সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন
“লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব”, ব্রিটেনে বাংলাভাষী সংবাদকর্মীদের সর্ববৃহৎ প্ল্যাটফর্ম। নাম দেখে মনে হতে পারে কেবল লন্ডনে বসবাসকারী সাংবাদিকরা এর সদস্য। আদতে ব্রিটেনের বিভিন্ন শহরের সংবাদকর্মী এই স্বনামধন্য ক্লাবের গর্বিত সদস্য। তাহলে এই ক্লাবের নাম কি হওয়া উচিত ছিল “ইউ কে বাংলা প্রেস ক্লাব” নাকি “বিলেত বাংলা প্রেস ক্লাব”? সে তর্কতে না হয় নাইবা গেলাম। উল্লেখ্য এই ক্লাবের জন্ম ১৯৯৩ সালের ১৭ জুন । বর্তমানে মোট সদস্য সংখ্যা তিনশো আঠারো জন (৩১৮)। ইসি বা কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য সংখ্যা প্রেসিডেন্ট ও জেনারেল সেক্রেটারির পদসহ পনেরো (১৫) জন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রতি দু’বছর পর পর সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার কথা। আমার যদি ভুল হয়ে না থাকে সর্বশেষ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে। বিশ্বব্যাপী “প্যানডেমিকের” কারণে চলতি বছরের জানুয়ারিতে নির্ধারিত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি।
বরাবরই লক্ষ্য করেছি সাধারণ নির্বাচনে দুটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে থাকে। আবির্ভূত হয় পক্ষ ও বিপক্ষ শক্তির। ফলে সাধারণ ভোটাররা পড়ে যান বিপাকে। কারণ দুপক্ষেই থাকেন পছন্দের প্রার্থী। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি এ ধরণের প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতার অবসান হওয়া উচিত। প্যানেলের কারণে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে যোগ্যতা থাকা সত্বেও অতীতে পরাস্ত হতে দেখেছি। প্যানেল প্রথায় পরিবর্তন এনে প্রাথীরা যদি ব্যক্তিগতভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, তাহলে তাদের যোগ্যতা যেমনি পরখ করা সম্ভব হবে তেমনি যোগ্য সাংবাদিক জয়ী হবেন নিশ্চয়ই। যা ক্লাবের জন্য নির্দ্বিধায় মঙ্গল বয়ে আনবে। এখন প্যানেল সিস্টেমের ফলে ইসি বা কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্যদের অনেকেই যোগ্যতার ভিত্তিতে নির্বাচিত না হয়ে বরং ভোটের সংখ্যার ভিত্তিতে নির্বাচিত হচ্ছেন। ক্রমেই ভোট হয়ে উঠেছে মুখ্য বিষয়ে আর প্রার্থীদের গুনাগুন পরিণত হয়েছে গৌণ বিষয়ে।
এখন প্রশ্ন উঠতে পারে কারা প্রার্থী হবার যোগ্যতা রাখেন অথবা ইসি / কার্য নির্বাহী কমিটির পদের জন্য কাদের প্রার্থীতাকে গ্রহণ করা উচিত? সাংবাদিকতায় বত্রিশ(৩২) বছরের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, (১) সাংবাদিক বা সংবাদ কর্মী হিসেবে যারা সত্যিকারভাবে প্রতিষ্ঠিত, (২) যাদের সাংবাদিকতায় তথ্য ও সত্যনিষ্ঠতা, ভারসাম্য এবং স্বচ্ছতা রয়েছে, (৩) যারা নির্ভীক সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী,(৪) যারা মনে করেন সমাজ ও দেশের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে, (৫) যারা পত্রিকায় নিয়মিতভাবে লেখালেখি করেন, রিপোর্ট করেন, কলাম লেখেন, (৬) যারা সংবাদ ও সাংবাদিকতা সম্পর্কে বোধ সম্পন্ন, (৭) যারা সংবাদের চুলচেঁড়া বিশ্লেষণ করার জ্ঞান রাখেন, (৮) যাদের সাংবাদিকতার এথিক্স এবং মূল্যবোধ প্রগাঢ়,(৯) পারিপাশ্বিক অবস্থা সম্পর্কে যারা যথেষ্ট সজাগ, (১০) যাদের সব ধরণের সংবাদের ওপর কড়া নজর থাকে, (১১) যারা প্রতিনিয়ত বিশ্বের কোথায় কি ঘটছে সে বিষয়ে ওয়াকিবহাল, (১২) যারা অভিজ্ঞ ও নিয়মিতভাবে টিভি সাংবাদিকতা করছেন, (১৩) যারা সাধারণ সদস্যদের সম্মান জানাতে এবং তাঁদের মতামতকে অগ্রাধিকার দিতে বদ্ধপরিকর, (১৪) যাদের শিক্ষাগত ও পেশাগত যোগ্যতা রয়েছে, (১৫) সর্বোপরি যাদের যথাযথ ভাষা জ্ঞান রয়েছে, শুধুমাত্র তাঁরাই ইসি / কার্য নির্বাহী কমিটির প্রার্থী হবার মূল দাবিদার। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে নির্বাচনে জয়ী হবার জন্য প্রেস ক্লাব কর্তৃপক্ষ কোয়ালিটির পরিবর্তে কোয়ান্টিটির উপর জোর দিচ্ছে। অর্থাৎ যোগ্যতা থাকুক বা না থাকুক ভোটার সংখ্যা বাড়াতে হবে এবং যে কোনো মূল্যেই হোক জয়ী হতে হবে। যা সত্যিকার অর্থেই উদ্বেকজনক এবং পীড়াদায়কতো বটেই।
এ প্রসঙ্গে সপ্তাহখানেক আগে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব আয়োজিত ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের বিষয়ে কিছু আলোকপাত করতে চাই। অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে “বাংলাদেশের ৫০ বছর, প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তি” নিয়ে সিনিয়র সাংবাদিক উদয় শঙ্কর দাসের প্রাণবন্ত উপস্থাপনা আমাকে দারুণভাবে মোহিত করেছে। তেমনি উপভোগ করেছি তিন মুক্তিযোদ্ধার স্মৃতিচারণ। ক্লাবের জেনারেল সেক্রেটারী মুহাম্মদ জুবায়ের এর সাবলীল উপস্থাপনা এবং অনুষ্ঠানের শেষে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ এমদাদুল হক চৌধুরীর চমৎকার সমাপনী বক্তব্য আমার খুব ভালো লেগেছে। এছাড়া গবেষক ফারুক আহমেদের বক্তব্য থেকেও অনেক অজানা তথ্য জানতে পেরেছি। তবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের অংশটুকু আমি পুরোপুরি উপভোগ করতে পারিনি। যাদের উপর দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল গান, কবিতা আবৃত্তি আয়োজনের, তারা যদি এই বিশেষ ক্ষেত্রগুলোতে সাধারণ সদস্যের মধ্যে যারা অভিজ্ঞ ও আগ্রহী তাদের সমন্বয়ে একটি টিম গঠন করে কাজ করতেন, তাহলে আরো উন্নতমানের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপহার দেয়া সম্ভব হতো। তাদের উচিত ছিল ব্রিটেন বা বাংলাদেশের প্রথিতযশা কণ্ঠ শিল্পীর কণ্ঠে গান পরিবেশনের ব্যবস্থা করা। আগে থেকে আবৃত্তি শিল্পীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা। যখন উপস্থাপক আবৃত্তি করার জন্য আমার নাম ঘোষণা করলেন, তখন আমি রীতিমতো একদিকে যেমনি বিব্রত বোধ করছিলাম অন্যদিকে তেমনি বিরক্ত হয়েছিলাম। কারণ এর আগে এ ব্যাপারে কেউ আমার সাথে যোগাযোগ করেননি। শুধু তাই নয়, অনুষ্ঠানের পরে আমার সাথে আরো তিনজন সদস্যের কথা হয়েছে, যারা প্রত্যেকেই ব্রিটেনে অত্যন্ত জনপ্রিয় আবৃত্তি শিল্পী। তাঁদের সঙ্গেও আগে যোগাযোগ করা হয়নি। যা সত্যি দুঃখজনক। তবে ডক্টর জাকি রেজোয়ানা আনোয়ারের আবৃত্তি অসাধারণ হয়েছে। অন্যদিকে মুনিরা পারভীন – বীরঙ্গনা প্রভা রানীকে যেভাবে উপস্থাপন করেছিলেন, চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পার হয়ে গেলেও, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে আজও প্রভা রানীর মতো বীরঙ্গনাকে পাঞ্জাবীর বৌ আর তাঁর ছেলে কাজলকে পাঞ্জাবীর ছেলে বলে অপবাদ শুনতে হয়। ধিক্কার রইলো তাদের প্রতি যারা বীরঙ্গনা প্রভা রানীদের সম্মান করতে শেখেনি। এসব তথাকথিত শিক্ষিত মূর্খদের চিহ্নিত করে একঘরে করা উচিত।
সে যাই হোক ক্লাবের কর্ণধারদের উচিত ছিল বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের জনপ্রিয় বক্তাদের কাউকে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী নিয়ে কথা বলার জন্য এ অনুষ্ঠানে যুক্ত করা। অনুষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্তদের অভিজ্ঞতা, যোগ্যতা আর পরিকল্পনার অভাব না থাকলে আরো উন্নত মানের অনুষ্ঠান উপহার দেয়া যেতো বলে আমার এবং অন্যান্য সদস্যের বিশ্বাস।। আশা করি আগামীতে কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা এসব বিষয়ে আরো মনোযোগী হবেন। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য কেউ অনুষ্ঠান আয়োজনে বিশ্বব্যাপী “প্যানডেমিকের” অজুহাত দেখালে তা ধোপে টিকবে না। বরং এই “প্যানডেমিকের”সময় মানুষের হাতে অফুরন্ত সময় রয়েছে। কেননা অনেকেই অফিসে না গিয়ে বাড়িতে বসে কাজ করছেন। কারো বাড়িতে গিয়ে সামাজিকতা রক্ষা করতে হচ্ছে না। বাইরে গিয়ে বন্ধু বা অন্য কারো সাথে আড্ডা দেয়া সম্ভব না। তাই তাড়াহুড়া না করে সময় নিয়ে অনুষ্ঠানটি সাজানো যেতো বলে আমার সঙ্গে আশা করি অনেকেই একমত হবেন।
সম্প্রতি ইমেইলের মাধ্যমে ক্লাবের প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারি ও ট্রেজারার স্বাক্ষরিত একটি চিঠি আমি পেয়েছি। যাতে কোভিড – ১৯ রেস্ট্রিকশন রুলস এবং লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের ভবিষ্যৎ কর্মতৎপরতার কথা সবিস্তারে উল্লেখ করা হয়েছে। চিঠিতে সাধারণ নির্বাচনের তারিখ ও অন্যান্য বিষয়ে সাধারণ সদস্যদের অবহিত করার বিষয়ে আপডেট করতে ১৫ জুলাই পর্যন্ত অর্থাৎ সাড়ে তিনমাস সময় চাওয়া হয়েছে। এর জবাবে ক্লাবের প্রাক্তন সভাপতি সৈয়দ নাহাস পাশা ক্লাবের “ওয়াটসআপ গ্রূপে” একটি খোলা চিঠি পাঠিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেছেন যে, ক্লাবের সাধারণ সদস্যদের সঙ্গে আলাপ না করে এ ধরনের একচ্ছত্র সিদ্ধান্ত কার্যকরী কমিটি নিতে পারেন না। তিনি আরো উল্লেখ করেছেন ভুলে গেলে চলবে না যে, সাধারণ সদস্যদের ভোটে আপনারা নির্বাচিত হয়েছেন। তাহলে দায়িত্বশীলতার প্রশ্নটি কি বড়ো হয়ে যাচ্ছে না? জনাব পাশা যুক্তি দিয়ে দেখিয়েছেন, ৬ মে লন্ডন মেয়র, রেফারেন্ডাম, লোকোল অথরিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে কেনো ক্লাবকে সিদ্ধান্ত জানাতে ১৫ জুলাই অবধি অপেক্ষা করতে হবে। কয়েকজন সাধারণ সদস্য তাঁর যুক্তির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। আমি এখানে একটি উদাহরণ দিতে চাই। “কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন” ১৯ ও ২০ মার্চ ভার্চুয়ালি দুদিনব্যাপী কনফারেন্সের আয়োজন করেছিল। দিল্লি থেকে সরাসরি পরিচালিত কনফারেন্সে চুয়ান্নটি (৫৪)কমনওয়েলথভুক্ত দেশের সাংবাদিক অংশ নিয়েছিলেন। কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করার সৌভাগ্য আমারও হয়েছিল। শুধু তাই নয়, আগামী ১১ এপ্রিল “কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন” ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এর আন্তর্জাতিক কমিটি গঠনের লক্ষ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে যাচ্ছে। আমার প্রশ্ন “কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন” এর মতো আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি বড়ো মাপের সংগঠন যদি ভার্চুয়ালি তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারে, তাহলে লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের মতো অপেক্ষাকৃত একটি ছোট আকারের সংগঠন কেনো সময় ক্ষেপন না করে ভার্চুয়ালি সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন করতে পারছে না? কেনো বিদ্রোহী সদস্যদের প্রশ্নের সমুচিত জবাব দিচ্ছে না?
তবে এরইমধ্যে “ওয়াটসআপ গ্রূপে” সেক্রেটারি মুহাম্মদ জুবায়ের, প্রেসিডেন্ট ও ট্রেজারারের পক্ষে “খোলা চিঠির” প্রাপ্তি স্বীকার করেছেন। কারো কারো ধারণা, যেকোনো ধরণের বিভ্রান্তি এড়াতে সময়মতো খোলা চিঠির উত্তর সাধারণ সদস্যদের সাথে শেয়ার করলে কারো মনে কোনো রকমের সংশয় আর থাকবে না।তবে আমার দেয়া উদাহরণ পড়ে মনে করার কোনো কারন নেই যে, আমি সৈয়দ নাহাস পাশার খোলা চিঠিকে সমর্থন করছি। আমি এও মনে করি, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক জনাব পাশা খোলা চিঠি না দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সরাসরি ক্লাবের প্রেসিডেন্ট বরাবর যদি চিঠি লিখতেন, তাহলে কারো মনেই কোনো ধরণের ক্ষোভ বা অসন্তোষ জমা হতো না।
যেহেতু আমাদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে বর্তমান ইসি বা কার্যকরী কমিটি গঠিত হয়েছে, তাই আমাদের দায়িত্ব হবে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া পর্যন্ত কাজ চালিয়ে নেয়ার জন্য তাদের পূর্ণ সহায়তা করা। এখন কাদা ছোড়াছুঁড়ির সময় না। পরিশেষে বলবো, অনেকের মতে লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের একটি “থিঙ্ক ট্যাঙ্ক” বা “নিরপেক্ষ অবজার্ভার গ্রূপ” থাকা দরকার। যারা ক্লাবের কোনো নির্বাচনে অংশ নেবেন না। কোনো প্রার্থীকে সমর্থন করবেন না। ইসি বা কার্যকরী কমিটির কর্মতৎপরোতাকে খুব কাছ থেকে নির্মোহ ও নিরপেক্ষভাবে পর্যবেক্ষন করবেন এবং সংকটময় মুহূর্তে ক্লাবের হাল ধরবেন।গত নির্বাচনের সময় এবিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল, কিন্তু আজও পর্যন্ত তা আমলে নিতে দেখলাম না। সে সাথে আরো বলবো ক্লাবের সদস্যদের মাঝে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ থাকা অপরিহার্য। প্রয়োজন ঈর্ষাকাতরতা থেকে নিজেদের মুক্ত রাখা। স্মরণ রাখা দরকার নির্বাচনের পূর্বে প্রতিশ্রূতি দিয়ে তা পরবর্তীতে পালন না করলে নেতৃত্বের প্রতি সাধারণ সদস্যদের সন্দেহ চলে আসা স্বাভাবিক। একজন আরেকজনের কাছ থেকে ভালো কিছু জানার ও শেখার প্রবণতা আমাদের মাঝে থাকা দরকার। ব্যক্তিগতভাবে কাউকে আক্রমণ না করে প্রয়োজনবোধে গঠনমূলক সমালোচনা করা যেতে পারে। অনেকের মতে ক্লাবের অনুষ্ঠান শুরুর আগে ও পরে আঞ্চলিক ভাষায় কুশল বিনিময় করা যেতেই পারে। তবে মূল অনুষ্ঠান চলাকালীন আমাদের “প্রমিত বাংলায়” কথা বলা উচিত। আমি ব্যক্তিগতভাবে আঞ্চলিক ভাষার বিরোধী নই। আমার পরিবারে আমরা সিলেট ও চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করে থাকি। বিলেত প্রবাসে নতুন প্রজন্মের বাঙালি তরুণ – তরুণীদের কথা বিবেচনায় এনে বাংলা ভাষার প্রচার ও প্রসারে সংবাদ কর্মীরা পারেন মুখ্য ভূমিকা পালন করতে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা যখন প্রবাসে বাংলা টিভি চ্যানেলগুলি অন করি তখন দেখি, অধিকাংশ উপস্থাপক – উপস্থাপিকা আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলছেন। একটি চ্যানেলেতো ঢাকা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় প্রতি সপ্তাহে অনুষ্ঠান প্রচারিত হচ্ছে। এধরণের অনুষ্ঠান আমাদের সাময়িক আনন্দ দিলেও আমাদের অজান্তেই বাংলা ভাষার প্রসারে কতখানি ক্ষতিসাধন করে চলেছে তাকি আমরা অনুধাবন করতে পারছি? সাংবাদিক বন্ধুরা কি এ নিয়ে কথা বলতে বা লেখালেখি করতে এগিয়ে আসবেন?
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন