শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
https://blu-ray.world/ download movies
Sex Cams
সর্বশেষ সংবাদ
লন্ডনে বিসিএ এ্যাওয়ার্ডস ২৮ অক্টোবর থাকছে নানা চমকপ্রদ আয়োজন  » «   বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৩২নং বাসভবন ভস্মীভূত এবং ভাস্কর্য ভাংচুরের নিন্দা ও প্রতিবাদ  » «    অদ্ভুত দেশপ্রেম ও খাঁটি ব্যক্তিগত স্বার্থ  » «   বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরাবারে বঙ্গবন্ধু লেখক সাংবাদিক ফোরামের স্মারকলিপি প্রদান  » «   দাম দিয়ে কিনেছি বাংলা কারো দানে পাওয়া নয়  » «   টাওয়ার হ্যামলেটসের বো এলাকায় নতুন কাউন্সিল ভবনের উদ্বোধন করেছেন নির্বাহী মেয়র লুৎফুর  » «   বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকের প্রাণহানি এবং সৃষ্ট অস্থিরতা-সহিংসতায় লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের ক্ষোভ-নিন্দা  » «   সৃজনের আলোয় মুস্তাফিজ শফি, লন্ডনে বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা  » «   বৃটেনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তাহমিনার অসাধারণ সাফল্য  » «   দুই বঙ্গকন্যা ব্রিটিশ মন্ত্রীসভায় স্থান পাওয়ায় বঙ্গবন্ধু লেখক এবং সাংবাদিক ফোরামের আনন্দ সভা ও মিষ্টি বিতরণ  » «   কেয়ার হোমের লাইসেন্স বাতিলের বিরুদ্ধে আইনী লড়াইয়ে ল’ম্যাটিক সলিসিটর্সের সাফল্য  » «   যুক্তরাজ্যে আবারও চার ব্রিটিশ-বাংলাদেশী  পার্লামেন্টে  » «   আমি লুলা গাঙ্গ : আমার আর্তনাদ কেউ  কী শুনবেন?  » «   বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে লন্ডনে ইউনিভার্সেল ভয়েস ফর হিউম্যান রাইটসের সেমিনার অনুষ্ঠিত  » «   লন্ডনে বাংলা কবিতা উৎসব ৭ জুলাই  » «  
সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন

অমর একুশে ফেব্রুয়ারিকে ‘লন্ডন মাল্টিলিংগুয়াল ডে’ হিসেবে পালনের আহ্বান জানালেন যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার



সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃত অমর একুশে ফেব্রুয়ারিকে ‘লন্ডন মাল্টিলিংগুয়াল ডে’ হিসেবে পালনের আহ্বানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ হাই কমিশনলন্ডন ‘বাংলা ভাষা শহিদ দিবস’ ও ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করেছে।  এ উপলক্ষে গতকাল সন্ধ্যায় লন্ডনের কেন্জিংটনে এক হোটেলে “Safeguarding Indigenous Languages through Transforming Education” শীর্ষক এক বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম তাঁর স্বাগত বক্তব্যে ১৯৫২-এর সকল ভাষা শহিদ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃত অমর একুশে ফেব্রুয়ারিকে ‘লন্ডন মাল্টিলিংগুয়াল ডে’ হিসেবে ঘোষণা দেয়ার জন্য লন্ডন মেয়রের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “এ বিষয়ে একটি আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব হাই কমিশন খুব শীঘ্রই লন্ডন মেয়রের কাছে পাঠাবে।”

কমনওয়েলথের সেক্রেটারি জেনারেল পেট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এতে লন্ডনে অবস্থিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি১৭টি দূতাবাসের কূটনীতিক ও প্রতিনিধিগণ এবং ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অংশ নিয়ে বায়ান্নোর মহান ভাষা শহিদের ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বক্তব্য রাখেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূতগণ এবং দূতাবাসগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী শিল্পীরা মহান ভাষা শহীদদের উৎসর্গ করে নিজ নিজ ভাষায় মনোজ্ঞ সঙ্গীতআবৃত্তি ও নৃত্য পরিবেশন করেন। দূতাবাসগুলোর মধ্যে ছিলো ভারতকুয়েত,  মালদ্বীপ,  মালয়েশিয়াআর্জেন্টিনা,  কিউবাসাইপ্রাসমিশররুয়ান্ডাফিলিস্তিনজর্ডানউগান্ডা ও রোমানিয়া। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি কমনওয়েলথের সেক্রেটারি জেনারেল পেট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড তাঁর বক্তব্যে এবছরের  আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রতিপাদ্যের উল্লেখ করে প্রতিটি দেশে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে মাতৃভাষার সংরক্ষণ ও চর্চার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে বাংলাদেশে বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলনকে মাতৃভাষার সংরক্ষণ ও চর্চার ক্ষেত্রে এক অনন্য নজীর বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে ভাষা ও সংস্কৃতি সুরক্ষায় যারা প্রাণ দিয়েছিলো, তাঁদের সেই আত্মদান থেকে আজো আমরা অনুপ্রেরণা নিতে পারি।“

হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম যুক্তরাজ্যে প্রায় ৩০০টি এবং লন্ডনে প্রায় ২০০টি মাতৃভাষার প্রচলন রয়েছে উল্লেখ করে বলেন, “একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসটিকে ‘লন্ডন মাল্টিলিংগুয়াল ডে’ হিসেবে ঘোষণা করা খুবই যৌক্তিক এবং এবিষয়ে আজকের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারি সকল দেশের রাষ্ট্রদূতগণ অভিন্ন মত ব্যক্ত করেছেন।” 

হাইকমিশনার ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটিসহ বিভিন্ন কমিউনিটির সদস্যদের তাঁদের নিজ নিজ এলাকার কাউন্সিলরদের মাধ্যমে লন্ডন মেয়রের নিকট এবিষয়ে প্রস্তাব প্রেরণের পরামর্শ দেন। তাছাড়া তিনি বাংলা ভাষা শিক্ষা এবং চর্চার জন্য যুক্তরাজ্যে কমিউনিটি সংগঠনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান উদ্যোগ গ্রহণ করলে হাইকমিশন বিনামূল্যে বাংলা পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করতে সহায়তা করবে বলে জানান।

হাইকমশিনার তাঁর বক্তব্যে সর্বদলীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ-এর প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে ৫২-র ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের কথা পরম শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন এবং মহান একুশে ফেব্রুয়ারির আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা পাওয়াবাংলা ভাষাকে জাতিসংঘের অন্যতম দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে অন্তর্ভুক্তির উদ্যোগসহ বাংলা ভাষার সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষপে গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করনে।

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য পল ব্রিস্টো অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, “যুক্তরাজ্যে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটি অমর একুশের মহান আদর্শ ধারন করে আছে যা আগামী দিনগুলোতেও এদেশে নিজ নিজ মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও উন্নয়নে অন্য ভাষার মানুষকেও উৎসাহ যোগাবে।

যুক্তরাজ্যে ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা অর্জনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন হাই কমিশনের স্মারক অনুষ্ঠানের সহ-আয়োজক যুক্তরাজ্যে ইউনেস্কোর জাতীয় কমিশনের প্রতিনিধি ম্যাথিউ রাবাগলিয়াতিব্রিটিশ কাউন্সিল প্রতিনিধি ওবায়ার্ন মুলিগান ও  যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সুলতান মাহমুদ শরীফ।

অনুষ্ঠানে উদীচী স্কুল অব পারফরমিং আর্টসের শিশু-কিশোর শিল্পীরা সমবেত কন্ঠে “আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি” অমর সঙ্গীতটি পরিবেশন করে। ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটিসহ লন্ডনে বসবাসকারি বিভিন্ন দেশের বিপুল সংখ্যক আমন্ত্রিত অতিথি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে হাইকমিশনার অতিথি ও মিশনের কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রতীকী শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষা শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর ভাষা শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

এ উপলক্ষে সকালে হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম দূতাবাসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন। এরপর দিবসটি উপলক্ষ্যে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিপ্রধানমন্ত্রীপররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ এবং ভাষা শহীদদের এবং বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যদের রূহের মাগফেরাত এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্যদীর্ঘায়ু ও সাফল্য কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

এর আগে মহান একুশের প্রথম প্রহরে হাইকমিশনার ও টাওয়ার হ্যামলেটস-এর মেয়র লুৎফুর রহমা একসাথে এবং পরে মিশনের কর্মকর্তাদের নিয়ে পূর্ব লন্ডনের শহিদ আলতাব আলি পার্কে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বায়ান্নোর ভাষা শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।


সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন