বৃটেনে কারী শিল্পের অন্যতম প্রাচীন সংগঠন, বাংলাদেশ ক্যাটারাস এসোসিয়েশন (বিসিএ)‘র গালা ডিনার ও আ্যওয়ার্ডস প্রদান অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ২৫ নভেম্বর, রোববার ঝাঁকজমকপূর্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কারী ক্যালেন্ডারের এই মর্যাদাপূর্ন ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। এবার রেস্টুরেন্ট অব দ্য ইয়ার এবং শেফ অব দ্য ইয়ার ক্যাটাগরিসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে দেওয়া হয়েছে মোট ২৫টি পদক ও সম্মাননা।
সেন্ট্রাল লন্ডনের ওয়েস্টমিনিষ্টার পার্ক প্লাজা হোটেলে সারাদেশ থেকে আসা বিসিএ নেতবৃন্দ ও তাদের পরিবার এবং বিশিষ্টজনের উপস্থিতিতে গালার ডিনার ও অ্যাওয়ার্ডস অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রেসিডেন্ট কামাল ইয়াকুব, সেক্রেটারী জেনারেল ওলি খান ও চীফ ট্রেজারার সাইদুর রহমান বিপুল। সকলকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন আ্যওয়ার্ডস কমিটির জয়েন্ট হেড কনভেনার মুজাহিদ চৌধুরী।
জনপ্রিয় প্রেজেন্টার তাসলিম লোসিয়া খান এবং সেলিব্রেটি শেফ এলেক্স কনরানের প্রানবন্ত উপস্থাপনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন বৃটিশ ইন্টারনশনাল ডেভোলাপমেন্ট সেক্রেটারী পেনি মরডন্ট এমপি।
তিনি বলেন, কারী বৃটিশ জনগনের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাড়িয়েছে। এই শিল্প অর্থনীতি এক উল্লেখযোগ্য সহায়ক ভুমিকা পালন করছে। ব্যবসায়ীদের এক প্লাটফর্মে এনে বিসিএ বরাবরই কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে চলেছে। তিনি বলেন, সংগঠনটির অগ্রযাত্রা আসলে এই শিল্পের অগ্রযাত্রারই অংশ। তিনি বৃকজিটে রিমেইনার পক্ষ হলেও, আশা করছেন জনগনের সিদ্ধান্ত দেশ, কারী ইন্ড্রাস্ট্রি এবং ব্যবসা বানিজ্য উপকৃত হবে।
এতে আরো উপস্থিত ছিলেন, হেলেন গ্রান্ট এমপি, পল স্ক্যালি এমপি, ক্রিস হ্যারিস এমপি, এ্যান মেইন এমপি, জো স্টিভানস এমপি, কারেন বাক এমপি ও এন্ড্রু স্টিফেনসম এমপি।
অনুষ্ঠানে ১১টি রেস্টুরেন্টকে দেওয়া হয়- রেস্টুরেন্ট অব দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ড এবং ১২ জন শেফকে প্রদান করা হয়- শেফ অব দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ড। স্পেশাল রিকোগনেশন আ্যওয়ার্ড লাভ করেন বিসিএ‘র সাবেক প্রেসিডেন্ট সম্প্রতি রানীর কাছ থেকে এমবিই খেতাব পাওয়া পাশা খন্দকার ও ব্রাকের ভাইস চেয়ার ড. মুস্তাক চৌধুরী।
শেফ অব দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ডস প্রাপ্তরা হলেন, কেন্টের আব্দুল মুহিত শাবুল, সাউথ ইস্ট লন্ডনের সাহেদ উদ্দিন চৌধুরী, হার্টফোর্ডশায়ারের ফয়সল আহমদ, ওয়েস্ট সাসেক্সের মানিক মিয়া, সাউথ ইস্ট ওয়েলসের সেলিম আহমদ, অক্সফোর্ডশায়ারের এমদাদুর রহমান, ক্যাম্ব্রিজশায়ারের আব্দুল হাই, লন্ডনের আব্দুল মালিক, ইস্ট লন্ডনের মুহাম্মদ মাসুম আফরোজ, এসেক্সের মুহাম্মদ আমিন, বার্কিংহামশায়ারের কদর আলী এবং লন্ডনের সেলিম জাবেদ।
রেস্টুরেন্ট অব দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ড হলো- ইস্ট লন্ডনের সিটি স্পাইস, নর্থ ইয়র্কশায়ারের মুম্বাই লাউঞ্জ, কেন্টের ইন্ডিয়ান ডিনার, সারের স্পাইস লাউঞ্জ, নর্থ ইয়র্কশায়ারের স্পাইস, সাটবার্ন বাই দ্যা সি, হাম্পশায়ারের প্যারাডাইজ বালতি হাউস, সারের রয়েল তান্দুরী, ওয়েলসের হাতি ইন্ডিয়ান কুজিন, আবারডিনের মনসুনা, নর্থ ইয়র্কশায়ারের জলসা ও সারের দ্যা সাহিন রেস্টুরেন্ট।
অনুষ্ঠানে বিসিএ প্রেসিডেন্ট কামাল ইয়াকুব বলেন, কারী শিল্পের উন্নয়ন এবং যে কোন দাবী দাওয়া আদায়ে লবিং অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, ব্রেক্সিট পরবর্তীতে বৃটেনে ইউরোপের বাইরের দেশ থেকে লো স্কিল ওয়ার্কার আনার সুযোগে সৃষ্টি হলে ইন্ডাস্ট্রি উপকৃত হবে। সরকারকে এই বিষয়ে বিশেষ নজর দিতে তিনি আহবান জানান।
সেক্রেটারী জেনারেল ওলি খান বলেন, বৃটেনে প্রতি সপ্তাহে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ৪টি করে রেস্টুরেন্ট ও টেইকওয়ে। এই বিষয়টি কারী শিল্পের জন্য অত্যন্ত অশনি সংকেত। সরকারকে বার বার তাগিদ দিয়ে আসলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা। এ নিয়ে সম্মিলিত উদ্যোগ এখনি প্রয়োজন।
চীফ ট্রেজারার সাইদুর রহমান বিপুল বলেন, কারী শিল্প রক্ষায় আমাদের চলমান ক্যাম্পেইন অব্যাহত থাকবে। এ জন্য প্রয়োজন সদস্যদের এগিয়ে আসা। নতুন নতুন সদস্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও গুরুত্বারোপ করেন সংগঠনটির এই কর্মকর্তা।