­
­
বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ১৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সুইডেনে অতর্কিত বন্দুক হামলায় নিহত ৩  » «   ইতালিতে বর্ণাঢ্য বৈশাখী উৎসব বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যাণ পরিষদের  » «   ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রফতানিতে চমক: চীনের ঘাটতি পূরণ করছে বাংলাদেশ  » «   কানাডায় লিবারেলদের জয়, কী কারণ  » «   রাখাইনের জন্য করিডর বাংলাদেশের জন্য কী ঝুঁকি তৈরি করতে পারে?  » «   ইউরোপ ৪ দেশ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন!  » «   ডলারের বিপরীতে টাকার মান বৃদ্ধি  » «   বিশ্বে সামরিক ব্যয় রেকর্ড বেড়ে ২.৭ ট্রিলিয়ন ডলার  » «   নতুন এক লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ  » «   ৬০ টন পণ্য নিয়ে সিলেট থেকে উড়ল প্রথম কার্গো ফ্লাইট  » «   রাখাইনে মানবিক সহায়তায় শর্তসাপেক্ষে করিডোর দিতে রাজি সরকার  » «   শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না বলে জানান মোদি  » «   ‘জন্মই আমার আজন্ম পাপ’ কবিতার কবি দাউদ হায়দার আর নেই  » «   গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি আটক  » «   ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কোন দিকে মোড় নিতে পারে?  » «  

ব্রিটেন জুড়ে উৎসব :৫৫ বছর পর স্বপ্নের ফাইনালে ইংল্যান্ড



ফুটবল কি ফিরছে ঘরে? গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইংল্যান্ড জুড়ে চলা এই সাজ সাজ রব যেন সত্যি হতে চললো! ৫৫ বছরের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে মেজর কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে নাম লেখালো থ্রি লায়ন্সরা।

ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে ১২০ মিনিটের শ্বাসরুদ্ধকর এক লড়াইয়ের পর ডেনমার্ককে ২-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেছে গ্যারেথ সাউথগেটের দল।খেলা শেষ হবার পর থেকে  পাব-রেস্তোরা থেকে শুরু করে সবখানে যেন উৎসবে মেতে উঠেছে ফুটবল পাগল ব্রিটিশ জনগুষ্ঠি ।

টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা ১-১ সমতা থাকার পর অতিরিক্ত সময়ে হ্যারি কেইনের পেনাল্টি গোলে জয় নিশ্চিত হয় স্বাগতিকদের। ১২ জুলাই ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ ইতালি।

সেই ১৯৬৬ সালে শেষবার কোনো বড় টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠেছিল ফুটবলের জনক বলে দাবি করা ইংলিশরা। সেবার বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নও হয়েছিল।

কিন্তু এরপর আর ভাগ্যের শিকে ছিঁড়েনি। চার-চারবার সেমিফাইনাল থেকেই (দুইবার বিশ্বকাপে, দুইবার ইউরোতে) ছিটকে পড়তে হয়েছে। কত অপেক্ষা, কত স্বপ্ন। অবশেষে ধরা দিল ফাইনাল।

ঘরের মাঠে দাপট দেখিয়েই খেলেছে ইংল্যান্ড। কিন্তু ডেনমার্কের রক্ষণ আর গোলরক্ষক কেসপার স্মাইকেল বারবারই প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন বেশিরভাগ সময়।

ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই ভালো একটি সুযোগ এসেছিল থ্রি লায়ন্সদের সামনে। ডানদিক থেকে হ্যারি কেইনের বাড়ানো লম্বা পাস বক্সের মধ্যে পেয়েও একটুর জন্য পা ছোঁয়াতে পারেননি রহিম স্টার্লিং।

চার মিনিট পর প্রায় একইরকম লম্বা পাস থেকে বল একাই বক্সে পেতে যাচ্ছিলেন ডেনমার্কের মিকেল ড্যামসগার্ড। কিন্তু ইংলিশ রক্ষণে আটকে যায় তার সে চেষ্টা। ২৪ মিনিটে ড্যামসগার্ডের আরেকটি জোরালো শট পোস্টের ওপরের দিক ঘেঁষে বাইরে চলে যায়।

এই ড্যামসগার্ডই ড্যানিশদের মুখে হাসি ফোটান ৩০ মিনিটে। বক্সের অনেক বাইরে থেকে চোখ ধাঁধানো এক বাঁকানো ফ্রি-কিক থেকে গোল করেন এই ফরোয়ার্ড। ইংলিশ গোলরক্ষক পিকফোর্ড ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে এক হাত লাগাতে পারলেও আটকাতে পারেননি বল (১-০)। চলতি ইউরোয় এটিই ইংল্যান্ডের প্রথম হজম করা গোল।

তবে খুব বেশিক্ষণ লিড ধরে রাখতে পারেনি ডেনমার্ক। ৩৯ মিনিটের মাথায় সাইমন জায়েরের আত্মঘাতী গোলে ইংল্যান্ড ম্যাচে ১-১ সমতা ফেরায়।

ইউরোয় এর আগে আর কোনো ড্যানিশ ফুটবলার আত্মঘাতী গোল করেননি। চলতি ইউরোয় এই নিয়ে মোট ১১টি আত্মঘাতী গোল হলো। আগের সবক’টি ইউরো মিলিয়ে মোট ৯টি আত্মঘাতী গোল হয়েছিল।

৩৮ মিনিটে হ্যারি কেইনের বড় পাস থেকে রহিম স্টার্লিংয়ের নিশ্চিত গোলের সুযোগ আটকে দেন ডেনমার্ক গোলরক্ষক কেসপার স্মাইকেল। কিন্তু পরের মিনিটেই একই রকম আক্রমণ থেকে গোল আর আটকাতে পারেননি তিনি।

এবারও কেইনের লম্বা পাস থেকে বুকায়ো সাকা দারুণভাবে বক্সের ডানদিকে ঢুকে যান। সেখান থেকে ক্রস করেছিলেন ফাঁকায় দাঁড়ানো স্টার্লিংয়ের দিকে।

গোলরক্ষক ডানদিকে এগিয়ে যাওয়ায় স্টার্লিং খালি জায়গায় বল পেয়ে ডান পা ছোঁয়াতে যাবেন, এমন সময়ে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের জালেই জড়িয়ে দেন সাইমন জায়ের। ১-১ সমতা নিয়ে বিরতিতে যায় দুই দল।

দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ধার বাড়ায় স্বাগতিক ইংল্যান্ড। ৫৫ মিনিটের মাথায় হ্যারি মাগুইরের আক্রমণ প্রতিহত করেন ড্যানিশ গোলকিপার। ৬০ মিনিটের মাথায় মাগুইরেরই শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। চার মিনিট পর ফের দলকে বাঁচান স্মাইকেল। এবার মাউন্টের আক্রমণ প্রতিহত করেন তিনি।

ম্যাচের ৩০ মিনিটে গোল করার পর থেকে ডেনমার্ক বাকি সময়ে মাত্র ১ বার যথাযথ আক্রমণ শানাতে পেরেছে ইংল্যান্ডের বক্সে। ১-১ সমতায়ই শেষ হয় প্রথমার্ধ।

অতিরিক্ত সময়ে ৯৩ মিনিটে হ্যারি কেইনের ডানদিক থেকে নেয়া শট এক হাত দিয়ে কোনোমতে বের করে দেন স্মাইকেল। চার মিনিট পর জ্যাক গ্রেলিসের জোরালো শটও আটকে দেন আবার।

কিন্তু এমন দুর্দান্ত সেভের এক ম্যাচে শেষ পর্যন্ত হার মানতে হয় স্মাইকেলকে। ১০২ মিনিটের মাথায় স্টার্লিং বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়লে তাকে ঘিরে ধরেছিলেন ড্যানিশ ডিফেন্ডাররা, মাহলে আটকাতে চাইলে পড়েও যান স্টার্লিং।

ভার চেক করে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। ড্যানিশ গোলরক্ষক স্মাইকেল সেই পরীক্ষাতেও উৎড়ে যাচ্ছিলেন প্রায়। হ্যারি কেইনের শট ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে আটকে দিয়েছিলেন তিনি, কিন্তু মুহূর্তেই ফিরতি বল পেয়ে বাঁ দিক দিয়ে জালে ঢুকিয়ে দেন হ্যারি কেইনই। আর ওই এক গোলই ইংল্যান্ডের ৫৫ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে দেয়।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন