বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৮ হাজার মাইল দূরে লন্ডনে বর্ণাঢ্য আয়োজনে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হলো সিলেট উৎসব। সিলেট এর সাথে ব্রিটেনবাসী বাংলাদেশীদের রয়েছে এক অদ্ভুদ নাড়ির টান। ব্রিনেটবাসী বা ব্রিটেনপ্রবাসী যাই বলা হয় না কেন, যুক্তরাজ্যে লন্ডন- সিলেট যেন দুটি দেশে একপ্রাণ।
বাঙালি যেখানেই যায়, সেখানেই তার শিকড় সংস্কৃতি নিয়েই যায়। বিলেতে বাঙালি এবং বাংলাদেশীদের জীবন -যাপন এর দিকে থাকালে দেখা যায়, এখানে সবাই কোন না কোন ভাবেই তাদের মাতৃভূমি ও তাঁদের নাড়িপোতা ভূমিকে ধারণ করেই আছেন। বলা হয়ে থাকে , দেশমাতৃকার প্রতি টান মানুষের সহজাত প্রভৃত্তিতে প্রায় সকল বোধ সম্পন্ন মানুষের থাকে। তবে এইসব গুণের মধ্যেও যেসব বিশেষ গুণ বা সামাজিক ভাবে উচ্চারিত বিশেষ বৈশিষ্টগুলো থাকলে তা অন্যান্য জাতি গোষ্ঠিকে আকৃষ্ট করে; তাঁর ষোলআনা বিলেতবাসী সিলেট অঞ্চলের মানুষদের মাঝেই আছে। -যা বহুজাতি ও সংস্কৃতির শহর লন্ডনে বহুল ভাবে উচ্চারিত,প্রসংসিত।
বাঙালি জীবন সংস্কৃতি, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ইতিহাস ঐতিহ্য লালন ও বিকাশে বিলেতে সিলেটিরা বাংলাদেশেরে একটা শক্ত ভিত্তি তৈরী করেছেন। এবং এর ধারাবাহিক কর্ম পদচারণাও যে খুবই উজ্জলতর, তা খোদ এখানে ল্যোকাল অথরিটি থেকে শুরু করে ব্রিটেনের মেইনষ্ট্রিম রাজনীতি পর্যন্ত আলোকিত ভাবে বিস্তৃত। এখানে, মেইনষ্ট্রিম রাজনীতিতে ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ ও ব্রিটেন-বাংলাদেশের আত্নিক, সামাজিক সম্পর্ক ও কাজগুলোতে সিলেট সঙ্গত কারণেই মোটাদাগে সামনে চলে আসে। বিলেতে বাসকরা সিলেটিরাও তাঁদের যোগ্যতাকে আঞ্চলিকতায় না দেখে, মাতৃভূমি বাংলাদেশকে-ই প্রাধান্য দিয়ে দেখে থাকেন। সার্বজনীনতায় দেশের কল্যাণে কাজগুলো করে থাকেন।বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে বন্যা, সিডর, রানাপ্লাজা,এসিড ভিকটিম অথবা সাম্প্রতিক রোহিঙ্গা শরণার্থিদের পাশে দাড়ানো সহ সবখানে-ই সিলেটিরা সবার আগে দুহাত বাড়িয়ে পাশে থাকেন। যা ব্রিটেন-বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, সাংস্কৃতিক, সামাজিক ব্যক্তিত্বদের কাছে প্রসংসিত সব সময়।
বিশ্বের বহু জাতিক শহর হিসাবে খ্যাত লন্ডন শহরে ইতিহাস ঐতিহ্যের রত্নগর্ভা বারার নাম টাওয়ার হ্যামলেটস। এই বারাতে সংখ্যাগরিষ্ট এ্যাথনিক কমিউনিটি হলো বাংলাদেশী। যাঁদের আদিভূমি সিলেট। এখানে বাঙালি পরিচয় দিলেই বাংলাদেশ এর সাথে সাথে ‘সিলেট‘ নামটি চলে আসে। ব্রিটিশ বাংলাদেশী সিলেটিরা তাদের আপন যোগ্যতায় , ল্যোকাল কাউন্সিল, সরকারের অবৈতনিক সেবামূলক সংস্থা, প্রতিষ্টান, কমিউনিটির বিভিন্ন কাজে তাঁরা নি:স্বার্থভাবে তাদের পাড়া- প্রতিবেশীদের জন্য কাজ করেন, বিপদে- আপদে পাশে দাড়ান বলেই ভিন্নভাষাভাষিদের-ও জানা হয়ে গেছে যে, এই সংখ্যাগরিষ্টদের জন্মমাটি বাংলাদেশের সিলেট।তাদের ভাষায়- ‘ইউ আর ফ্রম সি-লেট,রাইট?’
ইতিহাসকে সামনে নিয়ে দেখলে দেখা যায়- বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চল ভৌগলিকভাবেই তাঁর নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়েই কালের পথে হাটছে। অর্থনৈতিক, সামাজিক , রাজনৈতিক সবখানে তার রয়েছে প্রাচুর্যভরা আপন ইতিহাস। খুব স্বাভাবিকভাবেই, ঐতিহ্য সচেতন সিলেটীরা বিলেতেও তাদের আপন সংস্কৃতি,ঐতিহ্য, ভাষা এবং সুখে-দূ:খে মানুষকে কাছে টানার কাজটি এখানেও বিস্তৃত করেছেন।
আঞ্চলিকতার চিন্তা এখানে কোন যুক্তিতেই ধোপে টেকে না। সিলেটীদের নিজস্ব ভাষা, নাগরি বর্ণমালা নিয়ে ব্রিটিশরা বহুল প্রচলিত এথনিক ভাষা হিসাবে ধারাবাহিক গবেষণা করছে। রয়েছে শিক্ষা, সামাজিক,রাজনীতি ও সংস্কৃতি চর্চার নিজস্ব পিরামিডসম ভিত্তি। আবার বৃহৎ অর্থে দেখা যায়,বিলেতে এই সিলেটিরাই বাংলাদেশটা বিশ্বে তুলে ধরেছেন নিহারিকার মতো। বাংলাদেশের ফুল, পাখি, ফল, লতাপাতা সবকিছুই ব্রিটেনে বাংলাদেশী সিলেটিরাই প্রধানত প্রসার ও ভিত্তি গড়েছেন। বঙ্গবন্ধু প্রাইমরী স্কুল,ওসমানী প্রাইমারী স্কুল, কবি নজরুল প্রাইমারী স্কুল, বাংলা টাউন, ক্যারী ক্যাপিটাল ব্রিকলেন ,আলতাব আলী পার্ক, বাংলা বর্ণমালায় ষ্ট্রিট এর নাম ইত্যাদিসহ শত প্রতিষ্ঠানের নাম গুলো বিলেতের ল্যোকাল কাউন্সিল গুলোতে সংযোগ এবং প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে নাম ব্যবহারে অন্তর্ভূক্ত করে বাংলাদেশকে উপরে রাখার মতো কঠিক দূরপ্রসারী কাজগুলো নিখাঁদ দেশপ্রেমে সিলেটিরাই করেছেন।
বিলেতের প্রায় সবকটি অঞ্চলেই বাংলাদেশেীদের কমবেশী বাস। রাজধানী লন্ডন ছাড়াও বার্মিংহাম, ম্যানচেষ্টার, কার্ডিফ, ওয়েলস শহর সহ গোটা ব্রিটেনে আছে বাংলাদেশীদের পদচারনা। যেখানে মূলত প্রথম শিকড় গেড়েছেন ঐ সিলেটিরা-ই। টাওয়ার হ্যামলেটস এ অলগেইট টু মাইল্যান্ড-ষ্ট্রাটফোর্ড-ইলফোর্ড; অল্প-বিস্তর দূরত্বের মাঝেই খুঁজে পাওয়া যাবে শত বাঙালি নাম খুদাই করা আছে বিভিন্ন প্রতিষ্টান, দোকান বা রেস্তোরায়। শাপলা, দোয়েল, মাছবাজার, হাটবাজার, কাঁচাবাজার, বন্দরবাজার, সিলেট বাজার, পানসি, বনফুল, রাজমহল, পানভান্ডার, গ্রামবাংলা ইত্যাদি। প্রায় শতাধিক ধর্মীয় ও সেবামুলক প্রতিষ্টান এর নাম সিলেটিরা রেখেছেন ধর্মীয় আধ্যাতিক নেতা- হযরত শাহজালাল রহ: এর নামে। দুস্প্রাপ্য হলেও এখানে বাংলাদেশী সংস্কৃতি ঘনিষ্ট সব কিছু পাওয়া যায়।
ভাষাগত দিকটিও এখানে অদ্ভদ ভাবে লালিত। নতুন প্রজন্মের অনেকে বাংলাভাষায় কথা বলতে না পারলেও তাদের কথ্যভাষা সিলেটি তে কথা বলতে পারেন এবং স্বাচ্ছন্দও বোধ করেন।( বাংলাভাষার প্রতি এখানে কারোই অনিহা স্পষ্টত নেই। যেহেতু স্কুলসমুহে বাংলাভাষা শিক্ষার সুযোগ খুবই সীমিত,তাই এমনটি হয়েছে,এছাড়াও মোটাদাগে অন্য কারণও আছে)। তবে নতুন প্রজন্মরা কোন ভাবেই তাদের বাবা -মার জন্মভুমি বাংলাদেশ এবং দেশের শিকড় -সংস্কৃতিকে অস্বীকার করেন না। শ্রদ্ধায় বাংলাদেশটা-ই এখানে বহূসংস্কৃতির দেশে উচ্চারিত এবং প্রজ্জ্বলিত করেন।সিলেটিদের এই গুণটি নিন্দুকেরা-ও সরবে বিভিন্ন অনুষ্টানে ও সৃজনশীলকর্মে স্বীকারও করেন বিনম্র কৃতজ্ঞতা-ভালোবাসায়।
বাঙালির মহান মুক্তিযুদ্ধে ব্রিটেন প্রবাসীদের অবদান ইতিহাসে চিরস্বরনীয় হয়ে আছে। যেখানে সরবে-নিরবে মুক্তিযুদ্ধের সকল কাজে এই সিলেটীরাই ছিলেন সবচেয়ে বেশী সক্রিয়। বিলেতে বাসকরা প্রায় ৯৫ ভাগ বাংলাদেশীর শিকড় বা জন্মভুমি সিলেট। প্রায় ৫ প্রজন্মের বহমান টান, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সামাজিক সাংস্কৃতিক মেল বন্ধন সবকিছুতেই বিলেত-এবং সিলেট যেন ‘একই নাড়ির‘ বন্ধন।
দেরীতে হলেও প্রথমবারের মতো লন্ডনে বর্ণাঢ্য আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে দিনব্যাপী সিলেট উৎসব। চার মার্চ, রবিবার প্রথম বারের মতো অনুষ্ঠিত, উৎসবটি পরিণত হয় একটি আবেগঘন মিলনউৎসবে। প্রচন্ড ঠান্ডা উপেক্ষা করে ব্রিটেনের বিভিন্ন শহর থেকে আসেন অসংখ্য সিলেটি। বেলা দুইটায় ইষ্ট লন্ডনের ব্রার্ডি আর্ট সেন্টারের সামনে একটি সংক্ষিপ্ত র্যালী ও ফিতা কেটে উদ্ধোধন এর মাধ্যমে শুরু হয় উৎসব।
ঠান্ডা আবহাওয়া জনিত কারণে উৎসবটি হলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে হয়েছে। সেখানে ছিল রকমারী ষ্টল- ঐতিহ্যবাহী মনিপুরী পোশাক, সিলেটি খাবার ,আর খাটি সিলটি চা ও পানসুপারীতে দর্শনাথীরা উৎসবে সিলেটকে খুঁজেছেন সুভাষমাখা মমতা নিয়ে-ই।
কণ্ঠশিল্পী মোস্তফা মিলনের নেতৃত্বে জাতীয় সংগীত পরিবেশনায় কণ্ঠ মেলান হলভর্তী অতিথি ও দর্শকরা। বক্তব্য রাখেন- ব্রিটিশ পার্লামেন্টে প্রথম বাংলাদেশী এমপি, সিলেটের রোশনারা আলী। বাঙালী অধ্যষ্যিত অঞ্চল, টাওয়ার হ্যামেলেটস বারার মেয়র জন বিগস, একই বারার প্রথম মহিলা স্পিকার সিলেটী সাবরিনা আক্তার, লন্ডনে বাংলাদেশ এর হাই কমিশনার নাজমুল কাউনাইন । বর্ণবাদ বিরুধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা ও সিলেট এর সাবেক এমপি শফিকুর রহমান।
বক্তব্যে সবাই তাঁদের আবেগ-অনুভূতি মিশেল কথা এবং উৎসব আয়োজনের ভূয়সী প্রসংসা করে বলেছেন- ব্রিটেনে বেড়ে ওটা প্রজন্মকে তাঁদের শিকড় ও সংস্কৃতি জানানো এবং তা উপভোগের অনন্য কাজটি সিলেট উৎসব কমিটি করছে । সুদূর অতীত থেকে ‘ সিলেট-লন্ডন‘ দুই দেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে আপন করে দুটি দেশকেও আরও ঘনিষ্ট করে দিয়েছে।
প্রথম বারের মতো অনুষ্ঠিত সিলেট উৎসবটি ধারাবাহিক ভাবে নতুন প্রজন্মদের আরও বেশী অংশ গ্রহনে করা দরকার ।এবং এক্ষেত্রে স্ব স্ব অবস্থান থেকে সর্বাত্নক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করা হয়।
লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাব এর সভাপতি সৈয়দ নাহাশ পাশা, চ্যানেল এস এর ফাউন্ডার মাহি ফেরদৌস জলিল, চ্যানেল আই ইউরোপ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী শুয়েব, বিশিষ্ট সাংবাদিক নবাব উদ্দিন, প্রেসক্লাব এর সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জুবায়ের প্রমুখ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন পর্বে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।
সবার মুখেই ছিল- সিলেট-লন্ডন আত্নিক সম্পর্ক এবং এর বহমান জীবন সংস্কৃতির কথামালা। আগামীতে বড় পরিসরে উৎসব আয়োজনের দিকটি তুলে ধরে বিলেতে বর্ণবাদসহ সকল আন্দোলন সংগ্রাম এবং পজিটিভ বাংলাদেশ বিনির্মাণে সিলেটিদের অবদানকে নতুন প্রজন্মদের কাছে তুলে ধরতে একযোগে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন- ‘সিলেটিরাই বিলেতে ‘একখন্ড বাংলাদেশ‘ নির্মাণ করেছে। এমনকি, গোটা ইউরোপে, বাংলাদেশটাকে আলোকিত ভাবে তুলে ধরতে সিলেটিদের অবদান সবচেয়ে বেশী , এই আলোকিত দিক গুলোও আজ সবাই স্বীকার করেন।‘
বেলা দুইটা থেকে শুরু হওয়া উৎসবে ছিল নানা অনুষ্ঠান মালা -সিলেটি ব্রিটিশ ডিজাইনার সাইদা চৌধুরীর ‘সাইদা সি‘ এর পোশাকে সোনিয়া আহমেদ এর ক্যুরিয়গ্রাফে দেখানো হয়েছে সিলেটিদের লোকশিল্পের ঐ্তিহ্যের কিছু অংশ। আবহসংগীতেও ছিল সিলেটিলোকজ গাণ।ভিনদেশী ও ব্রিটিশ বাংলাদেশী মডেলদের পরিবেশনায় পর্বটি দাগ কেটেছে দর্শনমন।
ছিল পুঁথি পাঠ। আবহমান বাংলার চিরায়ত রুপ ধারণ করে সিলেটকেই তুলে ধরেছেন জনপ্রিয় উপস্থাপক ও সংস্কৃতিকর্মী সায়েক আহমদ , মজিবুল হক মনি ও শাহিন খান । হলভর্তী দর্শক মুগ্ধতায় উপভোগ করেছেন। ছিল নতুন প্রজন্মের চোখে ভালোলাগায় বিষ্ময়ও।
ছড়াকার রেজুয়ান মারুফ, সৈয়দ হিলাল সাইফ, কবি আনোয়ারুল ইসলাম অভি প্রমুখ পাঠ করেছেন স্বরচিত কবিতা। আবৃত্তশিল্পী শতরুপা চৌধুরী করেছেন মুগ্ধকর আবৃত্তি। দেশ বিদেশে সিলেটিদের উচ্চারিত ও আলোকিত দিক নিয়ে, মৌলিক সৃজনগাথায় এইপর্বটিও ছিল ‘শুধু প্রাণের সিলেট‘ ।
অনুষ্ঠানে একাধিক বিষয়ে নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের পরিবেশনা যেমন দর্শকদের মনে লেগেছে তেমনি চোখে মুখে প্রকাশ পেয়েছে – ‘‘আত্ন পরিচয় ধারণ এর গর্বও।‘‘
প্রাণজ অনুষ্ঠানের বিভিন্ন পর্বের উপস্থাপনায় ছিলেন- জনপ্রিয় উপস্থাপক মুনিরা পারভিন, সৈয়দা সায়মা আহমদ ও জয়া কুরেশী।
অনুষ্টানের শেষ পর্বে ছিল গাণ।-বিলেতের বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী গেীরি চৌধুরী এর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে গাণ করেন- বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী আলাউর রহমান, বাউল শহীদ, হাসি রানি, শতাব্দিকর, মম রুপা দাস প্রমূখ। শিল্পীরা সিলেটের উৎসব-সংস্কৃতি আর ঐতিহ্য ধারণ করা সব জনপ্রিয় গাণ দিয়ে মাতিয়ে রাখেন। বাউল আব্দুল করিম,হাছন রাজা থেকে শুরু করে, বিয়ের গান, পালা গাণ, জারিগাণ , ধামাই ও নৃত্যে দর্শকরা উপভোগ করেছেন প্রাণভরে।
উৎসব উপলক্ষে একটি উৎসব স্মারক প্রকাশ করেছে সিলেট উৎসব উদযাপন কমিটি। তথ্যসমৃদ্ধ স্মারকটি দর্শনার্থীদের হাসিমুখে সৌজন্য কপি হিসাবে দেয়া হয়েছে।
রাত ন‘টায় অনুষ্ঠান শেষ হবার কথা থাকলেও অনুষ্ঠান চলে আরও বাড়তি সময় পর্যন্ত। উৎসব হলে ঢুকতে না পেরে অনেক দর্শক দীর্ঘ সময় বাইরে দাড়িয়ে, হীম ঠান্ডার চেয়েও বেশী মন খারাপের কষ্ট নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আর যাঁরা হলের ভিতরে ছিলেন, তাদের কাছে মনেই হয়নি-সময় ফুরিয়েছে , এখন বাড়ি যেতে হবে!
প্রাণের টানে শিকড়ের গাণে, এসো মাতি মিলন উৎসবে- আয়োজকদের দেয়া শ্লোগানটি সিলেট উৎসবের জন্য ষোলআলা যথার্থ ছিল তা উৎসবে আগত দর্শনার্থীদের চোখ-মুখের তৃপ্তিআনন্দছাপ-ই বলে দিয়েছে।
এক সময় সিলেটকে বলা হতো দ্বিতীয় লন্ডন। আর এখন, লন্ডনে বাংলাদেশীদের কাছে টাওয়ার হ্যামলেটস বারা যেন একটুকরো সিলেট। দুই দেশের এই হৃদ্দিক টান যেন অমলিন, অটুট থাকে- এমনটাই সবার প্রত্যাশা ।
আনোয়ারুল ইসলাম অভি; কবি, সাংবাদিক,লন্ডন।