কবে নাগাদ তারা দেশে ফেরত আসতে পারবেন তাও নিশ্চিত করে বলতে পারছে না কেউ। এ অবস্থায় আন্দোলনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন লেবাননে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা।আগামী ১৪ ডিসেম্বর রোজ সোমবার বৈরুতে বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। আউট পাসের দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন তারা। লেবাননের আল কলা ব্রিজের নিচে জমায়েত হবেন তারা। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে সাফা রাতে যাবেন তারা। পরে বৈরুতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ঘেরাও করবেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
এদিকে নজিরবিহীনভাবে লেবাননের মুদ্রাস্ফীতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ডলারের বিপরীতে লেবানিজ পাউন্ডের ভয়াবহ দরপতন অব্যাহত রয়েছে। ডলারের আন্ত:প্রবাহ কমে যাওয়ায় লেবাননের কেন্দ্রীয় ব্যাংক জ্বালানি, গম এবং ওষুধ এবং কিছু প্রাথমিক পণ্য আমদানি করতে বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহের জন্য অবনতিশীল রিজার্ভ ব্যবহার করেছে।
ভর্তুকি শেষ হওয়ার এই খবরে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। কারণ সংকট দেশটির অর্ধেক মানুষকে দরিদ্র করে দিয়েছে। গভর্নর মঙ্গলবার বলেন, দুই মাসের ভর্তুকি দেয়ার মতো অর্থ আমাদের রয়েছে। দেশটিতে এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে সরকারের দেয়া ভর্তুকিও শেষ হতে চলেছে।
মহামারি করোনা এবং দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক আর অর্থনৈতিক সংকটে বেসামাল লেবাননের শ্রমবাজার। দেশটিতে তাই কাজ করে পর্যাপ্ত আয় করতে পারছেন না প্রবাসী বাংলাদেশিরা। খেয়েপড়ে থাকাই যেখানে দুরূহ, সেখানে দেশে টাকা পাঠানোর কোনো সুযোগই নেই তাদের। এতে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন প্রায় এক লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি।
এদিকে, অর্থসংকট ও টিকিটের উচ্চমূল্যের কারণে দেশেও যেতে পারছেন না তারা। তাই আবারও বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে দেশে ফেরার আবেদন জানিয়েছেন প্রবাসীরা। পাশাপাশি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণে বৈরুতে সোমবার বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন প্রবাসী শ্রমিকরা।
প্রবাসী বাংলাদেশিরা একদিকে প্রায় সাত-আট মাস ধরে কোনো কাজ করতে পারছেন না, অন্যদিকে টাকার মূল্য কমে গেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন তারা । তাই সরকারের কাছে দেশে ফেরার আকুতি তাদের।
অন্যথায় দাবি পূরণে মাঠে নামার বিকল্প দেখছেন না প্রবাসীরা। বলছেন, আমাদের কাজের মূল্যয়ন করা হয় না। এসব নিয়ে আমরা আগেও কথা বলেছি দূতাবাসে কিন্তু প্রতিবারই আমাদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
দেশটিতে দেড় লাখের মতো বাংলাদেশি বাস করে। এর মধ্যে প্রায় ৪০ হাজার রয়েছেন কাগজপত্রহীন। আগস্টে বৈরুত বিস্ফোরণ আর সরকার পরিবর্তনের পর আরও প্রকট হয়েছে সংকট।
স্বেচ্ছায় দেশে ফিরতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন হাজারো লেবানন প্রবাসী বাংলাদেশি। মূলত কাজের অভাবেই দেশে ফিরছেন তারা। দেশ থেকে টাকা নিয়ে চলতে হচ্ছে অনেক প্রবাসীকে। তবে বৈধ কাগজপত্র না থাকায় দেশে ফিরতে পারছেন না এসব প্রবাসী।
লেবাননে অভ্যন্তরীন সমস্যার কারণে ২০১৯ সাল থেকে দেশটির অর্থনীতি ভেঙ্গে পড়ায় এর বিশাল প্রভাব পড়েছে প্রবাসীদের উপর।