­
­
বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ১৯ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
জাফলং ঘুরতে গিয়ে পানিতে ডুবে প্রাণ গেলো কিশোরের  » «   ১৭ বছর পরে জাতীয় ঈদগাহের ঈদ জামাতে সরকারপ্রধান  » «   ঈদ আসে, গাজায় আনন্দ আসে না  » «   এপ্রিলের মাঝামাঝি দেশে ফিরতে পারেন খালেদা জিয়া  » «   মিয়ানমারে বিধ্বংসী ভূমিকম্পের পরও হামলা চালাচ্ছে জান্তা বাহিনী  » «   ঈদযাত্রা: শুক্র ও শনিবার ঢাকা ছেড়েছে ৪১ লাখ সিমধারী  » «   তিস্তা প্রকল্প নিয়ে ‘ইতিবাচক’, মোংলায় আরেকটি অর্থনৈতিক অঞ্চল করতে চায় চীন  » «   মিয়ানমারে কেন এত বড় বিধ্বংসী ভূমিকম্প, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?  » «   বাংলাদেশে সাজাপ্রাপ্ত উগ্রবাদীদের মুক্তি নিরাপত্তার জন্য ‘মারাত্মক উদ্বেগের’: ভারত  » «   চাঁদ দেখা গেছে, সৌদিতে ঈদ রবিবার  » «   এনসিপি: অম্ল-মধুর একমাস পার, ভোটের পথে প্রস্তুতি কতদূর?  » «   চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ ও ঢাকা ভূমিকম্পের উচ্চ ঝুঁকিতে, ফায়ার সার্ভিসের সতর্কতা  » «   মিয়ানমারে ভূমিকম্প: মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে  » «   এশিয়ার দেশগুলোর ‘যৌথ সমৃদ্ধির পথরেখা’ চাইলেন ইউনূস  » «   বাংলাদেশের কাছে সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র  » «  

প্রবাসীদের যাপিত জীবন ও প্রবাসের সৌন্দর্য



পৃথিবীর সর্বত্র প্রতিদিন নিঝুম সন্ধ্যা নামে, শাশ্বত নিয়মে। পাখিরা নীড়ে ফেরে দিবারাত্রির চক্র মেনে। তেমনিভাবে গত ২৮ ফেব্রুয়ারী শেষ হল বাঙালীর প্রাণের মেলা, অমর একুশে বইমেলা। প্রাণের মেলা শেষে ঘরে ফিরেছেন লেখক, প্রকাশক এবং পাঠকরা। তবে এ ফেরাই শেষ ফেরা নয়, ২০২৪-এর ফেব্রুয়ারিতে আবারও সাজবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, স্টল কিংবা প্যাভেলিয়নে প্রকাশকরা বসবেন বইয়ের পসরা সাজিয়ে। পাঠক আগ্রহচিত্তে আবারও বই কিনতে যাবেন। তবে তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরো এগারো মাস তা কিন্তু নয়, আর বিদায় শেষ বিদায় নয় ! তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে, সারা বছরই অনলাইন বুকশপগুলো থেকে পাওয়া যাবে তাদের পছন্দের বই । আশার কথা, বাঙালীর প্রাণের এই মেলাকে কেন্দ্র করে পতি বছরই বাড়ছে প্রবীণ লেখকদের পাশাপাশি নবীন লেখক-প্রকাশক। শিকড়কে ভুলে না যেয়ে প্রবীণদের পাশাপাশি নবীনদের বরণ করা। এটাই বইমেলার সৌন্দর্যই।

এবারের বইমেলায় প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক ও গীতিকার জমির হোসেনের দ্বিতীয় গ্রন্থ ‘জীবনের যত গান’ প্রকাশিত হয়েছে। ২০২০ সালে একুশে বইমেলায় লেখকের প্রথম গ্রন্থ প্রবাসে ‘মেঘ জোৎস্না’ গ্রন্থটি দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হয়।

এবারের বইটি গীতিকাব্য দিয়ে সাজানো। দেশি-বিদেশি পাঠকের জন্য ইংরেজি ও বাংলা ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। পরে ইতালিয়ানসহ অন্যানো ভাষায় অনুবাদ করার পরিকল্পনা রয়েছে। ফেলে আসা জীবনের অতীত, বর্তমান অনেক স্মৃতি আনন্দ-বেদনা। এমন ভাবনা থেকেই বোধকরি লেখক জমির হোসেন তার দীর্ঘ প্রবাস-যাপনের অভিজ্ঞতা থেকে লিখেছেন জীবনের গান ও প্রবাসের মেঘ-জ্যোৎস্না বই দুটি।

ইউরোপ-বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক জমির হোসেন তার দীর্ঘ প্রবাস জীবনের নানা অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যমে জীবিকার তাগিদে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অবস্থান করা সোয়া কোটি বাংলাদেশির কথা পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন।

তাই দুটো বই সম্পর্কে দুটো কথা লিখতে বসলাম। এর আগে আমি কখনো কোনো  বই নিয়ে লেখার সাহস করিনি। যেখানে একটি পৃষ্ঠা লিখতে শুরু হয় দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম। আমি শুনেছি যারা ‘বই নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা’ করে থাকেন বা লেখেন তারা বই রচয়িতার চেয়ে বেশি পাণ্ডিত্য রাখেন। সাহিত্য সম্পর্কে আমার জ্ঞান খুব সীমিত। কোন সময় ছিল না এবং এখনও নেই। তাই বই-পুস্তক নিয়ে আলোচনা বা সমালোচনা করার সাহস কিংবা শক্তি কোনোটাই আমার নেই।

দীর্ঘকাল প্রবাসে থেকেও মাতৃভূমির সঙ্গে লেখক জমির হোসেনের এক ধরনের নাড়ির টান রয়েছে । তার লেখালেখির বিষয়গুলোও তার প্রমাণ করে। যুগান্তর ও জাগো নিউজের কল্যাণে লেখকের সঙ্গে আমার পরিচয় ইউরোপ পাড়ি দেওয়ার পূর্ব থেকে। লেখক তার প্রবাস জীবনের নানা অভিজ্ঞতা এবং অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যমে জীবিকার তাগিদে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অবস্থান করা সোয়া কোটি বাংলাদেশির কথা কিছুটা হলেও পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন। লেখাগুলো সুপাঠ্য, ভাষা প্রাঞ্জল এবং মার্জিত। লেখার যে বিষয়টা আমাকে অবাক করেছে তা হলো, সামাজিক অসঙ্গতি, হানাহানি-মৃত্যু ইত্যাদি বেশ কিছু বিষয় আলোচনায় নিপুনভাবে তুলে ধরেছেন।

দ্বিতীয় বইটি সম্প্রতি অমর একুশে বই মেলায় প্রকাশিত-  গ্রন্থটির  নাম ‘জীবনের যত গান’।  এটি কোনও গল্প , উপন্যাস বা প্রবন্ধ সংকলন নয়। অনেকটা আত্মজীবনীর মতো।  মূলত  প্রবাসের সুখ-দুঃখ, সুবিধা-অসুবিধা, চাওয়া-পাওয়ার কথা ফুটে উঠেছে। ‘জীবনের যত গান’ বইটি  দেশি-বিদেশি পাঠকের জন্য ইংরেজি ও বাংলা ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে।

লেখকের ভাষায় ‘সুন্দর পরিচ্ছন্ন সমাজ বিনির্মাণে সাহিত্য চর্চার কোনো বিকল্প নেই। আর বই পড়া তার-ই বড় একটি অংশ। পাশাপাশি একটি বই একজন মানুষকে পরিবর্তন করতে পারে খুব সহজে। অসৎ পথের উল্টো দিকে পথচলায়ও সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। তিনি বলেন, শত ব্যস্ত সময়ের ফাঁকে এক একটি লেখার আবিষ্কার।’

আশা করি পাঠকদের ভালো লাগবে।  এই বইয়ের একটি কবিতা এরই মধ্যে গাণ হিসাবে  রেকর্ডিং সম্পন্ন  হয়েছে। খুব শিগগিরই তা শ্রোতারা শুনতে পারবেন। রোমান্টিক ধাচের এ গানের সুর করেছেন তরুণ সুরকার মুরাদ নুর, সঙ্গীত আয়োজনে মুশফিক লিটু এবং গেয়েছেন শিল্পী রুনা বিক্রমপুরী।

‘জীবনের যত গান’  গ্রন্থটির শুভেচ্ছা মূল্য  ২০০ টাকা। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন ইউনুস নাজিম। প্রকাশক   পরিবার পাবলিকেশন্স ।

প্রবাস জীবনের সংকট, আশা-নিরাশা, ভ্রমণ, সাহিত্য-সংস্কৃতি সাবলীলভাবে প্রতিফলিত হয়েছে বই দুটিতে । রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সমাজ জীবন নিয়ে রয়েছে সরল বয়ান।  প্রবাসী জীবনের বৈচিত্র নানাদিক জানতে  বই দুটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে কাজ করবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।

কবির আল মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক, ইউরোপ-বাংলাদেশ প্রেসক্লাব। ইউরোপ প্রতিনিধি ;৫২বাংলা

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন