শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
https://blu-ray.world/ download movies
সর্বশেষ সংবাদ
দ্রোহ ও প্রেমের কবি হেলাল হাফিজ আর নেই  » «   লন্ডন মুসলিম সেন্টারে দুই শতাধিক মানুষের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হলো ‘ফেইথ ইন এনভারনমেন্ট’ সামিট  » «   রোবটিক্স বিজ্ঞানী ড. হাসান শহীদের নেতৃত্বে কুইন মেরি ইউনভার্সিটি অব লন্ডনে বিশ্বের ক্ষুদ্রতম মাল্টিরোটর সোলার ড্রোন উদ্ভাবন  » «   লন্ডন এন্টারপ্রাইজ একাডেমির অফস্টেড রিপোর্টে ‘গুড’ গ্রেড অর্জন  » «   টাওয়ার হ্যামলেটস এডুকেশন অ্যাওয়ার্ডস : ১৮৫ জন শিক্ষার্থীকে সম্মাননা  » «   ব্যারিস্টার নাজির আহমদের “ইন্সপায়ার এ মিলিয়ন”নামে চ্যারিটি প্রতিষ্ঠার ঘোষণা  » «   সম্মিলিত সাহিত্য ও  সাংস্কৃতিক পরিষদের ২০২৫-২৬ পরিচালনা পর্ষদ গঠন  » «   গ্রেটার ফতেহপুর ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ইউকের সাধারণ সভা ও সম্মেলন অনুষ্ঠিত  » «   আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের মিল আর গুজব রাজনীতি  » «   পাচারকৃত টাকা বাংলাদেশে ফেরত আনার ব্যাপারে যুক্তরাজ্য সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন ডা. শফিকুর রহমান  » «   প্যারিস-বাংলা প্রেসক্লাব ফ্রান্সের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন  » «   শেখ হাসিনা ও সাবেক মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা  » «   ব্রিটিশ-বাংলাদেশী হুজহু’র ১৫তম প্রকাশনা ও এওয়ার্ড অনুষ্ঠান ১২ নভেম্বর  » «   বিসিএর ১৭তম এওয়ার্ড : উদযাপিত হলো বাংলাদেশী কারি শিল্পের সাফল্য  » «   কবি ফয়জুল ইসলাম ফয়েজনূরের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ভালোবাসার আগ্রাসন’র মোড়ক উন্মোচন  » «  
সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন

রংধনু নদী



সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

রংধনু থাকে আকাশে। তবে আকাশ ছেড়ে রংধনু নদীতে নেমে এসেছে শুনলে অবাক হতে হবে বৈকি। এমন রংধনু দেখতে চাইলে যেতে হবে দক্ষিণ আমেরিকায়।

কলম্বিয়া নামের দেশটির যতটা পরিচিতি আমাজান অরণ্যের দেশ হিসেবে, তারচে’ দেশটিকে বেশি চেনা হয় ফার্স গেরিলাদের সাথে সরকারী বাহিনীর রেষারেষির বদৌলতে। তবে প্রকৃতি আর ভ্রমণ প্রেমিকদের কাছে কলম্বিয়াকে চেনার পেছনে আছে আর একটি কারণ। দেশটিতে আছে ক্যানো ক্রিস্টালেজ নামের পৃথিবীর বিস্ময়কর এক নদী।

 

বিশেষত জুলাই থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত নদীটিতে নানা রংয়ের দেখা মেলে সবচে’বেশি। আর তাই নানাবিদ রংয়ের আধিক্যের কারণে ক্যানো ক্রিস্টালেজের আরেক নাম রংধনু নদী বা পাঁচ রংয়ের নদী।

নদীটিকে আরো আর্কষণীয় করে তোলেছে এর পাথুরে ধাপে ধাপে সৃষ্টি হওয়া ঝর্ণা আর পাহাড় থেকে নদীতে পড়া জলপ্রপাত। তবে এমন বর্ণিল নদীটির পানি কিন্তু নিজে থেকে এমন রঙিন নয়! তাহলে নদীটিতে নানান রংয়ের এমন বাহারের কারণ কি? আসলে ক্যানো ক্রিস্টালেজে যখন পর্যাপ্ত পানি প্রবাহ থাকে এবং এর পানিতে সূর্যের আলো ঠিক মত পড়ে তখন নদীর তলদেশে জন্ম নেয় এক ধরণের মস জাতীয় উদ্ভিদ। এসব মসের নাম ম্যাকারেনিয়া ক্লাভিগেরা। এই বর্ণিল মসগুলি নদীর তলদেশ জুড়ে দারুণ দৃষ্টিনন্দন রুপে ছড়িয়ে থাকে। যার জন্য নদীটির পানি এমন অপরুপ রঙে দেখায়।

অন্যদিকে এর কালো রংয়ের পাথুরে তলদেশ, হলুদ বালু, নীলাভ পানিও নদীটিকে নানারংয়ের মিশ্রন এনে দিয়েছে। ম্যাকারেনিয়া ক্লাভিগেরা ভালভাবে জন্ম নিতে হলে এবং উচ্ছল রং ছড়াতে হলে অবশ্যই নদীতে পর্যাপ্ত পানির প্রবাহ থাকতে হবে। পাশাপাশি সূর্য কিরণ ঠিক মত পড়তে হবে। আর সেই জন্যে শুষ্ক মৌসুমে নদীটিকে এমন রুপে দেখা যায় না। তখন একে অন্যান্য সাধারণ নদীর মতই মনে হয়। আর তাই জানুয়ারী থেকে মে মাস পর্যন্ত এখানে পর্যটকদের আনাগোনা বন্ধ রাখা হয়।

ক্যানো ক্রিস্টালেজ নদীটি তিনটি ভিন্ন ভিন্ন ইকোসিস্টেমের মিলনস্থলে অবস্থিত। এর দুইটি আবার পৃথিবীর জীববৈচিত্রের অন্যতম প্রাচীন ও প্রধানতম ইকোসিস্টেম আমাজান রেইন ফরেস্ট ও আন্দিজ পর্বতশ্রেণী।

২০০০ সালের পূর্ব পর্যন্ত এই নদীটি দেখতে যাওয়ার মত সাহসী পর্যটকদের সংখ্যা খুব একটা ছিল না। কারণ এই নদী তীরবর্তি পাহাড় আর বন-জঙ্গলে ঢাকা উপত্যকাটি ছিল বিদ্রোহী গেরিলাদের দখলে। তবে পরবর্তীতে সরকারি বাহিনী এই এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর অবস্থা পাল্টে যায়।

তবে নদীর প্রাকৃতিক পরিবেশ যাতে অবাধ পর্যটনের নামে কোনরুপ রং না হারায় বা ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে কতৃপক্ষ অত্যন্ত সচেতন। এখানে এলকোহল সেবন, সানস্ক্রিন বা কীটনাশক ব্যবহার ইত্যাদি পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এমন অনেক কিছুতেই রয়েছে বিধিনিষেধ।

এখানে বেড়াতে হলে পর্যটকদের দল অনধিক সাতজনের হতে হয়। বেড়ানোর জন্য প্রতিদিন সুযোগ পায় সর্বোচ্চ দুইশ’জন পর্যটক। আর সাঁতার কাটার অনুমতি রয়েছে নদীটির খুব সামান্য অংশেই। এতো কিছুর পরও প্রতি বছর বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে হাজার হাজার পর্যটক শুধুমাত্র এই রংধনু নদী ক্যানো ক্রিস্টালেজ কে দেখার জন্য ডি লা ম্যাকারেনা তে পাড়ি জমায়।

লেখক : ভ্রমণ ও প্রকৃতি বিষয়ক লেখক এবং ব্যাংক কর্মকর্তা।


সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন