সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
https://blu-ray.world/ download movies
Sex Cams
সর্বশেষ সংবাদ
দ্বিতীয় মুসলিম কমিউনিটি সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড আগামী ৯ই জুলাই লন্ডনে  » «   বিশ্বনাথে ব্যারিস্টার নাজির আহমদ ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে শিশুদের ফ্রি খৎনা প্রদান  » «   রাস্তা খুলে দেয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি চ্যালেঞ্জে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের পক্ষে হাইকোর্টের রায়  » «   দ্রোহ ও প্রেমের কবি হেলাল হাফিজ আর নেই  » «   লন্ডন মুসলিম সেন্টারে দুই শতাধিক মানুষের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হলো ‘ফেইথ ইন এনভারনমেন্ট’ সামিট  » «   রোবটিক্স বিজ্ঞানী ড. হাসান শহীদের নেতৃত্বে কুইন মেরি ইউনভার্সিটি অব লন্ডনে বিশ্বের ক্ষুদ্রতম মাল্টিরোটর সোলার ড্রোন উদ্ভাবন  » «   লন্ডন এন্টারপ্রাইজ একাডেমির অফস্টেড রিপোর্টে ‘গুড’ গ্রেড অর্জন  » «   টাওয়ার হ্যামলেটস এডুকেশন অ্যাওয়ার্ডস : ১৮৫ জন শিক্ষার্থীকে সম্মাননা  » «   ব্যারিস্টার নাজির আহমদের “ইন্সপায়ার এ মিলিয়ন”নামে চ্যারিটি প্রতিষ্ঠার ঘোষণা  » «   সম্মিলিত সাহিত্য ও  সাংস্কৃতিক পরিষদের ২০২৫-২৬ পরিচালনা পর্ষদ গঠন  » «   গ্রেটার ফতেহপুর ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ইউকের সাধারণ সভা ও সম্মেলন অনুষ্ঠিত  » «   আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের মিল আর গুজব রাজনীতি  » «   পাচারকৃত টাকা বাংলাদেশে ফেরত আনার ব্যাপারে যুক্তরাজ্য সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন ডা. শফিকুর রহমান  » «   প্যারিস-বাংলা প্রেসক্লাব ফ্রান্সের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন  » «   শেখ হাসিনা ও সাবেক মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা  » «  
সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন

যোদ্ধা-বীরাঙ্গণা হীরামনি সাঁওতাল



সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

যে যুদ্ধ করে আর যে যুদ্ধের বয়ান তৈরি করে- এই দুয়ের মধ্যে বিস্তর ফারাক। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের অনেক পরের প্রজন্ম, তারা তৈরি করা বয়ান দিয়েই তো যুদ্ধ, যোদ্ধা, ইতিহাসকে চিনেছি। তাহলে এই ফারাকটা ভরাটের পথ কী?

ঠিক এই জায়গাটা থেকেই একসময় ভাবি, যোদ্ধার প্রকৃত বয়ানটাই বোধহয় সেই ফারাকটা ভরাট করে দিতে পারে। একসময় যোদ্ধার বয়ান শোনা শুরু করি। সত্যিকার অর্থেই তখন অন্য এক যুদ্ধকে প্রত্যক্ষ করি যোদ্ধার চোখে। সেই ঘোর আজও কাটেনি।

কিন্তু যোদ্ধাও তো মানুষ, সময়ের ব্যবধানে সেও নিজেকে যে পাল্টে ফেলেনি- তাই বা কে বলবে! তবু আজও মুক্তিযোদ্ধার, বীরাঙ্গণার, শরণার্থীর গল্প শুনি ঠাকুরমার ঝুলির রূপকথার মতো সরলতা, মুগ্ধতা আর শিহরণ নিয়েই।

সেই অচেনা, অজানা, অখ্যাত যোদ্ধা, যারা মুক্তিযুদ্ধকে জনযুদ্ধে রূপ দিয়েছিল, তাদের কিছু কিছু অভিজ্ঞতা এই উত্তাল মার্চের দিনগুলোতে শুনাতে চাই ৫২বাংলায়।

হীরামনি সাঁওতাল

হবিগঞ্জের চানপুর চা বাগানের লোহারপুল বস্তির শ্রমিক লক্ষণ সাঁওতালের সঙ্গে ঠিক কোন সালে বিয়ে হয়েছিল এটা মনে করতে পারেন না হীরামনি সাঁওতাল।তবে তাঁর ভাষ্যমতে, সেটা ‘গণ্ডগোলের’ বছর পাঁচেক আগের ঘটনা। তখন তাঁর বয়স ১৪-১৫।

চা বাগানের নিস্তরঙ্গ জীবনেও ১৯৭১ সালের মে-জুন মাসে যুদ্ধের দামামা বেজে ওঠে।পাকিস্তানি সেনাবাহিনী চা বাগানে এসে ক্যাম্প স্থাপন করে। তারপর থেকেই পাল্টে যেতে থাকে চা বাগানের জীবন।

হীরামনির বাড়িতে যখন খানসেনারা হানা দেয় তখন তিনি ঢেঁকিঘরে ধান ভানছিলেন। তাঁকে সাহায্য করছিলেন কাকাশ্বশুর বিপিন। দুজনেই হতবিহ্বল। দুজনেই কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। খানসেনারা তাদের দিকে বন্দুক তাক করে জিজ্ঞেস করেন, তারা মুক্তিবাহিনী কিনা। হীরামনি ভয়ে ভয়ে উত্তর দেন, বাগান-শ্রমিক।

তারপর হীরামনিকে বন্দুকের নলের মুখে নিজের ঘরে দিকে নিয়ে যায় সেনারা আর কাকাশ্বশুরকে বাড়ির বাইরে। ঘরে আটকে রেখে শুরু হয় নির্যাতন। সেই নির্যাতনের একপর্যায়ে হীরামনি জ্ঞান হারান। তিনি আর কিছুই বলতে পারেন না।

জীবনের শেষ সময়ে এসেও হীরামনি একাত্তরের সেই কথা আর বলতে চাইতেন না। কারণ, স্বাধীনতা হীরামনির জীবনে কোন অর্থ নিয়ে আসেনি বরং তাঁর চিরাচরিত চা শ্রমিকের দারিদ্রক্লিষ্ট জীবনকে আরও জটিল করে দিয়েছিল। যে স্বাধীনতার জন্য তাঁর জীবনটা পাল্টে গেছে, সে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাঁর কোনো খোঁজ রাখেনি, স্বীকৃতিও মেলেনি।

এখন হীরামনি রাষ্ট্র-রাজনীতি-সমাজের সব স্বীকৃতির উর্ধ্বে।

(২০১৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর চানপুর চা বাগানে হীরামনির বাড়িতে নেওয়া সাক্ষাতকার।)


সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন