সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দী মারা গেছেন। বাংলাদেশ সময় আজ ৭ মে মঙ্গলবার ভোর সাড়ে চারটায় তিনি না ফেরার দেশে চলে যান।
বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুর নেওয়ার দুই দিন পর সুবীর নন্দীর শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতি হলেও এরপর অবনতি হতে থাকে। শনিবার ও রোববার পরপর দুইদিন হার্ট অ্যাটাক হয় তার। হার্টে চারটা ব্লক ছিল। রোববার সকালে চারটা রিং পরানো হয়।
ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায়ও একবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। সব মিলিয়ে তাঁর শারীরিক অবস্থা অবনতির দিকে যাচ্ছিল। উন্নত চিকিৎসার জন্য সাত দিন আগে সিঙ্গাপুর নেওয়া হয় একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দীকে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের এমআইসিইউ-তে চিকিৎসাধীন ছিলেন বরেণ্য এই সংগীতশিল্পী।
১৮ দিন ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ৩০ এপ্রিল সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয় সুবীর নন্দীকে। সেদিন বিকেলেই সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে বরেণ্য এই শিল্পীর চিকিৎসা শুরু হয়।
সুবীর নন্দী ১২ এপ্রিল পরিবারের সবাইকে নিয়ে মৌলভীবাজারে আত্মীয়ের বাড়িতে যান। সেখানে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। ১৪ এপ্রিল ঢাকায় ফেরার ট্রেনে ওঠার জন্য বিকেলে মৌলভীবাজার থেকে পরিবারসহ শ্রীমঙ্গলে আসেন। পরে তিনি ট্রেনে অসুস্থ হয়ে পড়লে একজন চিকিৎসকের পরামর্শে সুবীর নন্দীকে নিয়ে পরিবারের সদস্যরা ঢাকার বিমানবন্দর স্টেশনে নেমে যান। ওই দিনই রাত ১১টার দিকে তাঁকে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। সেখানে তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। সুবীর নন্দী দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ও হার্টের অসুখে ভুগছিলেন।
বরেণ্য সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দী দীর্ঘ ৪০ বছরের ক্যারিয়ারে গেয়েছেন আড়াই হাজারেরও বেশি গান। বেতার থেকে টেলিভিশন, তারপর চলচ্চিত্রেও উপহার দিয়েছেন অসংখ্য জনপ্রিয় গান। ১৯৮১ সালে তাঁর প্রথম একক অ্যালবাম ‘সুবীর নন্দীর গান’ বাজারে আসে ডিসকো রেকর্ডিংয়ের ব্যানারে। সুবীর নন্দী প্রথম গান করেন ১৯৭৬ সালে আবদুস সামাদ পরিচালিত ‘সূর্যগ্রহণ’চলচ্চিত্রে। চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করে চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন তিনি। আর চলতি বছরে সংগীতে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করেছে কণ্ঠশিল্পী সুবীর নন্দীকে।