­
­
বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ১৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
মানবিক করিডর আসলে কী, বিশ্বের আর কোথায় আছে, কতটা কার্যকর?  » «   বিএনপি না জামায়াত কোন দিকে ঝুঁকছে ইসলামপন্থি দলগুলো?  » «   সুইডেনে অতর্কিত বন্দুক হামলায় নিহত ৩  » «   ইতালিতে বর্ণাঢ্য বৈশাখী উৎসব বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যাণ পরিষদের  » «   ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রফতানিতে চমক: চীনের ঘাটতি পূরণ করছে বাংলাদেশ  » «   কানাডায় লিবারেলদের জয়, কী কারণ  » «   রাখাইনের জন্য করিডর বাংলাদেশের জন্য কী ঝুঁকি তৈরি করতে পারে?  » «   ইউরোপ ৪ দেশ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন!  » «   ডলারের বিপরীতে টাকার মান বৃদ্ধি  » «   বিশ্বে সামরিক ব্যয় রেকর্ড বেড়ে ২.৭ ট্রিলিয়ন ডলার  » «   নতুন এক লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ  » «   ৬০ টন পণ্য নিয়ে সিলেট থেকে উড়ল প্রথম কার্গো ফ্লাইট  » «   রাখাইনে মানবিক সহায়তায় শর্তসাপেক্ষে করিডোর দিতে রাজি সরকার  » «   শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না বলে জানান মোদি  » «   ‘জন্মই আমার আজন্ম পাপ’ কবিতার কবি দাউদ হায়দার আর নেই  » «  

শিক্ষক শ্যামাকান্ত দাস : মানুষ গড়ার শ্রেষ্ঠ কারিগর



শ্রদ্ধেয় শিক্ষক  শ্যামাকান্ত দাস,যিনি সবার কাছে ‘সামাকান্ত স্যার’ নামেই পরিচিত । মানুষ গড়ার এই কারিগর  এর জন্ম মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার নয়াগ্রামে ১৯৪৭ সালের ১৪ মে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে । দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি  সবার বড় ।পিতা স্বর্গীয় প্রসন্ন কুমার দাস এবং মাতা  স্বর্গীয়া হীরণবালা দাস । গুনী এই শিক্ষকের মমতাময়ী মা তার  জন্মের এক বছর পর মারা যান ।

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু হয় মিহারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন শিলকুরা এইডেড এল.পি স্কুল থেকে।মাধ্যমিক শিক্ষা শুরু হয় দাসউরা এম,এ স্কুলে, সেখান থেকে ৫ম ও ৬ষ্ট শ্রেণী পাশ করেন তিনি ।

উল্লেখ্য ,তখনকার সময়ে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত ছিল প্রাথমিক শিক্ষা ,ফকির বাজার জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৭ম ও ৮ম শ্রেণী ।  এরপর জলঢুপ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৪ সালে মানবিক বিভাগ থেকে ২য় বিভাগে এসএসসি  ১৯৬৫ সালে এবং  করিমগন্জ কলেজ থেকে প্রি ইউনিভার্সিটি গ্রুপ-বি(সাইন্স) পরীক্ষা পাশ করে ১৯৬৬ সালে ।

পাকিস্তান থেকে ফিরে এসে লাউতা উচ্চ বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন ১৯৬৮ সালে ।  লাউতা উ্চ্চ বিদ্যালয়ে চাকরি ছেড়ে মৌলভীবাজার কলেজে এইচএসসি তে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন তিনি ।সেখান থেকে ১৯৭০ সালে ২য় বিভাগে এইচএসসি পাশ করে নন রেসিডেন্সিয়াল স্কলারশিপ পান ।

সিলেট এমসি কলেজে বিএসসি তে ভর্তি  হন ১৯৭৩ এবং ১৯৭৪ সালে পরপর দুইবার বিএসসি ফেল করার পর মনের দুঃখে লেখাপড়া বাদ দিয়ে চলে আসেন বাড়িতে।বাড়িতে আসার পর কিছুদিন বঙ্গবন্ধু বিদ্যানিকেতনে চাকরি করেন।  তারপর দাসউরা জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন ।

১৯৭৮ সালে ফকির বাজার জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয়ে দুই বছর, তারপর ১৯৮০ সালে জলঢুপ উচ্চ বিদ্যালয়ে বিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন ।

বন্ধু-বান্ধব ও শিক্ষকেরা বেতন স্কেল বৃদ্ধির জন্য  বিএ কোর্স করার জন্য পরামর্শ দেন। তিনি অতীত ছাত্রজীবনের কথা মনে করে বিএ কোর্সে ভর্তি না হয়ে রাগে,দুঃখে সকল বই খাতা ছিড়ে ফেলে জলঢুপ উচ্চ বিদ্যালয়ে চাকরি করতে থাকেন । বন্ধু-স্বজন,শিক্ষক ও শুভানুধ্যায়ীদের অনুরোধে  অবশেষে ১৯৯৪ সালে বিএ পাস করেন তিনি ।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রাতিষ্ঠানিক বেতন সহ ১৯৯৪-১৯৯৫ শিক্ষাবর্ষে বিএড কোর্সের সুযোগ করে দেন। তখন তিনি কুমিল্লা বিএড কলেজে চলে যান, সেখান থেকে বিএড পাশ করেন তিনি । তখন সিলেট শিক্ষা বোর্ড চালু হয় এবং তিনি সহ সিলেট বিভাগ থেকে মোট ৯ জন উচ্চতর গণিতের পরীক্ষক হিসেবে মনোনীত হন গুনী এই শিক্ষক । সেই সময় থেকে অবসরে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তিনি  জলঢুপ উচ্চ বিদ্যালয়ে উচ্চতর গণিতের পরীক্ষক ছিলেন ।

শিক্ষক  শ্যামাকান্ত দাস ২০০৯ সালের ১লা জানুয়ারি অবসরে যাওয়ার কথা থাকলেও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আরও দুই বছর  মেয়াদ বৃদ্ধি করে  ২০১১ সালের জানুয়ারিতে দীর্ঘ ৩১ বৎসর জলঢুপ উচ্চ বিদ্যালয়ে  শিক্ষকতা করে  মহান এই পেশা থেকে  অবসরে  যান গুনী এই শিক্ষক ।

মানুষ গড়ার কারিগর এ মহান ব্যক্তিত্ব পারিবারিক জীবনে তিন পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জনক। বর্তমানে তিনি নিজ বাড়িতে অবসর জীবন যাপন করছেন।

লেখক : ফয়সল আহমদ ( রুহেল )। সাউথ ইস্ট লন্ডন নিউজ করসপনডেন্ট;চ্যানেল এস টেলিভিশন ,লন্ডন ।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

"এই বিভাগে প্রকাশিত মতামত ও লেখার দায় লেখকের একান্তই নিজস্ব " -সম্পাদক

সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন