বৃহত্তর জৈন্তিয়ার ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জৈন্তিয়ায় গ্যাস চাই সমন্বয় পরিষদ নেতৃবৃন্দ। তারা গ্যাস সংযোগের দাবির পাশাপাশি জৈন্তিয়ার পর্যটন ক্ষেত্রের উন্নয়ন, নদীখনন প্রকল্প এবং প্রত্মতত্ত সংরক্ষণের দাবিও জানিয়েছেন। একই দাবীতে ১৮ অক্টোবর রবিবার সকালে সিলেট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপিও দিয়েছে সংগঠনটি। রবিবার দুপুরে সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব দাবি জানান পরিষদ নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পরিষদের সমন্বয়ক ভিপি খসরুজ্জামান খসরু।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সিলেট জেলার সীমান্তবর্তী চারটি উপজেলা (জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ) নিয়ে গঠিত বৃহত্তর জৈন্তিয়া যা ঐতিহাসিকগত ভাবে ১৭ পরগনা নামে পরিচিত। এ অঞ্চলের হরিপুরে ১৯৫৫ সালে দেশের প্রথম গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়। এরপর থেকে এ গ্যাসক্ষেত্র থেকে উত্তোলিত গ্যাস সারাদেশে সরবরাহ করা হলেও বৃহত্তর জৈন্তিয়ার জনসাধারণ গ্যাস সুবিধা থেকে বঞ্চিত। কিন্তু সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার এবং সুনামগঞ্জের ছাতকে গ্যাস ক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলনের সাথে সাথেই এসব এলাকায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গ্যাস সংযোগ প্রদান করা হয়েছে। যা বৃহত্তর জৈন্তিয়ার ৪ উপজেলার সাথে বিমাতা সুলভ আচরন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ভিপি খসরুজ্জামান বলেন, জৈন্তিয়া কেন্দ্রীয় ছাত্র পরিষদ ১৯৮০ সাল থেকে গ্যাস সংযোগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। ২০১৮ সালের ২৬ জুন জাতীয় সংসদে বর্তমান প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপিও এ দাবি উপস্থাপন করেছিলেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আজও এ দাবির বাস্তবায়ন হয়নি।’
গ্যাস সংযোগ না থাকার কারণে এ অঞ্চলে শিল্পায়নও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এই অঞ্চলে ইপিজেড, ক্ষুদ্র-মাঝারি ও বৃহৎ শিল্প কারখানা গড়ে উঠার সম্ভাবনাও রয়েছে। এসব শিল্প-কারখানা গড়ে উঠলে নতুন নতুন কর্মসংস্থানও গড়ে উঠবে; যা বেকারত্ব দূরীকরণে বিরাট ভূমিকা রাখবে।’
তিনি জৈন্তিয়া অঞ্চলের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরে বলেন, গ্যাস সংযোগ ছাড়াও এ অঞ্চল নানা সমস্যায় জর্জরিত। বিশেষ করে এই অঞ্চলের পর্যটন সম্ভাবনার কারণে স্থানীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য এবং প্রত্মতত্ত সংরক্ষণ করে বিশেষ আঞ্চলিক পর্যটন এলাকা গড়ে তোলার জোর দাবিও জানিয়েছেন। এছাড়া বন্যা থেকে রক্ষায় সীমান্ত নদ পিয়াইন, সারী, সুরমাসহ নদীগুলো খনন ও তীর সংরক্ষন করে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যা থেকে এ অঞ্চলের অধিবাসীদের রক্ষার জোর দাবিও করেন।
মুজিববর্ষেই বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমেই বঞ্চিত এ জনপদের গ্যাস প্রাপ্তির সুযোগসহ অন্যান্য সমস্যার সমাধান হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন এটি এম বদরুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন- পরিষদের সদস্য এডভোকেট জামাল আহমেদ, সাইফুল ইসলাম, এমসি কলেজের সাবেক এজিএস এডভোকেট আলতাফ হোসেন, উপাধ্যক্ষ শাহেদ আহমদ, গিয়াস আহমদ, সাংবাদিক ফারুক আহমদ, মাহফুজুল কিবরিয়া মাহফুজ, মো. শামসুজ্জামান, লুৎফুর রহমান প্রমূখ।