­
­
বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ১৯ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
জাফলং ঘুরতে গিয়ে পানিতে ডুবে প্রাণ গেলো কিশোরের  » «   ১৭ বছর পরে জাতীয় ঈদগাহের ঈদ জামাতে সরকারপ্রধান  » «   ঈদ আসে, গাজায় আনন্দ আসে না  » «   এপ্রিলের মাঝামাঝি দেশে ফিরতে পারেন খালেদা জিয়া  » «   মিয়ানমারে বিধ্বংসী ভূমিকম্পের পরও হামলা চালাচ্ছে জান্তা বাহিনী  » «   ঈদযাত্রা: শুক্র ও শনিবার ঢাকা ছেড়েছে ৪১ লাখ সিমধারী  » «   তিস্তা প্রকল্প নিয়ে ‘ইতিবাচক’, মোংলায় আরেকটি অর্থনৈতিক অঞ্চল করতে চায় চীন  » «   মিয়ানমারে কেন এত বড় বিধ্বংসী ভূমিকম্প, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?  » «   বাংলাদেশে সাজাপ্রাপ্ত উগ্রবাদীদের মুক্তি নিরাপত্তার জন্য ‘মারাত্মক উদ্বেগের’: ভারত  » «   চাঁদ দেখা গেছে, সৌদিতে ঈদ রবিবার  » «   এনসিপি: অম্ল-মধুর একমাস পার, ভোটের পথে প্রস্তুতি কতদূর?  » «   চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ ও ঢাকা ভূমিকম্পের উচ্চ ঝুঁকিতে, ফায়ার সার্ভিসের সতর্কতা  » «   মিয়ানমারে ভূমিকম্প: মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে  » «   এশিয়ার দেশগুলোর ‘যৌথ সমৃদ্ধির পথরেখা’ চাইলেন ইউনূস  » «   বাংলাদেশের কাছে সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র  » «  

দুই ঈদে প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখলে কী এমন ক্ষতি?
আব্দুর রহিম শামীম



ঈদ শব্দটির অর্থ উৎসব। ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব গুলোকে ঈদ বলা হয়।

ঈদ বলতে প্রধানত যা বুঝায় -ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা। সবাই এই দিন নতুন পোশাক পরে। ঘরে ঘরে ভোজের আয়োজন হয়। আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীরাও এই আনন্দের অংশীদার হয়। মুসলমানেরা এই দিন ঈদের দুই রাকাত নামাজ আদায় করেন। আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে কুশল বিনিময় এবং ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সবাই সবাইকে কোলাকুলি, সালাম ও শুভেচ্ছা জানায়।

মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব হল ঈদ। ইসলাম ধর্ম অনুসারে বছরে দু’বার ঈদ আসে। প্রথমে ঈদ-উল-ফিতর, দান করার উৎসব। তারপরে ঈদ-উল-আজহা, ত্যাগ করার উৎসব। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) মদিনায় হিজরতের পরেই ঈদ-উল-ফিতর উৎসব পালন শুরু হয়।

কিছু ঐতিহাসিক কাহিনী অনুসারে, নবী মুহাম্মদ (সা.) মদিনায় এসে দেখলেন মদিনাবাসী বছরে দুটি দিবসে আনন্দ উল্লাস করে থাকে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, এই দিবস দুটি কী? তারা জানালেন, নওরোজ ও মিহিরজান। শরতের পূর্ণিমায় পালিত হয় নওরোজ উৎসব, আর বসন্তের পূর্ণিমায় পালিত হয় মিহিরজান উৎসব। তখন নবী মুহাম্মদ (সা.) বললেন, আল্লাহ তোমাদের এই দিবস দুটির পরিবর্তে উত্তম দুটি দিবস দান করেছেন, তা হলো ঈদ-উল-আজহা এবং ঈদ-উল-ফিতরের দিন। এর মধ্যে রমজান মাসের শেষে সবাই একসঙ্গে মিলেমিশে ও আনন্দের সহিত পালিত হয় ঈদ-উল-ফিতর।

ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে ঈদ-উল-ফিতরের ব্যাপক গুরুত্ব রয়েছে। রমজান মাসকে অত্যন্ত পবিত্র মাস হিসেবে বিশ্বাস করা হয়। এইমাসে সৎকর্ম, মানুষের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ ছড়িয়ে দেওয়া ও ধৈর্য ধরা হয় এবং সমস্ত মন্দ চিন্তা ও অভ্যাসকে দূরে সরানো হয়। আর, এই ঈদ-উল-ফিতরের মধ্য দিয়েই পবিত্র ইসলামী মাস রমজানের সমাপ্তি হয়।

কিছু প্রাচীন ধর্মগ্রন্থ ও ঐতিহাসিক কাহিনী অনুসারে, আরব অঞ্চলে ইসলামের আবির্ভাবের পূর্বেই ঈদ-উল-ফিতর উদযাপিত হত।এই দিনে বিশ্বজুড়ে মুসলমানরা তাদের প্রিয়জনদের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নেয় এবং ভালবাসা ও ভ্রাতৃত্বের বার্তা ছড়িয়ে দেয়।

তারা মসজিদে সবাই একসঙ্গে নামাজ পড়ে এবং একে অপরকে জড়িয়ে ধরে খুশির বার্তা দেয়। একে অপরকে জড়িয়ে ধরে ঈদ মোবারক জানানোর পিছনের ধারণা হল, সমাজে সহানুভূতি ও ভালবাসা ছড়িয়ে দেওয়া।

বিভিন্ন ধরনের সুস্বাদু খাবার এই দিনটিতে প্রস্তুত করা হয়। এর মধ্যে সেমাই সবচেয়ে প্রচলিত খাবার। এছাড়াও বিরিয়ানি, কাবাব এবং আরও অনেক কিছু তৈরি করা হয়। পরিবার ও বন্ধু সবার সঙ্গে খাওয়া হয়।

একে অপরকে শুভেচ্ছা ও উপহার প্রেরণ করে মানুষ কৃতজ্ঞতা ও ভালবাসা প্রকাশ করে। এই দিনটিতে সবাই রাগ-হিংসা ভুলে গিয়ে একে অপরকে কাছে টেনে নেয়।

যারা দরিদ্র বা অভাবী তাদের মধ্যে বস্ত্র, অর্থ এবং খাবার বিতরণ করা হয়। ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে গরীব দুঃস্থদের মাঝে বিতরণ করা দানকে যাকাতুল ফিতর বলা হয় এবং এটি ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূ

আমার লেখার প্রধান গুরত্ব হচ্ছে আমরা বাংলাদেশীরা যারা তৃতীয় বাংলা বলে খ্যাত বিলেতে থাকি এবং ইসলাম ধর্মের অনুসারী ।আমাদের পূর্ব পুরুষ যারা অত্যন্ত কষ্ট করে হাজার হাজার মাইল দূরে বিলেতে বসবাস শুরু করে ধর্ম- কর্ম চালিয়ে যেতে এই ব্রিটেনে অসংখ্য  মসজিদ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত করে  আমাদের ধর্ম- কর্মের পথকে সুগম ও সহজতর করেছিলেন তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ।

ব্রিটেনে বসবাসরত মুসলমানের সংখ্যা প্রায় ত্রিশ লাখ আর এখানে বাংলাদেশী মুসলিম মালিকানাধীন রেস্টুরেন্টের সংখ্যা প্রায় দশ হাজার । আর এসব রেস্টুরেন্টে কাজ করেন লক্ষাধিক মুসলমান বাংলাদেশী কর্মী, যারা বেশীর ভাগই পরিবার -পরিজন নিয়ে এদেশে বসবাস করেন ।

কিন্তু দুঃখজনক হলে ও সত্যি যে, এসব কর্মীরা খ্রিষ্টমাস ও নিউ ইয়ারের ছুটি পেলেও ঈদের সময় তাদের ছুটি হয় না ।তাদের পরিবার- পরিজন অপেক্ষায় প্রহর গুনলেও শেষপর্যন্ত তারা পরিবারের সাথে মিলিত হতে পারেন না । কারণ তাদের রেস্টুরেন্ট খোলা থাকায় ছুটি হয় না। তারা এ আনন্দ থেকে বঞ্চিত হন। এতে করে তারা যে শুধুই মর্মাহত হন এমন নয়- এ বেদনায় তাদের পরিবার ও পরিজনও আহত হন । তাদের সন্তানরা এই আনন্দের দিনে পরিবারের প্রধানকর্তা কে না পেয়ে ঈদের আনন্দ একটি হতাশা ও বিষাদে পরিণত হয় ।

রেস্টুরেন্ট মালিকরা মুসলমান হয়ে খ্রিষ্টমাস ও নিউ ইয়ারের ছুটির দিন রেস্টুরেন্ট বন্ধ রাখলে ও ঈদের দিন খোলা রেখে কর্মীদের ঈদের এ আনন্দ থেকে বঞ্চিত করেন- এটি সম্পূর্ণ অন্যায়, অমানবিক ও অনৈতিক এবং সর্বোপরি অনৈসলামিক- আমি নিঃসন্দেহে বলতে পারি ।

দুই ঈদে, দুইদিন রেস্টুরেন্ট বন্ধ রাখলে কী এমন ক্ষতি হবে ? অপরদিকে অমুসলিম মালিকানাধীন সকল প্রতিষ্ঠানের মুসলিম কর্মীরা না চাইলেও ঈদের দিন তারা ছুটি ভোগ করেন ।

তাই আমার প্রত্যাশা ঈদের দিন ছুটি দেয়া এবং রেস্টুরেন্ট বন্ধ রাখার এ যৌক্তিক দাবীগুলো মেনে নিয়ে কর্মীদের ঈদের আনন্দ ভোগ করার সুযোগ দানে সংশ্লিষ্ট মহল এগিয়ে আসবেন  ।

আব্দুর রহিম শামীম : লেখক ও সংগঠক, লন্ডন ।

 

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন