রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
বাংলাদেশে ভ্রমণে সতর্কর্তা যুক্তরাষ্ট্রের, পার্বত্য অঞ্চলে নিষেধাজ্ঞা  » «   যুক্তরাজ্যে বিরল চিকিৎসা কীর্তি, ২বার ভূমিষ্ঠ হলো একই শিশু  » «   সিলেট থেকে কার্গো ফ্লাইটের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু ২৭ এপ্রিল  » «   যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিটেন্স বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি, কমেছে আমিরাত থেকে  » «   পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিবকে কী বললো ঢাকা?  » «   বিয়ানীবাজার জনকল্যাণ সমিতি ইউকের উদ্যোগে ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত  » «   নির্বাচনের জন্য জামায়াত আমিরের ৩ শর্ত, ফেব্রুয়ারি ২৬-এর সময়সীমা কঠিন নয়  » «   ইইউর ‘নিরাপদ’ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ : কঠিন হবে রাজনৈতিক আশ্রয়  » «   লন্ডনে খালেদা-তারেকের সাথে জামায়াত আমিরের বৈঠক, দুই দল কী বলছে?  » «   উজানে ‘মেগা ড্যামের’ ধাক্কা সামলাতে দিল্লি-ঢাকা-থিম্পুকে জোট বাঁধার ডাক  » «   রাজনীতিতে আসার সিদ্ধান্ত ঠিক ছিলো, বিশ্বাস করেন সাকিব  » «   নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক, ‘একেবারেই সন্তুষ্ট নয়’ বিএনপি  » «   গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়ালো ৫১ হাজার  » «   দেশের সব মসজিদে দুপুর দেড়টায় জুমার নামাজ আদায়ের নির্দেশনা  » «   ট্রাম্প ও শির যুদ্ধ প্রস্তুতি কী বার্তা দিচ্ছে বিশ্বকে  » «  

ডাক্তার সমাচার
রম্য



ক্রিকেটার তামিম ইকবালের হার্ট এট্যাক এবং তারপর সাভারের একটি হাসপাতালে তার সফল চিকিৎসা সেবা নিয়ে দেশব্যাপী বলা যায় একটা তোলপাড়ই হয়ে গেল। দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা যেমনই হউক আমাদের ডাক্তার এবং মেডিক্যাল স্টাফরা অপ্রতুল সুযোগ সুবিধা নিয়ে ও রিক্স ম্যানেজমেন্টে পৃথিবীর যে কারো চাইতে কম নয় বরং কিছু ক্ষেত্রে এগিয়ে তারই এক নজির হয়ে রইল তামিম কেস।

এবার ঈদ উপলক্ষে ডাক্তারদের নিয়ে কিছু হাস্যরস করে নিরানন্দের এই নগরে আনন্দ খুজিঁ একসাথে।

যে কোন পেশাজীবীর তুলনায় নিজের আয় সঠিক রেখেও সবেচেয়ে বেশি মানবসেবা দিতে পারেন এক মাত্র ডাক্তাররা। আর এটাই বোধ হয় একমাত্র পেশা যেখানে নেয়ার কিছুই নেই তবে দেয়ার আছে অনেক কিছুই।

অন্যান্য পেশাজীবীদের তুলনায় ডাক্তারদের নিয়ে লেখা, রম্য বা সমালোচনা একটু কমই হয় সম্ভবত ভয় থেকেই। কারণ জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত একমাত্র ডাক্তারদের সামনেই সবাইকে দাঁড়াতে বা বসতে হয় নিরব ও একই সাথে অসহায়ত্ব নিয়ে।

এই ফাঁকে  একটি চীনা গল্প বলে নেই- কাঠ মাথায় রাস্তার উল্টোদিক দিয়ে আসা এক ডাক্তার সাহেবের সঙ্গে ধাক্কা খান একজন কাঠুরিয়া। ডাক্তার সাহেব আস্তিন গুটাতে লাগলেন- ঘুষি মেরে কাঠুরিয়াকে শিক্ষা দেয়ার জন্য।

কাঠুরিয়া নিজের ভুল বুঝতে পেরে রাস্তার মধ্যেই হাঁটু ভেঙে বসে পড়ে ডাক্তারের পায়ে পড়ে মাফ চাচ্ছিলেন।

পাশ দিয়ে একজন জ্ঞানী লোক চলতে চলতে মুচকি হেসে মন্তব্য করলেন,’ডাক্তারদের হাতে পড়ার চেয়ে পায়ে পড়া অনেক ভাল।’

বুঝতেই পারছেন মন্তব্যটা কি অর্থে।

দার্শনিক ভলটেয়ার এর বিশ্লেষণ হচ্ছে- ‘ডাক্তাররা এরূপ এক ধরনের মানুষ, যারা এমন সব ঔষধ পথ্যের নির্দেশ দেন যেগুলি সম্পর্কে তারা খুব অল্পই জানেন এবং এমন লোকদেরকে সেই রোগের ঔষধ দেন যাদের সম্পর্কে তারা কিছুই জানেন না”।

অন্যদিকে বেঞ্জামিন ফ্রাংলিন সোজা সাপ্টা বলে দিয়েছেন, গড হিলস এন্ড ডক্টর টেকস দ্য ফি অর্থাৎ কিনা ডাক্তাররা এম্নিতেই ফি নিয়ে নেন। পেশাজীবীদের তুলনায় ডাক্তারদের রসবোধ মোটেই কম নয়। প্রমাণ চান! পড়ুন জোকস দুটি।

এক.

ডাক্তার এক মুমূর্ষু রোগীকে ট্রলিতে নিয়ে উদ্বিগ্ন ভাবে ছুটে চলছেন-

রোগী:ডাক্তার সাব, আমাকে কোথায় নেয়া হচ্ছে?

ডাক্তার: আপনাকে মর্গে নেয়া হচ্ছে।

রোগী: কিন্তু আমি তো এখনও মারা যাইনি!

ডাক্তার: কেন? আমিও তো এখনও মর্গে পৌঁছাইনি!

দুই.

প্রসূতি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার অনেকক্ষণ ধরে কোন এক মেয়েকে পরীক্ষা করে মন্তব্য করলেন-

ডাক্তারঃ মিসেস সোমা, আপনার জন্য একটি সুসংবাদ আছে। চরম বিরক্ত হয়ে মেয়েটি বলল মিসেস নয়, মিস সোমা বলুন।

ডাক্তারঃ ও ক্ষমা করবেন। আপনাকে একটা দুঃসংবাদ দিচ্ছি…

তবে রোগী আর ডাক্তারদের মধ্যে সবচেয়ে বড় দেয়াল বোধ হয় ডাক্তারদের হাতের লেখা। ফার্মেসীর লোক ছাড়া ডাক্তারদের হাতের লেখা পাঠোদ্ধার করা প্রায় অসম্ভব।

একবার নাকি এক লোক তার পরিচিত এক ডাক্তারকে রাত্রের খাবারের দাওয়াত করেছিলেন। ডাক্তার সাহেব দাওয়াত রাখলেও যথাসময়ে আসতে পারবেন না দেখে লোক মারফত একটা চিঠি লিখে পাঠালেন ভদ্রলোকের নিকট।

কিন্তু ঐ মেজবান ডাক্তার সাহেবের দুর্বোধ্য হাতের লেখা পড়তে পারছিলেন না বিধায় অন্য এক বিজ্ঞ লোক পরামর্শ দিলেন আপনি ফার্মেসীতেই গিয়ে দেখুন। ফার্মেসীর লোকেরা ডাক্তারের লেখা সহজেই পড়তে পারেন।

সেই সূত্র ধরে ভদ্রলোক নিকটস্থ ফার্মেসীতে চিঠিখানা নিয়ে গেলে ওরা এক নজর চোখ বুলিয়েই ভদ্রলোকের হাতে দু’টো ঘুমের বড়ি ধরিয়ে দিল।

কথিত আছে, এক আমেরিকান ডাক্তার নাকি ডাক্তারি পেশায় সাফল্য অর্জন করতে না পেরে ব্যাংক ডাকাতি করতে গিয়ে নাকি সেখানেও চরমভাবে ব্যর্থ হন। কারণ কাস্টমার সেজে ব্যাংকে ঢুকে ক্যাশিয়ারকে যে হ্যান্ডস -আপ লেখা নোটস দিতেন তা ব্যাংকের লোকেরা পড়তে পারত না।

তবে ডাক্তারি এমন এক পেশা যেখানে যোগ্যতার অভাব হলেও অর্থ প্রাপ্তির সম্ভাবনা একেবারে নষ্ট হয় না। আর বর্তমানে আমাদের দেশে তো প্রত্যেক ডাক্তারই কোন না কোন ক্লিনিক, প্যাথলজি সেন্টার এবং ঔষধ কোম্পানির সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত।

তবে বলা হয়-‘অপারেশনের সময় ডাক্তাররা মুখ সাদা কাপড় দ্বারা আবৃত রাখেন এজন্য যে, অপারেশনে ভুল করলেও যেন পরবর্তীতে রোগী কিংবা রোগীর আত্মীয়রা তাদেরকে রাস্তাঘাটে চিনতে না পারেন।’

আর অধিকাংশ ক্ষেত্রে চিকিৎসার নামে যেভাবে অপচিকিৎসা চলছে তাতে আমাদের রোগীরা অধিক মাত্রায় বিদেশমুখী হচ্ছেন এটা যেমন ঠিক তেমনি রোগীদের আস্থা ফিরিয়ে এনে দেশেই যে ভালোমানের চিকিৎসা  পাওয়া যায় তা নিশ্চিত করার দায়িত্বও কিন্তু ডাক্তারদেরই উপরে। মানব সেবার মহান সুযোগ, অর্থ আর অমানবিকতার জন্য যেভাবে কিছু ডাক্তার নষ্ট করছেন তাতে সৃষ্টি হচ্ছে এক বিরাট মানবিক শূন্যতার।

প্রাসঙ্গিক জোকসটি শেয়ার করতে মন চাইছে-

ডাক্তার মুমূর্ষু রোগীকে, এই কষ্টটুকু সহ্য করুন, কাল আবার আপনাকে দেখব…

রোগীঃ কাল আপনি অবশ্যই আমাকে দেখবেন, কিন্তু আমি কি কাল আপনাকে দেখতে পাব।

লেখাটি শেষ করছি এখানেই, তবে পাঠকদের জন্য আরও একটি জোকস শেয়ায় করার লোভ সামলাতে পারছি না। আর ডাক্তার বন্ধুদের আন্তরিক অনুরোধ- আপনাদের হাতে আমাদের পড়তেই হবে সুতরাং আপনাদের হাতটি আমাদের প্রতি বাড়ান পরম মমতা আর মানবিকতায়।

ডাক্তারঃ আমি বলছিলাম না আপনি দু’ মাসের মধ্যে হেঁটে আমার চেম্বারে আসতে পারবেন?

রোগীঃ হ্যাঁ, তা বলেছিলেন ঠিকই। কারণ আপনার বিল মেটাতে গতকাল আমার গাড়ীখানাও বিক্রি করতে হয়েছে।

ফুজেল আহমদ :  রম্য লেখক। টরন্টো, কানাডা।

৩ এপ্রিল,২০২৫

আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের মিল আর গুজব রাজনীতি

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

"এই বিভাগে প্রকাশিত মতামত ও লেখার দায় লেখকের একান্তই নিজস্ব " -সম্পাদক

সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন