ইউরোপের চারটি দেশ আজ [২৮ এপ্রিল] নজিরবিহীনভাবে বিদ্যুৎ বিচ্চিন্ন হয়ে পড়েছে। স্পেনের স্থানীয় সময় সাড়ে ১২টার দিকে সারা দেশে একযোগে বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটে। কারণ এখনো কিছু জানা যায়নি। একই সঙ্গে ফ্রান্স, পর্তুগাল, আন্দুরাও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
এ কারণে মেন্ট্রোরেল, ট্রেন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ট্রাফিক সিগনাল অকার্যকর। হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যহত হচ্ছে। ইন্টারনেট বন্ধ। ব্যাংকের টাকা লেনদেনও বন্ধ হয়ে রয়েছে।
বেলা ২টা ২০ মিনিট পর্যন্ত কেউ কোনো আপডেট পাচ্ছে না বলে স্পেনে অবস্থানরত বাংলাদেশি ব্যবসায়ী শাহজামাল জানিয়েছেন।
জানা যায়, ইউরোপের কয়েকটি দেশে আজ দুপুরের পর থেকে আকস্মিকভাবে শুরু হয় ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাট। এর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে স্পেন ও পর্তুগালে, যেখানে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বহু শহর ও জনপদ।
স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদ, বার্সেলোনা, সেভিল এবং পর্তুগালের লিসবন ও পোর্তো শহরে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন, গণপরিবহন পরিষেবা বন্ধ এবং ট্রাফিক সিস্টেম সম্পূর্ণরূপে অচল হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে মেট্রো ও রেল পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছে এবং সুপারমার্কেট, ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কার্ডভিত্তিক লেনদেন বন্ধ রয়েছে।
স্পেনের জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিড অপারেটর *Red Eléctrica* এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটের দিকে দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা হঠাৎ করে ২৭,৫০০ মেগাওয়াট থেকে ১৫,০০০ মেগাওয়াটে নেমে আসে, যা বড় ধরনের সিস্টেম ত্রুটির ইঙ্গিত বহন করে। পর্তুগালের বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান *E-Redes* বলছে, ইউরোপীয় গ্রিডে সৃষ্টি হওয়া একাধিক ত্রুটির কারণে সেখানেও সচেতনভাবে কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে, যাতে পরিস্থিতি আরও খারাপ না হয়।
বিদ্যুৎ বিভ্রাটের প্রভাব ফ্রান্সের কিছু অংশেও ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে। ইউরোপীয় বিদ্যুৎ গ্রিডের অপারেটররা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য জরুরি ভিত্তিতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও কয়েক ঘণ্টা সময় লাগতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে পূর্ব ইউরোপের মোল্দোভায়ও জ্বালানি সংকটের কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাট অব্যাহত রয়েছে। বিচ্ছিন্ন অঞ্চল ট্রান্সনিস্ট্রিয়ায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটেছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, একযোগে একাধিক দেশে বিদ্যুৎ বিভ্রাট ইউরোপীয় বিদ্যুৎ অবকাঠামোর দুর্বলতা ও ঝুঁকির বিষয়টি আরও একবার সামনে নিয়ে এসেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নাগরিকদের ধৈর্য ধরার অনুরোধ জানিয়ে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণে পরামর্শ দিয়েছে। পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে এবং নতুন কোনো তথ্য আসলে তা জনসাধারণকে অবহিত করা হবে।