বায়ান্নর ২১ শে ফেব্রুয়ারিতে তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকের চাপিয়ে দেয়া রাষ্ট্রভাষা উর্দূর পরিবর্তে বাংলার দাবিতে ঢাকার রাজপথ রঞ্জিত হয়েছিল। শহীদ হয়েছিলেন রফিক, শফিক, সালাম, বরকত, জব্বারসহ নাম না জানা অগণিত তরুণ। সেই সময়েই রচিত হয়েছিল মায়ের ভাষার অধিকার ও রাষ্ট্রভাষা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বাঙালি জাতির বীরত্বের গৌরবগাথা।
সাত দশক পরে এসে ভাষার প্রতি মমতা, ভালোবাসা আর তার জন্য আত্মত্যাগের সেই মহিমা মর্মে মর্মে উপলব্ধি করছে পাকিস্তানি শাসকরা। যে রাষ্ট্র একদিন মাতৃভাষার অধিকার ছিনিয়ে নিতে বাঙলার মানুষকে রক্তাক্ত করেছিল সেই পাকিস্তানেই এখন একুশের চেতনার উত্তাপ।
ভাষা শহীদ দিবসকে বিশ্বের অন্যসব দেশের মতোই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করছে পাকিস্তানের নাগরিকরা। মাতৃভাষার গুরুত্বকে প্রাধান্য দিয়ে সেখানে সেমিনার, আলোচনা সভা, উৎসব ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের আয়োজন করা হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দিবসটি পালন করছে। স্মরণ করছে বায়ান্নর বাঙালির চেতনাকে।
‘বাংলা’ ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে প্রাণদানের সেই অনন্য নজির লেখা হয়েছে জাতিসংঘে। ১৯৯৯ সালে স্বীকৃতি পেয়েছে জাতিসংঘের। ইউনেস্কোর সাধারণ সভায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ঘোষণা দেয়া হয়। এর পর থেকে প্রতিবছর ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে।
গেল কয়েক বছর ধরেই পাকিস্তানে শ্রদ্ধার সঙ্গে ভাষা শহীদের স্মরণ করা হচ্ছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে এবারও ইসলামাবাদে পাকিস্তান ন্যাশনাল কাউন্সিল অব আর্টস (পিএনসিএ) ২১ থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা সাহিত্য উৎসবের আয়োজন করেছে। ইসলামাবাদের লোক ভিরসা জাদুঘর আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।