ম্যানচেষ্টারস্থ বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের কার্যালয় গত প্রায় পাঁচ বছর আগে ম্যানচেষ্টার সিটি সেন্টার থেকে টেইমসাইড বারা কাউন্সিলে স্থানান্তরিত হয়। পরিচিত ধনাঢ্য ব্যবসায়ী ইকবাল আহমদের সিমার্ক হাউস ভাড়া নিয়ে হাইকমিশন এখন কার্যক্রম চালাচ্ছে। সেই থেকে স্থানীয় কাউন্সিলকে কর না দেয়ার অভিযোগে ম্যানচেষ্টারস্থ বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন সংবাদ শিরোনাম হয়েছে স্থানীয় ইংরেজী গণমাধ্যমে।
হাইকমিশন শুরু থেকে অর্থাৎ ২০১৬ থেকে এখন পর্যন্ত কোন কাউন্সিল ট্যাক্স প্রদান করে নি। যার পরিমাণ হল এক লাখ ৫৩ হাজার ৪৬ পাউন্ড অর্থাৎ এক কোটি পঁচাত্তর লাখেরও বেশী। সেজন্য টেইমসাইড বারা কাউন্সিলের লীডার ব্রেন্ডা ওয়ারিংটন এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু তিনি এ অর্থ উদ্ধারে কোন পদক্ষেপ নেয়ার কথা উল্লেখ করেন নি।
ওল্ডহ্যাম টাইমস এ ২৮ আগষ্ট প্রকাশিত এক রিপোর্টে জানা গেছে , শুধু ম্যানচেষ্টার হাইকমিশন নয়, টেইমসাইডের আরও কিছু প্রতিষ্ঠানের কর এভাবেই টেইমসাইড কাউন্সিল মওকুফ করেছে, যার পরিমান হল অর্ধ মিলিয়ন পাউন্ড। বাংলাদেশী হাইকমিশনের কাছে পাওনা নিয়ে যদিও তিনি বলেছেন ” মোট অনাদায়ী টাকার মধ্যে ১ লাখ ৫৩ হাজার পাউন্ড কাদের কাছে পাওনা, আমরা জানি এরা কারা, কোথায় থাকে, তাহলে কেনো আমরা এই টাকা উদ্ধার করতে পারছি না?” এতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন কাউন্সিল লীডার যদিও, কিন্তু তা উদ্ধারে কোন বিকল্প আইনী পথে হাঁটেন নি তিনি। অথচ এ ধরনের টাকা প্রদানে ব্যর্থ হলে ব্রিটেনের আইন অনুযায়ী যে কাউকে কিংবা কোন প্রতিষ্ঠানকে আদালতে দাঁড় করানো যায় ।
এ রিপোর্ট প্রকাশিত হবার পর স্থানীয় কমিউনিটিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকেই এ নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করেছেন এবং এটাকে লজ্জাজনক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
এ নিয়ে ম্যানচেষ্টারে ভারপ্রাপ্ত সহকারী হাইকমিশনার মাহমুদা খানম বলেছেন, ”মিশন কুটনৈতিক নিয়ম-নীতি মেনেই এ কর প্রদান থেকে বিরত থেকেছে। ভিয়েনা কনভেনশন ১৯৬১ ও ৬৩’র এক অধ্যায় অনুযায়ী যে কোন দেশের কুটনৈতিক মিশন কর প্রদান করতে বাধ্য নয়। সেকারনে এ কর প্রদান করা হয় নি।” শুধু তাই নয়, কুটনৈতিক বিধি-বিধান অনুযায়ী অন্যান্য আইনসঙ্গত সুবিধা এ দেশ থেকে তারা পাচ্ছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন ।
এখানে উল্লেখ করা যায়, বাংলাদেশী কমিউনিটিতে বিভ্রান্তি সৃষ্ঠি করার দায় নিয়ে ম্যনচেষ্টারস্থ সহকারী হাইকমিশনার আবু নাসের মোহাম্মদ আনওয়ারুল ইসলামকে জরুরী ভিত্তিতে গত মাস দুয়েক আগে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেসময় সহকারী হাইকমিশনার কমিউনিটির কাউকে এমনকি তাঁর মিশনের অনেক কর্মকর্তাকেও তার চলে যাবার কথা গোপন রাখেন। আর সেকারনেই ম্যানচেষ্টারে বাংলাদেশী কমিউনিটির অনেকেই বাংলাদেশ হাইকমিশনের এ খবর প্রকাশিত হবার পর মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।