‘বাংলাদেশ এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি ফোর্স’ নামে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নিজস্ব নিরাপত্তা সংস্থা গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রায় ১০ হাজার জনবলের একটি প্রস্তাবনাও মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এই জনবলে ৭০ শতাংশ সদস্য বিমান বাহিনী থেকে নেওয়া হবে, বাকি ৩০ শতাংশ অন্যান্য সংস্থা থেকে। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়া।
বেবিচকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘বেবিচকের নিজস্ব এই সংস্থা অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হবে। ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অরগানাইজেশন থেকে সার্টিফায়েড হবে। দেশের সব বিমানবন্দরের গুরুত্বপূর্ণ এক্সেস পয়েন্টগুলোতে দায়িত্ব পালন করবেন তারা।’ এ ক্ষেত্রে বিমানবন্দরে কর্মরত এপিবিএনসহ অন্যান্য সংস্থার কোনও সমস্যা হবে না বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।
বেবিচক সূত্র জানায়, সিভিল এভিয়েশনের এ ধরনের সিকিউরিটি ফোর্স গঠন করতে দীর্ঘদিন চেষ্টা চলছিল। এবার সেটিকে পরিপূর্ণ রূপ দিতে কাজ শুরু হয়েছে। দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ অভ্যন্তরীণ সব বিমানবন্দরে বেবিচকের নিজস্ব এই সংস্থা কাজ করবে। বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অধীন এই সংস্থা সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যানের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে থাকবে।
মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ওই প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি ফোর্সের জনবলের সংখ্যা হবে ১০ হাজার ৬৩২ জন। এর ৭০ শতাংশই নেয়া হবে বিমানবাহিনী থেকে। মূলত চেয়ারম্যান থাকবেন সার্বিক তত্ত্বাবধানে।
এছাড়াও এই সংস্থার প্রধান হবেন ‘এয়ার ভাইস মার্শাল’ বা ‘এয়ার কমোডর’ পদমর্যাদার একজন। যিনি ‘মহাপরিচালক’ হিসেবে দায়িত্বে থাকবেন। এই মহাপরিচালকের দফতরে ৪ জন অতিরিক্ত মহাপরিচালকও থাকবেন। তারা ‘এয়ার কমোডর’ বা ‘গ্রুপ ক্যাপ্টেন’ পদমর্যাদার হবেন। পরিচালক থাকবেন মোট তিন জন। তারা ‘উইং কমান্ডার’ পদমর্যাদার হবেন।
সূত্র জানায়, এই জনবলের মধ্যে ৫ হাজার ১৬৭ জন শাহজালালে এবং ৯৫৯ জন করে ওসমানী, শাহ আমানত ও কক্সবাজার বিমানবন্দরে মোট ২ হাজার ৮৭৭ জন দায়িত্ব পালন করবেন। আর অভ্যন্তরীণ চারটি বিমানবন্দর যশোর, রাজশাহী, বরিশাল ও সৈয়দপুরে দায়িত্বে থাকবেন ৫৬০ জন করে মোট ২ হাজার ২৪০ জন।
তিন ধাপে এই জনবল পূরণ করা হবে। প্রথম ধাপে নিয়োগ করা হবে ৩ হাজার ৮৯৪ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৩ হাজার ৪০৭ জন এবং তৃতীয় ধাপে ৩ হাজার ৩৩১ জন। সার্বিক বিষয়ে বেবিচকের ওই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘পৃথিবীর অন্যান্য সিভিল এভিয়েশনের নিজস্ব এ ধরনের ফোর্স রয়েছে। আমরা সেই আলোকেই তৈরি করবো।’
তিনি বলেন, ‘বিমানবন্দরের বিশেষ করে এয়ারসাইটে ও গুরুত্বপূর্ণ অংশে তারা দায়িত্ব পালন করবেন। বর্তমানে যারা অন্যান্য সংস্থা কাজ করে যাচ্ছেন, তাদের কারোরই এতে কোনও সমস্যা হবে না। যে যার মতো করে ডিউটি পালন করবেন।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটির পরিপূর্ণ বাস্তবায়নের সময় সব সংস্থাকে ডেকে সভা করা হবে। ওই সভা থেকেই তাদের গাইডলাইন দেওয়া হবে।’