আইনে সিএমএম কোর্টের এই অনুমতি দেওয়ার কোনও সুযোগ নাই, বলেন তিনি।

ইশরাত হাসান বলেন, “আইন ব্যত্যয় করে যদি কাউকে অ্যারেস্ট করে, তাহলে তা সম্পূর্ণ অবৈধ। বিস্তারিত অর্ডারে যদি দেখা যায় যে আইন বহির্ভূতভাবে তারা এটা করছে, তাহলে ইমিডিয়েটলি তাকে রিলিজ করা উচিৎ। দ্বিতীয়ত, অবৈধ ডিটেনশনের জন্য জড়িতদের তখন আইন বহির্ভূতভাবে একজনকে ধরায় প্রফেশনাল মিসকন্ডাক্টের আওতায় আনা উচিৎ” বলে মন্তব্য করেন আইনজীবী ইশরাত হাসান।

তার মতে, মামলা থাকাবস্থায় কাউকে গ্রেফতার করা এবং মামলা নাই ‒ এমন কাউকে গ্রেফতার করা আলাদা বিষয়। “এখানে স্পষ্টভাবে বলা নেই যে উনি দেশের বিরুদ্ধে কী করছেন। এগুলোর মানুষের সামনে স্পষ্টভাবে আনতে হবে যে, কেন দেশের জন্য এত হুমকিস্বরূপ হয়ে গেল- একটি অনেক বড় বিষয়।”

ডিএমপি’র দেওয়া বিবৃতির বিষয়ে তিনি এও বলেন, “এই জিনিসটা হয়েছে অস্বাভাবিকভাবে। অস্বাভাবিক কোনও ঘটনা ঘটলে এটার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা থাকতে হবে। এটা নিয়ে কোনও লুকোচুরি করা যাবে না। এই বিবৃতি পর্যাপ্ত না… প্রিডিটেনশনের সময় বলছেন যে বাংলাদশের জন্য হুমকিস্বরূপ। পরে অন্য কোনও মামলা দিয়ে দিলে তো হবে না।” এই আইনজীবীএ-ও বলেন, মেঘনা আলমকে আটকের সময় নারী কনস্টেবল ছিল না বা তাকে আটকের আগে তার মেডিকেল টেস্ট হয়েছে কিনা, এগুলোও এখানে গুরুত্বপূর্ণ।

এদিকে, বাংলাদেশে এই বিশেষ ক্ষমতা আইনকে ‘কালো আইন’ হিসেবেও অভিহিত করা হয়। এর আগে বিভিন্ন সময় এই আইনটি অপসারণের দাবি উঠলেও কোনো সরকারই তা করেনি।

কালো আইন বলার কারণ হিসাবে আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেছেন, “এই আইনের অনেক অপপ্রয়োগ হয়। এই আইন বিচারবহির্ভূতভাবে ব্যক্তি স্বাধীনতা হরণ করে থাকে। এটি সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদে বর্ণিত ‘জীবন ও ব্যক্তি-স্বাধীনতার অধিকার’-এর পরিপন্থী।”

এই আইনে রাষ্ট্র-বিরোধী কার্যকলাপের সংজ্ঞা হিসেবে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব এবং প্রতিরক্ষা বিরোধী কার্যকলাপ, বাংলাদেশের সঙ্গে অন্যান্য দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ক্ষতি সাধন, জননিরাপত্তা বিরোধী কাজ করা, জনসাধারণের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের সরবরাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা-সহ নানা বিষয়।

এছাড়াও, জনগণের মধ্যে বা জনগোষ্ঠীর কোনও অংশের মধ্যে ভয়ভীতি সৃষ্টি করা, দেশের আইন ও শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় বাধা দেওয়া এবং দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থের পরিপন্থী কাজ করা রাষ্ট্র-বিরোধী কার্যকলাপের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। মূলত, পাকিস্তানের নিরাপত্তা আইন ১৯৫২, জন নিরাপত্তা অর্ডিন্যান্স ১৯৫৮ এবং ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ তফসিলি অপরাধ (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) আদেশকে প্রতিস্থাপনের জন্য বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালের নয়ই ফেব্রুয়ারি এই আইনটি পাস করা হয়েছিলো। এর উদ্দেশ্য ছিল, বিশেষ ব্যবস্থার মাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী কিছু কার্যকলাপ প্রতিহত করা। একই সাথে কিছু গুরুতর অপরাধের দ্রুত বিচার এবং কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন