ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ (ব্রেক্সিট) নিয়ে ব্রিটিশ সরকার হিমশিম খাচ্ছে পার্লামেন্টে। গত ২৯ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রেক্সিট কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও চুক্তি পাসে ব্যর্থ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ছুটোছুটি করছেন। এমন অচলাবস্থার মধ্যেই ব্রিটিশ পাসপোর্ট থেকে বাদ পড়ল ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাম।
বিবিসির সচিত্র এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, নতুন ব্রিটিশ পাসপোর্টের কভারে আর আগের মতো ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাম থাকছে না। গত ৩০ মার্চ থেকে বার্গান্ডি লাল রংয়ের নতুন এ পাসপোর্ট ইস্যু শুরুও হয়ে গেছে।
গত ২৯ মার্চ যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে যাওয়ার (ব্রেক্সিট) কথা ছিল। কিন্তু ব্রেক্সিট কার্যকর না হলেও ব্রিটিশ পাসপোর্টে তার বিচ্ছেদের কাজ শুরু হয়েছে গেছে। তবে কিছু কিছু মানুষ পুরোনো পাসপোর্টও পাচ্ছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।
যথাসময়ে ব্রেক্সিট কার্যকর না হওয়ার নেপথ্যে আছে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে সম্পাদিত চুক্তিতে পার্লামেন্ট। চুক্তিসহ বিচ্ছেদ কার্যকরে ব্রিটিশ এমপিদের মতের অমিলে ওই মেয়াদ আরও দুই সপ্তাহ বাড়িয়ে দেয় ইইউ। তারপর এ নিয়ে বিরোধী দলে লেবার পার্টির নেতা জেরমি করবিনের সঙ্গে বৈঠক করেন থেরেসা মে।
বুধবারের ওই বৈঠকের পর শুক্রবার ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্কের কাছে লেখা এক চিঠিতে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ব্রেক্সিট কার্যকরের মেয়াদ ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়ারও অনুরোধ করেছেন। চলতি সপ্তাহে ইউরোপের নেতাদের এ নিয়ে আলোচনায় বসার কথা রয়েছে।
ব্রেক্সিট কার্যকরে নানা কোনো সিদ্ধান্তে যেতে না পারার মধ্যেই দেশটির নাগরিকরা ইউরোপীয় ইউনিয়ন লেখাবিহীন নতুন পাসপোর্ট হাতে পাচ্ছেন। অনেকের মধ্যে এ নিয়ে দেখা যাচ্ছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ কেউ এ পরিবর্তনকে ‘স্বাগত’ জানালেও কারও কাছে মনে হচ্ছে এটা বাড়াবাড়ি।
যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ২৯ মার্চ ব্রেক্সিট কার্যকর হবে এমনটা ধরে নিয়েই তারা পরদিন থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়া কভারের পাসপোর্ট ইস্যুর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তবে যতিদিন ব্রেক্সিট কার্যকর না হয় যতদিন আগের পাসপোর্টও ইস্যু হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন লেখা থাক বা না থাক, ব্রিটিশ নাগরিকদের ভ্রমণে তা পার্থক্য করবে না। উভয় নকশাই বৈধ।’
এদিকে ইউরোপীয়ান পার্লামেন্ট সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, ব্রিটেনের নাগরিকরা তাদের ভিসা ফ্রি সুবিধা আগের মতই পাবে, যদি ব্রিটেন ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন থেকে চুক্তিহীনতার (নো ডিল) মধ্য দিয়ে বেরিয়ে যায়।যদিও ‘নো ডিল’ ব্রেক্সিটে ব্রিটেনের নাগরিকরা এই সুবিধা এমনিতেই পাবে ।
উল্লেখ্য যে, ‘ডিল’ আর ‘নো ডিল’ চুক্তির মাঝেই ঘোরপাক খাচ্ছে মূলত ব্রেক্সিটের চলমান রাজনীতি।