ঝিনাইদহের শৈলকুপায় নিষিদ্ধ সংগঠন পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির নেতা হানিফ আলীসহ ৩ জনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় এখনো মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনার এখনো কোনো মামলা হয়নি। তবে এর দায় স্বীকার করেছে আরেক নিষিদ্ধ সংগঠন জাসদ গণবাহিনী। হত্যার রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, পূর্ব বিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ড।
শৈলকুপা উপজেলার রামচন্দ্রপুরে শ্মশানঘাটের মাঠে গোলাগুলি শুরু হয় শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) রাত ৮টার দিকে। গুলির শব্দ থামার পর স্থানীয়রা দেখতে পান, সেচ খালের পাশে পড়ে আছে ৩ জনের মরদেহ। পরে, পুলিশ গিয়ে নিশ্চিত করে, নিহতদের মধ্যে একজন নিষিদ্ধ সংগঠন পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির আঞ্চলিক নেতা হানিফ আলী। এছাড়া নিহত আরেকজন হানিফের শ্যালক লিটন এবং অন্যজনের নাম রাইসুল ইসলাম, তার বাড়ি কুষ্টিয়ায়। এরপর থেকে গ্রামের মানুষের মাঝে আতঙ্কা দেখা দিয়েছে। রাতেই লাশ থানাতে আনা হয়। সকালে থানাতে লাশ দেখতে মানুষের ভিড় হয়।
নিহত হানিফের ছোট ভাই মাজেদুল ইসলাম জানান, সন্ধ্যার দিকে তার ভাই শ্যালক লিটনসহ মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বাড়ি থেকে বের হন। পরে জানতে পেরে রামচন্দ্রপুর গ্রামের শ্মশান ঘাটে গিয়ে ৩ জনের লাশ দেখতে পান। তার ভাই চরমপন্থী দলের সাথে এখন জড়িত নেই। এখন হরিণাকুন্ডু উপজেলা মৎস্যজীবী লীগের সহ-সভাপতি বলে দাবি তার।
আগে হরিণাকুন্ডু শৈলকুপা উপজেলা সীমান্ত এলাক ছিল বিভিন্ন চরমপন্থী দলগুলোর অভয়ারণ্য। এলাকায় ছিল পূর্ববাংলার কমিউনিষ্ট পার্টি ও গণবাহিনীর। ২০০৩ সালে ৫ ডিসেম্বর পার্শ্ববর্তী ত্রিবেনী গ্রামে নদীপাড়ে একসাথে ৫ জনকে হত্যা করা হয়।
শনিবার পুলিশ সুপারের কার্যলয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরাম জাকারিয়া জানান, হত্যার দায় স্বীকার করে পাঠানো ক্ষুদেবার্তা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনজনকে কীভাবে ঘটনাস্থলে আনা হলো তা দেখা হচ্ছে। হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার তাড়াতাড়ি সম্ভব হবে।
দায় স্বীকারের বার্তা নিয়ে ধোঁয়াশা
ঘটনার পরপরই ঝিনাইদহে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠানো হয়। বার্তায় উল্লেখ করা হয়, ‘তিনজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। কালু জাসদ গণবাহিনী।’ তবে ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে এই বার্তা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে যেমন আতঙ্ক ছড়িয়েছে, তেমনি ধোঁয়াশাও তৈরি হয়েছে। কেউ কেউ মনে করছেন, ঘটনা অন্যদিকে মোড় দিতে হয়তো বার্তা পাঠানো হয়েছে।
এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কালুর বাড়ি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আবদালপুর ইউনিয়নের পশ্চিম আবদালপুর গ্রামে। তিনি দীর্ঘ দুই যুগ ধরে এলাকায় থাকেন না। চরমপন্থী সংগঠনের শীর্ষ নেতা। তাঁর একটা নিজস্ব বাহিনী আছে। দীর্ঘদিন ভারতে আছেন। সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন বলেও জনশ্রুতি আছে।