দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউওনও) ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীর ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেফতার তিনজন র্যাবের কাছে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। শুক্রবার বিকেলে (৪ সেপ্টেম্বর) র্যাব-১৩ এর অপারেশন অফিসার আবু বক্কর সিদ্দিক বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ভাইয়ের করা মামলায় গ্রেফতার তিনজনকে দিনাজপুর থেকে র্যাব-১৩ এর সদর দফতরে নিয়ে এসে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা এ ঘটনায় নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। কোন তিনজন দায় স্বীকার করেছেন এবং হামলার কারণসহ বিস্তারিত সন্ধ্যা ৭টার দিকে প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হবে বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবার ওপর হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা হলেন- ঘোড়াঘাট উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক (বহিষ্কৃত) জাহাঙ্গীর আলম (৪২), উপজেলা যুবলীগের সদস্য (বহিষ্কৃত) আসাদুল ইসলাম (৩৫), শিংড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি দক্ষিণ দেবীপুর গ্রামের গোলাম মোস্তফা আদুর ছেলে মাসুদ রানা (৪০), নৈশপ্রহরী নাহিদ হোসেন পলাশ (৩৮), চকবামুনিয়া বিশ্বনাথপুর এলাকার মৃত ফারাজ উদ্দিনের ছেলে রং মিস্ত্রি নবিরুল ইসলাম (৩৫) ও একই এলাকার খোকার ছেলে সান্টু চন্দ্র দাস(২৮)।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে দুর্বৃত্তরা ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদ চত্বরে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের সরকারি বাসভবনে প্রবেশ করে। হত্যার উদ্দেশ্যে তারা ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীকে কুপিয়ে ও হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করে।
পরে সকালে আহত বাবা-মেয়েকে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে ইউএনও ওয়াহিদাকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হয়। তিনি এখন ঢাকার আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার বাবা রংপুর মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
এ ঘটনায় বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) জাকির হোসেনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল ওয়াহাব। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- রংপুর রেঞ্জের ডিআইজির একজন প্রতিনিধি এবং দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আসিফ মাহমুদ।