চীনের উহান প্রদেশ থেকে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে বিশ্বের প্রায় ৫০টিরও বেশি দেশে। বিশ্বজুড়ে প্রায় ৮৪ হাজার মানুষকে আক্রান্ত করা করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৮৯০ জনের।
এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘হো‘ । শুক্রবার সুইজারলেন্ডের জেনেবায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান ড. ট্রেডস আ্যাডহানম গেব্রেইয়েসুস এই ঘোষনা দেন।
তিনি বলেন, আমরা এ বিপদকে খাটো করে দেখতে রাজি নই ।এ কারনেই বলছি. এ ভাইরাসের বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি খুবই বেশী।আমরা শতর্কতার মাত্রা উচ্চ থেকে উচ্চতরে নিয়ে গেছি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়,গত ২৪ ঘন্টায় চীনে ৩২৯ জন নতুন রোগী পাওয়া গেছে,যা এক মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম।চীনে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৭৮ হাজার ৯৫৯ জন। মৃত্যু হয়েছে প্রায় ২৮০০ মানুষের ।
ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ইতালীর অবস্থা সবচেয়ে বেশি খারাপ।সেখানে ১৮৩৫ জনের শরীরে এ ভাইরাসের সংক্রমন ধরা পড়েছে। এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৫২ জনের। এবং দিন দির এসংখ্যা বাড়ছেই।
ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়াতে ইতালি প্রবাসীদের মধ্যে চলছে উৎকণ্ঠা আর আতঙ্ক ।এই ভাইরাসে ইউরোপে এখনো কোন বাংলাদেশি আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি । রোম ও মিলান দুতাবাস হতে সবাইকে শতর্ক থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে।এবং প্রবাসীদের জন্য খোলা হয়েছে হেল্প ডেস্ক।
এই ভাইরাসের ফলে রেস্টুরেন্টগুলোও বন্ধ হয়ে আছে। কর্মহীন আছেন অনেক প্রবাসী । আবার স্বল্প আয়ের খুচরা ব্যবসায়ীরা রয়েছেন আর্থিক সংকটে । মূলত পর্যটকরাই তাদের মূল আয়ের উৎস । বিশ্লেষকরা আশংক্ষা করছেন -বড় ধরনের অর্থনৈতিক মন্ধায় পড়তে পারে ইতালী। প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর দিক দিয়ে ইতালির অবস্থান এখন তৃতীয়।
এছাড়া ইউরোপের দেশ স্পেনের বিভিন্ন শহরে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১২০ জনের খবর পাওয়া গেছে। এবং প্রতিদির যুক্ত হচ্ছে আক্রান্তদের সংখ্যা।
স্পেনে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাস মাদ্রিদ বাংলাদেশিদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কাজ ও ঘরের বাইরে যেন কেউ না যান এবং সতর্কভাবে বাহিরে চলা ফেরা করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
একই রকম শতর্কতা ও নির্দেশনা দিয়েছে ইতালি ও প্যারিসে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাস ।
সবশেষ পাওয়া তথ্য মতে , চীনে আক্রান্ত রোগী ৭৯২৫১ এবং মৃত্যু হয়েছে ২৮৩৬ জনের। দক্ষিণ কোরিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩১৫০। এখন পর্যন্ত মৃ্ত্যু হয়েছে ১৭ জনের। জাপানে আক্রান্ত ৯৪৬ জন । মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। ইরান আক্রান্ত রোগী ৫৯৩ জন । মৃত্যু হয়েছে ৪৩ জনের। যুক্তরাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫জন। দেশের বাইরে প্রিন্সেস ডায়মন্ড ক্রোজ এ মারা গেছেন একজন ব্রিটিশ নাগরিক। এছাড়া সিংগাপুর আক্রান্ত ১০২ জন। জার্মান ৭৯ জন,এবং ফ্রান্স ৭৩ জন।
সারা বিশ্বের দিকে তাকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের এই সংখ্যাটি বাড়ছে বলতে গেলে ঘন্টায় ঘন্টায়। সাথে যুক্ত হচ্চে ব্যাদনাময় মৃত্যুর সংখ্যাও।
দেশে দেশে আতন্ক এবং স্বজনহারানোর ব্যাদনার সাথে সাথে আলোর খবরও আছে খানিকটা। বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কয়েক শতাধিক রোগী- চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠছেন । এবং অনেকে তাদের ঘরে স্বজনদের পাশে ফিরেছেনও।