‘কুয়েতে একটা ফার্মে আছি। মাসে ৮০ দিনার বেতন পাই। এদেশে মানসম্মত কাজের বড়ই অভাব। কোনোরকম চলছি। দুঃখে কষ্টে দিন চলে যাচ্ছে। বাড়িতে ঠিকমতো টাকা পাঠাতে পারি না।’ কথাগুলো বলছিলেন কুয়েত প্রবাসী ফেনীর ফাজিলপুরের মোহাম্মদ সেলিম।
তিনি বলেন, বেতন কম হলেও এখানে আমার খুব ভালো লাগে। কারণ কুয়েতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাংলাদেশিরা আমাদের এই খামারে আসে। অনেক সময় তারা বিভিন্ন পশুপাখি কিনেও নিয়ে যায়। দেশীয় ভাইদের সঙ্গে দেখা হলে সত্যিই ভালো লাগে। বেতন কম তবুও ভালো আছি বলেন সেলিম।
মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম তেল সমৃদ্ধ দেশে কুয়েত। দেশটির সীমান্তবর্তী ইরাক, ইরান, সৌদি আরব। কুয়েত সিটি থেকে ১শ ২৫ কি.মি. দূরে ইরাক সীমান্তবর্তী কুয়েতের আবদালি মরুভূমি এলাকা। এখানে শাক-সবজি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের ফার্ম রয়েছে। ফার্মগুলোতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা কাজ করে থাকেন।
কুয়েত সরকার থেকে জমি লিজ নিয়ে বিভিন্ন শাক-সবজি ও ফলের বাগান, উট, ভেড়া, দুম্বা, হাঁস, মুরগি, কবুতরসহ বিভিন্ন প্রজাতির পশু পালন করে থাকে প্রবাসী বাংলাদেশিরা। শীতের মৌসুমে সিটি এলাকা থেকে বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা বন্ধু-বান্ধব ও পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসে। পছন্দ হলে কিনেও নিয়ে যায়।
মাঝে মাঝে সৌদি, ইরানি আরবিরা খেমা (তাবু) বানিয়ে মরুভূমিতে বেড়াতে আসেন। তারা এগুলো এখান থেকে কিনে নিয়ে যায়। টার্কি
মুর্গি ৬ দিনার, হাঁস ৪ দিনার, সাধারণ মুরগি ৩ দিনার। এ ছাড়া বিভিন্ন জাত ও সাইজের ওপর দামেরও ভিন্নতা আসে। শীতকালে এখানে প্রচুর লোকের সমাগম ঘটে।
এই মরু এলাকায় একাধিক বাংলাদেশি পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসে। তাদের মধ্যে একজন চট্টগ্রামের মো. কামরুল। তিনি বলেন, এখানে বিভিন্ন ধরনের সতেজ ও তরতাজা শাক-সবজি ফলমূল, হাঁস, মুরগি, কবুতরসহ বিভিন্ন প্রজাতির পশুপাখি বিক্রি করে থাকে। দামেও কম। কিছু খাওয়ার ইচ্ছা হলে ওখান থেকেই কিনে নিই।
তিনি বলেন, সিটি এলাকাগুলোতে বেশির ভাগ জিনিস নিতে সমস্যা হয়। এ কারণে অনেক সময় দূর হলেও আবদালিতে হাটে চলে আসি। আরেকটা বিষয় হলো শাক-সবজি উৎপাদন, পশু পাখি লালন পালন ও বিক্রি বেশিরভাগেই আমাদের বাংলাদেশি ভাইয়েরা কঠোর পরিশ্রমে করে থাকে। বাজার করার সুবাদে তাদের সঙ্গে দেখাও হয় তাতে বেশ ভালোও লাগে।