­
­
রবিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ২৩ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
ট্রাম্পের শুল্ক ধাক্কা কীভাবে সামলাবে বাংলাদেশ  » «   ইউনূস-মোদীর প্রথম বৈঠকে হাসিনার প্রত্যর্পণ চাইল বাংলাদেশ  » «   বাংলাদেশি পণ্যে ৩৭% শুল্ক আরোপ যুক্তরাষ্ট্রের, পোশাক শিল্পে বড় ধাক্কা  » «   জাফলং ঘুরতে গিয়ে পানিতে ডুবে প্রাণ গেলো কিশোরের  » «   ১৭ বছর পরে জাতীয় ঈদগাহের ঈদ জামাতে সরকারপ্রধান  » «   ঈদ আসে, গাজায় আনন্দ আসে না  » «   এপ্রিলের মাঝামাঝি দেশে ফিরতে পারেন খালেদা জিয়া  » «   মিয়ানমারে বিধ্বংসী ভূমিকম্পের পরও হামলা চালাচ্ছে জান্তা বাহিনী  » «   ঈদযাত্রা: শুক্র ও শনিবার ঢাকা ছেড়েছে ৪১ লাখ সিমধারী  » «   তিস্তা প্রকল্প নিয়ে ‘ইতিবাচক’, মোংলায় আরেকটি অর্থনৈতিক অঞ্চল করতে চায় চীন  » «   মিয়ানমারে কেন এত বড় বিধ্বংসী ভূমিকম্প, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?  » «   বাংলাদেশে সাজাপ্রাপ্ত উগ্রবাদীদের মুক্তি নিরাপত্তার জন্য ‘মারাত্মক উদ্বেগের’: ভারত  » «   চাঁদ দেখা গেছে, সৌদিতে ঈদ রবিবার  » «   এনসিপি: অম্ল-মধুর একমাস পার, ভোটের পথে প্রস্তুতি কতদূর?  » «   চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ ও ঢাকা ভূমিকম্পের উচ্চ ঝুঁকিতে, ফায়ার সার্ভিসের সতর্কতা  » «  

রায়হান হত্যা মামলায় পাঁচ পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল



সিলেট নগরের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশি নির্যাতনে রায়হান আহমদ হত্যা মামলায় পাঁচ পুলিশসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) আদালতে দাখিল করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় পিবিআই সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেসব্রিফিংয়ে সংস্থাটির বিশেষ পুলিশ সুপার মো. হুমায়ুন কবীর এ কথা জানান।

এ সময় পিবিআই সিলেট জেলার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ খালেদ-উজ-জামান ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

১৯৬২ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রটি সংশ্লিষ্ট আদালতে জমা দেয়ার পরপরই সংবাদ সম্মেলন ডেকে পুরো তদন্ত কার্যক্রম ও আসামিদের ব্যাপারে অবগত করা হয়। চার্জশিটে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ (বরখাস্ত) উপ-পরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূইয়া, এএসআই আশেকে এলাহী, কনস্টেবল হারুন অর রশিদ, কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস, ফাঁড়ির টু-আইসি এসআই মো. হাসান উদ্দিন ও গণমাধ্যমকর্মী আব্দুল্লাহ আল নোমানকে আসামি করা হয়েছে।

এরমধ্যে এসআই আকবর হোসেন ভূইয়া, এএসআই আশেকে এলাহী, কনস্টেবল হারুন অর রশিদ, কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে রায়হান উদ্দিনের বিরুদ্ধে নির্যাতন করে হত্যা করার অভিযোগ আনা হয়। আর এসআই হাসান ও নোমানের বিরুদ্ধে ঘটনার আলামত নষ্ট করার অভিযোগ আনা হয়েছে।

অভিযুক্তদের মধ্যে পাঁচ পুলিশ সদস্য কারাগারে আটক আছেন। শুধুমাত্র আব্দুল্লাহ আল নোমান পলাতক রয়েছেন।

প্রসঙ্গত, নগরীর আখালিয়ার নেহারীপাড়া এলাকার বাসিন্দা রায়হান আহমদকে গত বছরের ১১ অক্টোবর দিবাগত মধ্যরাতে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে ধরে নিয়ে যায় পুলিশের একটি দল। এরপর টাকার দাবিতে তাকে রাতভর ফাঁড়িতে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়।

সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে দিকে তাকে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে রায়হান হাসপাতালে মারা যান।

এ ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনে অজ্ঞাত পুলিশ সদস্যদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে তান্নি উল্লেখ করেন, ১০ অক্টোবর শনিবার বিকেল ৩টার দিকে তার স্বামী রায়হান আহমদ কর্মস্থল নগরের স্টেডিয়াম মার্কেটস্থ ডা. গোলাম কিবরিয়া ও ডা. শান্তা রাণীর চেম্বারে যান। পরদিন ১১ অক্টোবর ভোর ৪টা ৩৩ মিনিটে ০১৭৮৩৫৬১১১১ মোবাইল নম্বর থেকে (কনস্টেবল তৌহিদের নম্বর) তার শাশুড়ির (রায়হানের মা সালমা বেগম) মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হয়। ফোন রিসিভ করেন রায়হানের চাচা (সৎ বাবা) হাবিবুল্লাহ।

ফোনে রায়হান আর্তনাদ করে জানান, তিনি বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে আছেন এবং তাকে বাঁচাতে ১০ হাজার টাকা নিয়ে ফাঁড়িতে যেতে বলেন। এরপর হাবিবুল্লাহ ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে রায়হান কোথায় জানতে চাইলে দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য বলেন, সে ঘুমিয়ে গেছে। আর যে পুলিশ রায়হানকে ধরেছে, তিনিও চলে গেছেন। তাকে ১০ হাজার টাকা নিয়ে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ফাঁড়িতে আসতে বলেন ওই পুলিশ সদস্য।

হাবিুল্লাহ সকাল পৌনে ১০টার দিকে আবার ফাঁড়িতে গেলে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য জানান, রায়হান অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে রায়হানের চাচা ওসমানী হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারেন, রায়হানকে সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে তিনি মারা যান। মর্গে হাবিবুল্লাহসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনরা গিয়ে রায়হানের ক্ষত-বিক্ষত লাশ দেখতে পান।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, আমার স্বামীকে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে নিয়ে গিয়ে পুলিশি হেফাজতে রেখে হাত-পায়ে উপর্যুপরি আঘাত এবং হাতের নখ উপড়ে ফেলা হয়েছে। পুলিশ ফাঁড়িতে রাতভর নির্যাতনের ফলে আমার স্বামী মারা গেছে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন