গত কয়েক বছর আলুর দাম বেশ চড়া থাকার পর এবছর দাম কমে এসেছে। আলু উৎপাদনে অন্যতম জেলা মুন্সীগঞ্জে এখন আলুর কেজি ১১টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। গত মৌসুমে সেখানে প্রতি কেজির দাম উঠেছিল ৭০ টাকা পর্যন্ত।
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার চরকেওয়ার ইউনিয়নের টারকী এলাকার ডালিম শেখ জানিয়েছেন, গত কয়েক বছর আলুর দাম চড়া থাকার কারণে বেশ লাভবান হয়েছেন। বেশি লাভের আশায় এবার বেশি জমিতে আবাদ করেছেন। ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে যেখানে আলুর কেজি ৩০ টাকায় বিক্রি করেছেন, তা এখন ১১ টাকায় বিক্রি করছেন। এতে লাভের আশা তো দূরের কথা, উল্টো লোকসানে পড়ার দুশ্চিন্তায় আছেন। শুধু ডালিম শেখ নন, জেলার হাজারো কৃষক এখন লোকসানের শঙ্কায় আছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে মুন্সীগঞ্জে ৩৪ হাজার ৭৫৮ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ হয়েছে। এ বছর সাড়ে ১০ লাখ মেট্রিক টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
আলু চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মুন্সীগঞ্জে আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে ফলন ভালো হলেও বীজ, সার, কীটনাশক, শ্রমিকের মজুরি ও জমি চাষের খরচ বাড়ায় গতবারের চেয়ে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এরই মধ্যে হিমাগারের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে জমি থেকে আলু সংরক্ষণ পর্যন্ত প্রতি কেজির দাম পড়বে ৩২-৩৩ টাকা। এখন আড়তে ১১ টাকায় বিক্রি করছেন তারা। এই দামে বিক্রি করে লোকসান গুনতে হচ্ছে। কারণ উৎপাদন খরচ পড়েছে ২০ টাকার বেশি।
রাজধানীর দোকানগুলোতে আলুর কেজি ২৫-৩০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। ভ্যানে বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কেজি। পাইকারি পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ১৭-১৮ টাকা।
‘মাঠ পর্যায়ে ১১টাকা কেজিতে আলু বিক্রি হচ্ছে, কৃষকের ক্ষতি হচ্ছে’ এ কথা বলে রাজধানীর কাওরানবাজারের কিচেন মার্কেটে একজন ক্রেতা আব্দুর রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, বছরের শুরুতে নতুন আলু যে ১০০টাকা দামে কৃষক বিক্রি করেছেন, তখন যে বেশি লাভ করেছেন এ কথাও বলতে হবে।