দেশের শিক্ষিত বেকারদের কথা বিবেচনা করে সরকারী চাকরিতে বয়সসীমা ৩৫ করা হবে বলে গত নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষনা করেছিল ক্ষমতাসীন সরকার।
সেই সম্ভাবনার কথা কিছুদিন আগেও জনপ্রশান মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আভাস দেয়া হয়েছিল।
কিন্তু সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়াতে সংসদ অধিবেশনে আনা সিদ্ধান্ত প্রস্তাবটি কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার রাতে সংসদের বেসরকারি দিবসে বগুড়া-৭ থেকে নির্বাচিত স্বতন্ত্র এমপি মো. রেজাউল করিম বাবলু প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন। ‘সরকারি চাকরিতে ঢোকার বয়সসীমা ৩৫ বছরে উন্নীত করা হোক’ লিখে প্রস্তাবটি আনেন তিনি।
রেজাউল করিমের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সংসদে তাঁর বক্তব্যে বলেন, বর্তমানে সরকারি চাকরিতে প্রবেশ ও অবসরের যে বয়সসীমা, সবদিক বিবেচনায় সেটাকে সরকার যৌক্তিক বলে মনে করছে। স্বাধীনতার পর প্রেক্ষাপট বিবেচনায় চাকরিতে প্রবেশে বয়সসীমা ২৫ থেকে ২৭ ও পরবর্তীতে ৩০ করা হয়। এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সেশনজট নেই। ২৩ বছর বয়সে শিক্ষার্থীরা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পাচ্ছেন। ছয়-সাত বছর চাকরির প্রস্তুতির জন্য সময় পাচ্ছেন। তা ছাড়া চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করা হলে পেনশন সংক্রান্ত জটিলতা তৈরি হবে।
এসব বিবেচনায় নিয়ে প্রতিমন্ত্রী স্বতন্ত্র সাংসদ রেজাউল করিমকে তাঁর প্রস্তাব প্রত্যাহার করে নেওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু তিনি প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করবেন না বলে সংসদকে জানান।
চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর প্রস্তাব এনে রেজাউল করিম তাঁর বক্তব্যে বলেন, বিশ্বের ১৯২টি দেশের মধ্যে ১৫৫টি দেশে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৫৫ বছর কোথাও কোথাও ৫৯ বছর পর্যন্ত। দেশে এখন শিক্ষিত বেকার ২৮ লাখের বেশি। শিক্ষিত বেকার পরিবারের জন্য বোঝা। শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের জন্য আন্দোলন করেছিল। তাঁদের সে সময় রাজাকার, শিবির, জঙ্গি বানানোর চেষ্টা হয়েছিল। এখন চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর জন্য আন্দোলন করছে। চাকরি না পেয়ে অনেক যুবক মাদক, ছিনতাই ও অন্যান্য সামাজিক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর করা উচিত হবে।
তাঁর এসব যুক্তির পরও প্রস্তাবটি কণ্ঠভোটে সংসদে প্রত্যাখ্যাত হয়।